যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ স্টোরে ফিরেছে টিকটক
Published: 14th, February 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ স্টোরে আবারও চীনের ভিডিও শেয়ারিং অ্যাপ টিকটক ফিরে এসেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক ব্যবহারের ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞাটি ৫ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিত করেছে। ফলে অ্যাপটি ব্যবহার করলে গ্রাহকদের আর কোনো জরিমানা দিতে হবে না।
যুক্তরাষ্ট্রে চীনা প্রতিষ্ঠান বাইটড্যান্সের মালিকানাধীন টিকটকের গ্রাহকসংখ্যা ১৭ কোটি। ট্রাম্প গত ২০ জানুয়ারি মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। তাঁর শপথ গ্রহণের আগে আগে যুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের ওপর নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়। এতে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যাপটি বন্ধ হয়ে যায়।
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে টিকটকের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, তবে সেন্সরশিপ নিয়ে উদ্বেগ২৭ জানুয়ারি ২০২৫প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের আগেই ট্রাম্প বলেছিলেন, তিনি টিকটক পুনর্বহাল করবেন। ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম দিনেই ট্রাম্প নির্বাহী আদেশে টিকটকের ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করেছেন। এতে বন্ধ হয়ে যাওয়ার কয়েক সপ্তাহ পর গতকাল অ্যাপল ও গুগলের অ্যাপ স্টোরে আবারও ফিরে এসেছে টিকটক।
এ ব্যাপারে টিকটক কর্তৃপক্ষের বক্তব্য জানার চেষ্টা করেছিল রয়টার্স। তবে তাৎক্ষণিক সাড়া পাওয়া যায়নি।
যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষ নিরাপত্তার অভিযোগ তুলে টিকটকের মালিকানা যুক্তরাষ্ট্রের কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করতে চাপ দিয়ে আসছে। টিকটক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এ নিয়ে আপিল করা হয়। গত বছর বাইটড্যান্সকে মার্কিন কোনো মালিকের কাছে টিকটক এ বছরের ১৯ জানুয়ারির মধ্যে বিক্রি করতে বলা হয়। কিন্তু তা করা হয়নি। এরপর মার্কিন সুপ্রিম কোর্ট টিকটক নিষিদ্ধের আইনটি বহাল রাখেন।
গত মাসে টিকটকের ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা ৭৫ দিনের জন্য স্থগিত করে নির্বাহী আদেশে স্বাক্ষর করেন ট্রাম্প। এতে বাইটড্যান্স কর্তৃপক্ষ যুক্তরাষ্ট্রে সাময়িকভাবে তাদের কার্যক্রম চালানোর সুযোগ পেয়েছে।
সরকারি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে যেসব কোম্পানি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন স্টোর বা ডিজিটাল মার্কেটপ্লেস পরিচালনা করে, তারা এখন টিকটক অ্যাপ ব্যবহার করলে তাদের জরিমানার মুখে পড়তে হবে না।
বাজারবিষয়ক বিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান সেন্সর টাওয়ারের তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি ডাউনলোড হওয়া অ্যাপের মধ্যে দ্বিতীয় অবস্থানে আছে টিকটক। ২০২৪ সালে ৫ কোটি ২০ লাখের বেশিবার অ্যাপটি ডাউনলোড হয়েছে।
সেন্সর টাওয়ার কর্তৃপক্ষ বলছে, গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে টিকটক যতবার ডাউনলোড করা হয়েছে তার প্রায় ৫২ শতাংশই ডাউনলোড করা হয়েছে অ্যাপল অ্যাপ স্টোর থেকে। আর ৪৮ শতাংশ ডাউনলোড হয়েছে গুগল প্লে থেকে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ড উনল ড ট কটক র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
খাদি কাপড়ের জিআই স্বীকৃতিতে আনন্দে ভাসছেন কুমিল্লাবাসী
কুমিল্লার ঐতিহ্যের স্মারক খাদি কাপড় ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়ায় আনন্দিত জেলার মানুষ। দীর্ঘদিন ধরে তাঁরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন, অবশেষে পেয়েছেন সেই সুখবর। গতকাল বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে স্বীকৃতির এই সনদ দেওয়া হয়।
কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকার রামঘাটলা থেকে শুরু করে রাজগঞ্জ পর্যন্ত অন্তত ৩০০ খাদি পোশাকের দোকান। কান্দিরপাড়ের খাদি বসুন্ধরা দোকানের স্বত্বাধিকারী জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, শৈল্পিক ছোঁয়ায় কুমিল্লার খাদি এখন দেশ-বিদেশে বেশ সমাদৃত। ঐতিহ্যের খাদিতে এখন লেগেছে আধুনিকতা ও নান্দনিকতার ছোঁয়া। শত বছরের বেশি পুরোনো খাদির আরও অনেক আগেই জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পাওয়া উচিত ছিল। অবশেষে স্বীকৃতি মিলেছে, এতেই আনন্দিত সবাই।
একই এলাকার খাদি জ্যোৎস্না স্টোরের মালিক তপন পাল বলেন, ‘কুমিল্লার প্রতিটি মানুষ খাদির এমন স্বীকৃতিতে আনন্দিত। শত বছর পার হলেও এখনো দেশ-বিদেশে খাদি কাপড়ের ব্যাপক চাহিদা।’
কুমিল্লার ইতিহাস গবেষক আহসানুল কবীর প্রথম আলোকে বলেন, ১৯২১ সালে মহাত্মা গান্ধীর ডাকে সমগ্র ভারতবর্ষে অসহযোগ আন্দোলনের সময় কুমিল্লায় খাদিশিল্প প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওই সময় বিদেশি পণ্য বর্জন করার জন্য আওয়াজ ওঠে। সর্বত্র এক আওয়াজ ‘মোটা কাপড়-মোটা ভাত’। সে সময় ভারতবর্ষের মানুষ দেশপ্রেমে উজ্জীবিত হয়ে খাদি পোশাক ব্যবহার শুরু করেছিলেন। খাদের (গর্তে) চরকায় বসে এ কাপড় তৈরি করা হয় বলে এর নামকরণ হয় ‘খাদি’। শুরুতে মহাত্মা গান্ধী নিজেও কুমিল্লায় এসে খাদের চরকায় বসে খাদি কাপড় তৈরিতে উৎসাহ দেন।
এই গবেষক আরও বলেন, ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর ভারত পৃষ্ঠপোষকতা প্রত্যাহার করে নিলে কুমিল্লার খাদিশিল্প সংকটে পড়ে। এই শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হাল ধরেন বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমির (বার্ড) প্রতিষ্ঠাতা আখতার হামিদ খান।
কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মো. আমিরুল কায়ছার বলেন, জেলা প্রশাসনের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় গত বছর কুমিল্লার রসমালাই জিআই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। কুমিল্লার খাদি ও বিজয়পুরের মৃৎশিল্পের জিআই স্বীকৃতির জন্য তখন থেকেই কাজ শুরু হয়। কুমিল্লার ‘ব্র্যান্ড’ হিসেবে পরিচিত তিনটি পণ্যের মধ্যে দুটি জিআই পণ্যের স্বীকৃতি পেয়েছে। যে একটি বাকি আছে, সেটিও দ্রুত সময়ের মধ্যে স্বীকৃতি পাবে বলে তিনি আশাবাদী।