আজ ঋতুরাজ বসন্তের প্রথম দিন, একইসঙ্গে বিশ্ব ভালোবাসা দিবস। এই দুই উপলক্ষকে উদযাপন করতে কক্সবাজারে সাগরপাড়ে পর্যটকদের ঢল নেমেছে। সমুদ্রের ঢেউ আর ভালোবাসার আবেগ মিশে তৈরি হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা হাজারো পর্যটক এই দিনে প্রিয়জনকে সঙ্গে নিয়ে উপভোগ করছেন সমুদ্রসৈকতের নয়নাভিরাম সৌন্দর্য।

শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের প্রধান তিন পয়েন্ট—কলাতলী, সুগন্ধা ও লাবণিতে গিয়ে দেখা গেছে, ভালোবাসার বহিঃপ্রকাশ হিসেবে অনেকেই ফুল, উপহার ও বেলুন হাতে সাগরপাড়ে সময় কাটাচ্ছেন। কেউবা হলুদ শাড়ি ও পাঞ্জাবি পরে মেতে উঠেছেন ছবি তোলার আনন্দে। হোটেল-মোটেল ও রিসোর্টগুলোতে চলছে বিশেষ আয়োজন। কফিশপ ও রেস্তোরাঁগুলোও দম্পতি ও তরুণ-তরুণীদের উপচে পড়া ভিড়ে মুখর।

ঢাকা থেকে আসা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী সানি শাহরিয়ার বলেছেন, “ভালোবাসার দিনটা বিশেষভাবে কাটাতে কক্সবাজারে এসেছি। সমুদ্রের ঢেউ আর প্রিয় মানুষ, সব মিলিয়ে দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।”

রাজশাহী থেকে আসা নবদম্পতি শাওন ও সানিয়া বলেন, “আমাদের বিয়ের পর প্রথম ভালোবাসা দিবস কাটাচ্ছি কক্সবাজারে। এখানে আসার অনুভূতি সত্যিই অন্যরকম। সৈকতের বাতাস আর ঢেউয়ের শব্দ সময়টাকে আরো রোমান্টিক করে তুলেছে।”

কুমিল্লা থেকে পরিবার নিয়ে বেড়াতে আসা ব্যবসায়ী আলী মোহাম্মদ বলেন, “শুধু প্রেমিক-প্রেমিকাই নয়, পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখানে সময় কাটানো দারুণ ব্যাপার। শিশুরা আনন্দ করছে, আমরাও প্রকৃতির মাঝে একটুখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারছি।”

বিপুল পরিমাণ পর্যটকের উপস্থিতিতে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও হোটেল মালিকরা জানিয়েছেন, এ বছর বসন্ত ও ভালোবাসা দিবসের মিলিত উৎসবে সমুদ্রসৈকতে পর্যটকদের উপস্থিতি চোখে পড়ার মতো। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে তৎপর আছে। বসন্তের বাতাস আর ভালোবাসার উষ্ণতা মিলিয়ে কক্সবাজারের পরিবেশ হয়ে উঠেছে স্বপ্নীল ও রঙিন। 

হোটেল-মোটেল-গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাসেম সিকদার বলেছেন, “বসন্তের শুরুতে কক্সবাজারে পর্যটকের ঢল আমাদের জন্য ইতিবাচক। আশা করছি, গ্রীষ্মকালেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে, যা কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পকে আরো চাঙ্গা করবে।”

সৈকতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ডরা নিয়মিত কাজ করছেন। 

বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার বেলাল হোসেন বলেছেন, “দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনায় রেখে আমরা রাত-দিন কাজ করছি। কোনো পর্যটক যাতে হয়রানির শিকার না হন এবং গভীর পানিতে নামার ঝুঁকি না নেন, সেদিকে বিশেষ নজর রাখা হচ্ছে।”

কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের সিনিয়র সহকারী কমিশনার (পর্যটন সেল) মো.

তানভীর হোসেন বলেছেন, “পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে সার্বক্ষণিক সজাগ দৃষ্টি রয়েছে। বিচকর্মী, ট্যুরিস্ট পুলিশ ও লাইফগার্ডরা পর্যটকদের সেবায় নিয়োজিত আছেন। কারো অভিযোগ কিংবা তথ্যের প্রয়োজন হলে সমুদ্রসৈকতের প্রতিটি পয়েন্টে তথ্য ও অভিযোগকেন্দ্র সেবা দিচ্ছে।”

ঢাকা/রফিক

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স কত র বল ছ ন বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়

বিশ্ব চলচ্চিত্রের সবচেয়ে মর্যাদাপূর্ণ আসর কান চলচ্চিত্র উৎসবের ৭৮তম আসরে আনুষ্ঠানিকভাবে জড়িয়ে গেল বাংলাদেশের নাম। উৎসবের স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমা বিভাগে লড়তে যাচ্ছে দেশের সিনেমা ‘আলী’।

