চান্দবী-নুয়ারামের প্রেম, যে কাহিনি এখনো অমর পাহাড়ের মানুষের কাছে
Published: 14th, February 2025 GMT
দরিদ্র পরিবারে জন্ম অপূর্ব সুন্দরী চান্দবী চাকমার। বেড়ে ওঠা পাহাড়ি ছড়া আর নদীর ধারে। চান্দবী এক সময় জড়িয়ে পড়েন বিত্তশালী পরিবারের ছেলে নুয়ারাম চাকমার প্রেমে। ছড়ার পানির মতো স্বচ্ছ সে প্রেম। পানি ছুঁয়েই নুয়ারাম একদিন শপথ করেন। চান্দবীকে বলেন, চাঁদ-সূর্য ধ্বংস হয়ে গেলেও দুজনের প্রেম টিকে থাকবে অন্ততকাল। কিছুদিন না যেতেই আসে শপথ রক্ষার কঠিন পরীক্ষা। চান্দবীর পরিবার পুরোনো বসতি ছেড়ে চলে যায় অনেক দূরে। বিরহ-যন্ত্রণায় কাতর হয়ে পড়েন দুজন। বিক্রয়ের জন্য বাঁশ সংগ্রহের ছলে নুয়ারাম একদিন চলে যান চান্দবীর কাছে। দুজনের সাময়িক মিলন ঘটলেও পরে চিরদিনের জন্যই বিচ্ছেদ হয় দুজনের।
যুগ যুগ ধরে চান্দবী চাকমার এই প্রেমের কাহিনি টিকে রয়েছে চাকমা সমাজে। প্রেমে ব্যর্থ চান্দবীর কাহিনি বর্ণনা করে এখনো চোখের পানি ফেলেন চাকমা জনগোষ্ঠীর মানুষ। শত বছরেরও বেশি সময় আগে এই প্রেমকাহিনি নিয়ে একটি বারোমাস্যা কাব্য রচনা করেন চাকমা কবি ধর্মধন চাকমা, ধর্মধন পণ্ডিত নামেই যিনি বেশি পরিচিত। তাঁর রচিত ‘চান্দবী বারোমাস’ লেখা হয়েছে পয়ারের ছন্দে। চান্দবীর প্রেম-বিরহ, প্রতারণা শিকার হওয়াসহ সমাজের নানা অন্যায়-অবিচার ফুটে উঠেছে এই কাব্যের কাহিনিতে।
কাহিনিতে দেখা যায়, রাঙামাটির সলকে (বর্তমানে সুবলং) বসবাস সুন্দরী চান্দবীর। সলক ছড়ার স্বচ্ছ পানিতে গোসল করে আর বড়গাঙের (কর্ণফুলী) পাড়ে ঘুরে বেড়িয়ে তার বেড়ে ওঠা। বিত্তশালী পরিবারের নুয়ারাম তাঁর প্রেমে জড়িয়ে শপথ করে—‘মোর পরাণী চান্দবী, এই সলকছড়া সাক্ষী, চন্দ্র-সূর্য ধসে গেলেও তোমার-আমার ভালোবাসা থাকবে অনন্তকাল ধরে’। কিছুদিন পর সলক ছেড়ে ঠেগা এলাকায় চলে যায় চান্দবীর দরিদ্র পরিবার। সলক থেকে বহু দূরে অগম্য বনাঞ্চল ঠেগা। বিত্তশালী পরিবারের সন্তান নুয়ারাম সেখানে যাওয়া সহজ নয়। তবু প্রেম কী কোনো বাধা মানে! আশ্বিন বা কার্তিক মাসের কোনো একদিন কার্তনে (বিক্রয়ের জন্য বাঁশ সংগ্রহ, চাকমা সমাজে এটি কার্তন হিসেবে পরিচিত) যাওয়ার ছল করে নুয়ারাম পৌঁছে যায় ঠেগায়। ঠেগার গহিন বনে হয় অভিসার।
কার্তন শেষে নুয়ারাম ঠেগা ছেড়ে চলে যায়। তখন চান্দবী অন্তঃসত্ত্বা। নুয়ারামের খবর আর পাওয়া যায় না। চান্দবীকে ধিক্কার দেয় মা-বাবা ও পাড়াপ্রতিবেশী। চান্দবীর মনে হয়—সে প্রতারিত। নিজে নিজে সে বলে, ‘মিলে জীংহানি ভজনেজেবার ঠগানির বিজের থুমসং চেইম (নারীর জীবন ধ্বংসের এই প্রতারণা শেষ দেখে ছাড়ব)’। চান্দবী কার্বারীর (পাড়াপ্রধান) কাছে বিচার দেয়। তবে লাভ হয় না। বিত্তশালী ও প্রভাবশালী চন্দ্রধন চাকমার ছেলে নুয়ারাম চাকমার বিচার করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দেন হেডম্যান (মৌজাপ্রধান)।
