Samakal:
2025-06-16@08:29:17 GMT

বাংলায় জেগে রই

Published: 15th, February 2025 GMT

বাংলায় জেগে রই

মানুষ যদি নিজের মৌল বিষয়গুলো অস্বীকার করে, তার মূল্যমান কতটা থাকে? আদৌ থাকে কি? না। ভাষা আমাদের একান্তই আপন, মায়ের মুখ নিঃসৃত মধু, রস– যা আমাদের হৃদ্যতা তৈরি করে। একে অস্বীকার করা মানে নিজেকে অস্বীকার করা, নিজের মাকে অস্বীকার করা। এই বোধটুকু আমাদের হৃদয় থেকে অনুধাবন করতে হবে ভাষাকে বুঝতে চাইলে। একটি জাতি তখনই হৃদ্য হয়, যখন সেই জাতির ভাষা হয় হৃদ্য। ভাষাকে হৃদ্য করতে হলে, সেই ভাষার প্রয়োগ ও ব্যবহার বাড়াতে হবে। এর বিকল্প নেই। ভাষাকে ভালো না বাসলে কেমন করে সম্ভব সেটি?
ইতিহাসের পাঠ
১৯৪৭ সাল। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলো ভারতবর্ষ। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে তৈরি হলো ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি দেশ। পাকিস্তানের হলো দুটি অংশ– পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ববাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তান। শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান শোষণ ও শাসন শুরু করে নিরীহ বাঙালির ওপর। দেশ তৈরি হওয়ার মাত্র কিছুদিনের মধ্যে, ১৯৪৮ সালে, পশ্চিম পাকিস্তান নিজেদের মতো করে ঘোষণা করে– পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। পূর্ববাংলার মানুষ ফুঁসে ওঠে। চূড়ান্ত রূপ নেয় মাতৃভাষা বাংলা চাই আন্দোলন। একটা দিন ধার্য করা হয় আন্দোলনের জন্য– ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২। কর্তৃপক্ষ ওই দিন ১৪৪ ধারা জারি করে সব মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দেয়। ছাত্ররা ঠিক করে, ১৪৪ ধারা ভেঙেই আন্দোলন করবে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ মানুষও। পুলিশ গুলি চালায় নির্বিচারে। শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম জানা ভাষাসৈনিকরা। আহত হন আরও অনেক অনেক বেশি।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
ভাষার জন্য সংগ্রাম একটি বিরল ঘটনা। এ ঘটনাটি কানাডার ভ্যানকুভারে 
বসবাসরত দুই বাঙালি আবদুস সালাম ও রফিকুল ইসলাম বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন। জাতিসংঘের কাছে ১৯৯৮ সালে আবেদন করেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয় ইউনেস্কো। ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫তম অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
চেতনায় ভাষা
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অবশ্যই একটি বড় ব্যাপার। তবুও নিজের মন থেকে, নিজের চেতনায় ভাষার স্থান দিতে না পারলে সেটির গুরুত্ব কতটুকু আর থাকে? নিজের মায়ের ভাষা, নিজের ভাষা নিজের ভেতরে লালন করতে পারার মধ্যেই সার্থকতা। মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম, নিজের মাতৃভাষা অপছন্দকারীর জন্মপরিচয় সম্পর্কেই সন্দেহ পোষণ করেছেন। লিখেছেন– 
‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।’
এ জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি কিংবা ভাষার মাস বলে ভাষাকে মহিমান্বিত করার কিছু নেই। আমাদের বাংলা ভাষা সব সময়ই মহিমান্বিত, সেরা ভাষা– এটি সবসময় নিজের ভেতরে লালন করতে হবে। নিজের চেতনায় জাগিয়ে রাখতে হবে শুধু একটি মাস নয়, বারোটা মাস। বাংলার প্রতি ভালোবাসা চিরজাগ্রত থাকুক। u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে এটিএম বুথে ধর্ষণের অভিযোগ, অভিযুক্ত পলাতক

গাজীপুরের শ্রীপুরে অধিক বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে এক নারী পোশাক শ্রমিককে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে একটি এটিএম বুথের নিরাপত্তা প্রহরীর বিরুদ্ধে।

সোমবার (১৬ জুন) সকালে ওই নারী শ্রমিকের বাবা বাদী হয়ে শ্রীপুর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। 

রবিবার (১৫ জুন) সকালে শ্রীপুর উপজেলার মুলাইদ গ্রামের এমসি বাজার এলাকায় তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন একটি ব্যাংকের এটিএম বুথে এই ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ ।

ভুক্তভোগী নারী স্থানীয় একটি কারখানায় ৬ হাজার টাকা বেতনে কাজ করতেন। অভিযুক্ত নিরাপত্তা প্রহরী মো. লিটন (৩৫) তালহা স্পিনিং মিল সংলগ্ন বুথে দায়িত্ব পালন করতেন। 

লিটন ময়মনসিংহ জেলার পাগলা থানার ডুবাইল গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়ালের ছেলে। বর্তমানে তিনি মুলাইদ গ্রামের আতাব উদ্দিনের বাড়িতে ভাড়া থাকেন এবং ফাস্ট সলিউশন লিমিটেড নামের একটি নিরাপত্তা নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকরি করতেন।

থানায় দায়ের করা অভিযোগ থেকে জানা যায়, এটিএম বুথে টাকা তোলার সূত্র ধরে এই নারী শ্রমিকের সঙ্গে পরিচয় হয় লিটনের। একপর্যায়ে লিটন ভুক্তভোগীকে ১২ হাজার টাকা বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে রবিবার সকালে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে ডেকে আনেন। সকাল ৬টার দিকে বুথে গেলে লিটন তাকে ভেতরে একটি ছোট কক্ষে বসিয়ে রাখেন এবং জানান যে, নতুন চাকরির উর্ধ্বতন কর্মকর্তা এসে তার সাক্ষাৎকার নেবেন।

ভিকটিমের বাবা দুইবার মেয়ে চাকরির বিষয়ে খোঁজ নিলে লিটন জানান, চিন্তার কিছু নেই, সব ঠিক আছে। তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেব। এরপর আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে লিটন কক্ষে ঢুকে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে এবং তাকে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়। বাড়ি ফেরার পথে মেয়ে তার বাবাকে ঘটনাটি জানায়।

ঘটনার বিষয়ে ফাস্ট সলিউশন লিমিটেডের সুপারভাইজার মো. হানিফের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

শ্রীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারিক জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং অভিযুক্ত লিটন পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে। দ্রুতই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

তিনি আরো জানান, ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দিন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সম্পন্ন করা হয়েছে।

ঢাকা/রফিক/টিপু  

সম্পর্কিত নিবন্ধ