কানের অফিসিয়াল সিলেকশনের স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে দেশের কোনো সিনেমার তালিকাবদ্ধ হওয়া এটাই প্রথম। পৃথিবীর বিভিন্ন সিনেমার সঙ্গে ‘আলী’ লড়বে পাম দ’র বা স্বর্ণপামের জন্য। গত ২৫ এপ্রিল এমনটাই জানিয়েছে কান-কর্তৃপক্ষ।

তবে এবার আরো একটি চমকপ্রদ খবর পেল ‘আলী’ টিম। এই স্বল্পদৈর্ঘ্যর কানের দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়! এমন দুর্দান্ত একটি অর্জনের জন্য ‘আলী’ টিমকে ধন্যবাদ জানান সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। সেই সঙ্গে ‘আলী’র কান যাত্রার জন্য দেন বিশেষ ঘোষণা।    

আরো পড়ুন:

‘তাণ্ডব’ করছেন শাকিব খান, সঙ্গী সাবিলা নূর

অতীত জেনে মাধুরীকে বিয়ে করিনি: শ্রীরাম নেনে

তিনি বলেন, “পৃথিবীর অনেক দেশেই, ধরা যাক সাউথ-ইস্ট এশিয়ার একটি দেশ (নাম উল্লেখ করেননি) যাদের একটি শর্ট-ফিল্ম কানের অফিসিয়াল সিলেকশনে আছে, তাদের ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশন সেখানে একটি ডেলিগেশন পাঠায়। ডেলিগেশন সেখানে সিনেমার টিমের জন্য লাঞ্চ, ডিনার বা অন্যান্য পার্টি হোস্ট করে। কিন্তু আমরা এই কাজগুলো তেমন একটা করতে পারিনি। এখন থেকে এটা শুরু করতে চাই। আলী’কে দিয়েই এটা শুরু হল।”

এরপর ফারুকী বলেন, “কান উৎসবে ‘আলী’ টিমের থাকা-খাওয়া, যাওয়া-আসার ব্যবস্থা করবে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়। সেইসঙ্গে এই সিনেমার কেন্দ্রীয় চরিত্র আল আমিনের প্যারিস যাওয়ার এয়ার টিকিটের ব্যবস্থা করা হবে বেসরকারি উদ্যোগে।”

খানিকটা ব্যাখ্যা করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকী বলেন, “কানের প্রধান প্রতিযোগিতায় ‘আলী’ নির্বাচিত হয়েছে বলেই যে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিচ্ছে তা নয়। আমরা মনে করি যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি সেটি যে ফিল্ডেই হোক, আমাদের ইমেজ নির্ভর করে এমন যেকোনো বিষয়ে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে। শুধু সিনেমা, গান, নাচ, থিয়েটার নয়, স্থাপত্যেও কেউ যদি দারুণ কিছু অর্জন করে সেখানেও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় পাশে থাকবে।”

‘আলী’ সিনেমার নির্মাতা স্বভাবতই এই ঘোষণায় দারুণ খুশি। এ বিষয়ে আদনান আল রাজিব বলেন, “সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের এমন উদ্যোগের জন্য আমি অশেষ ধন্যবাদ জানাই।”

বলা প্রয়োজন, স্বল্পদৈর্ঘ্য সিনেমাটি নির্মাণ করেছেন আদনান আল রাজীব। এর প্রযোজনায় আছেন দেশের তানভীর হোসেন এবং ফিলিপাইনের ক্রিস্টিন ডি লিওন। সিনেমাটির লাইন প্রোডাকশন কোম্পানি বাংলাদেশের রানআউট ফিল্মস।

ভূ-মধ্যসাগরের তীরে দক্ষিণ ফরাসি উপকূলে ১৩ মে এবারের কান চলচ্চিত্র উৎসব শুরু হবে, চলবে ২৪ মে পর্যন্ত।  

বলা দরকার, এর আগে কান চলচ্চিত্র উৎসবের প্রতিযোগিতা বিভাগে স্থান পেয়েছিল বাংলাদেশের পূর্ণদৈর্ঘ্য ‘মাটির ময়না’ ও ‘রেহানা মরিয়ম নূর’।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জবি ছাত্রীর আত্মহত্যার প্ররোচনার মামলায় আটক তরুণ
  • সুইডেনে বন্দুকধারীর হামলায় নিহত ৩
  • কাপ্তাই হ্রদের ‘দ্বীপে’ রিসোর্ট-কটেজ, টানছে পর্যটক
  • ভারতে অনলাইনে ছড়ানো হচ্ছে মুসলিমবিদ্বেষী গান, কনটেন্ট
  • হামলার পর আশা ও আতঙ্কের মধ্যে পেহেলগামে ধীরে ধীরে ফিরছেন পর্যটকেরা
  • চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পরও লিভারপুলের কোন খেলোয়াড়েরা পদক পাবেন না
  • বিশ্বের বড় বড় উৎসব কোথায় হয়
  • প্রাগে পুরস্কৃত ‘নট আ ফিকশন’,অনলাইনে মুক্তি ১ মে
  • ফসলের ক্ষেতে আশার আলো
  • কানে ‘আলী’, দায়িত্ব নিলো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়