ভাগ্যবিড়ম্বিত প্রেমিকা চান্দবী শেষে বাবা জয়সিং চাকমাকে সঙ্গে নিয়ে রাজার দরবারে বিচারের জন্য যায়। সেখানেও ধিক্কার, তিরস্কার ও ঘৃণাবাক্য ছাড়া কিছুই মেলে না। বিচার না পেয়ে ক্ষোভ-দুঃখ নিয়ে ফেরার পথে মৃত এক মেয়েশিশুর জন্ম দেয় চান্দবী। চান্দবীর চোখে আর জল নেই। শোকে পাথর হয়ে সেই মৃত শিশুকে কবর দেওয়ার সময় সে বলে ‘মরি যেইনে বাঁচি গেলে, লগে আনিনে লগে নেজেলে ফি, বাঁচি থেদে লগে থেলুন নিত্য শাপ, মানেই জাদত মিলে অইনে জনম লনা পাপ’। অর্থাৎ মরে বেঁচে গেলে, সঙ্গে নিয়ে আসা দুঃখ সঙ্গে নিয়ে গেলে। বেঁচে থাকলে অভিশপ্ত হয়ে থাকতে; কারণ, মেয়ে হয়ে জন্ম নেওয়াই আজন্ম পাপ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ব র ন চ কম র জন য চ কম র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আইটি অফিসার পদে নিয়োগ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (আইবিএ) আইটি অফিসার পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স সেলের (QAC) অধীনে এই নিয়োগ দেওয়া হবে।
পদের নাম: আইটি অফিসারপদসংখ্যা: ০১
শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: সরকারি বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম সিজিপিএ–৩.০০ (৪.০০ স্কেলে)–সহ চার বছরের স্নাতক ডিগ্রি থাকতে হবে। একাডেমিক জীবনের কোনো পর্যায়েই তৃতীয় বিভাগ/শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএ থাকা যাবে না।
প্রাসঙ্গিক ক্ষেত্রে (যেমন কোয়ালিটি অ্যাসিওরেন্স, একাডেমিক প্রশাসন, মনিটরিং অ্যান্ড ইভ্যালুয়েশন বা ডেটা অ্যানালাইসিস) স্বনামধন্য কোনো প্রতিষ্ঠানে পূর্ণকালীন তিন বছরের পেশাগত অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে।
আরও পড়ুনপ্রাথমিকে সংগীত ও শারীরিক শিক্ষার শিক্ষক নিয়োগের সুযোগ বাদ৪১ মিনিট আগেবয়সসীমাসর্বোচ্চ ৪০ বছর।
বেতন–ভাতাআলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।
আবেদন প্রক্রিয়াআগ্রহী প্রার্থীদের স্বাক্ষরিত আবেদনপত্রের সঙ্গে বিস্তারিত সিভি, সব শিক্ষাগত ও অভিজ্ঞতার সনদের সত্যায়িত অনুলিপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের অনুলিপি এবং দুই কপি সাম্প্রতিক পাসপোর্ট সাইজের ছবি সংযুক্ত করে জমা দিতে হবে।
আরও পড়ুনইউরোপে পাইলটদের বেতন কোন দেশে কত ৮ ঘণ্টা আগেআবেদনের ঠিকানা
পরিচালক,
ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (আইবিএ),
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা-১০০০।
আবেদনের শেষ তারিখ১৩ নভেম্বর ২০২৫