মানুষ যদি নিজের মৌল বিষয়গুলো অস্বীকার করে, তার মূল্যমান কতটা থাকে? আদৌ থাকে কি? না। ভাষা আমাদের একান্তই আপন, মায়ের মুখ নিঃসৃত মধু, রস– যা আমাদের হৃদ্যতা তৈরি করে। একে অস্বীকার করা মানে নিজেকে অস্বীকার করা, নিজের মাকে অস্বীকার করা। এই বোধটুকু আমাদের হৃদয় থেকে অনুধাবন করতে হবে ভাষাকে বুঝতে চাইলে। একটি জাতি তখনই হৃদ্য হয়, যখন সেই জাতির ভাষা হয় হৃদ্য। ভাষাকে হৃদ্য করতে হলে, সেই ভাষার প্রয়োগ ও ব্যবহার বাড়াতে হবে। এর বিকল্প নেই। ভাষাকে ভালো না বাসলে কেমন করে সম্ভব সেটি?
ইতিহাসের পাঠ
১৯৪৭ সাল। ব্রিটিশ শাসন থেকে মুক্ত হলো ভারতবর্ষ। দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে তৈরি হলো ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি দেশ। পাকিস্তানের হলো দুটি অংশ– পূর্ব পাকিস্তান বা পূর্ববাংলা এবং পশ্চিম পাকিস্তান। শুরু থেকেই পশ্চিম পাকিস্তান শোষণ ও শাসন শুরু করে নিরীহ বাঙালির ওপর। দেশ তৈরি হওয়ার মাত্র কিছুদিনের মধ্যে, ১৯৪৮ সালে, পশ্চিম পাকিস্তান নিজেদের মতো করে ঘোষণা করে– পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা হবে উর্দু। পূর্ববাংলার মানুষ ফুঁসে ওঠে। চূড়ান্ত রূপ নেয় মাতৃভাষা বাংলা চাই আন্দোলন। একটা দিন ধার্য করা হয় আন্দোলনের জন্য– ২১ ফেব্রুয়ারি ১৯৫২। কর্তৃপক্ষ ওই দিন ১৪৪ ধারা জারি করে সব মিটিং-মিছিল বন্ধ করে দেয়। ছাত্ররা ঠিক করে, ১৪৪ ধারা ভেঙেই আন্দোলন করবে। তাদের সঙ্গে যোগ দেয় সাধারণ মানুষও। পুলিশ গুলি চালায় নির্বিচারে। শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বারসহ নাম জানা ভাষাসৈনিকরা। আহত হন আরও অনেক অনেক বেশি।
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি
ভাষার জন্য সংগ্রাম একটি বিরল ঘটনা। এ ঘটনাটি কানাডার ভ্যানকুভারে
বসবাসরত দুই বাঙালি আবদুস সালাম ও রফিকুল ইসলাম বিশ্বদরবারে তুলে ধরেন। জাতিসংঘের কাছে ১৯৯৮ সালে আবেদন করেন আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির জন্য। ১৯৯৯ সালের ১৭ নভেম্বর একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেয় ইউনেস্কো। ২০১০ সালের ২১ অক্টোবর জাতিসংঘের ৬৫তম অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
চেতনায় ভাষা
আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অবশ্যই একটি বড় ব্যাপার। তবুও নিজের মন থেকে, নিজের চেতনায় ভাষার স্থান দিতে না পারলে সেটির গুরুত্ব কতটুকু আর থাকে? নিজের মায়ের ভাষা, নিজের ভাষা নিজের ভেতরে লালন করতে পারার মধ্যেই সার্থকতা। মধ্যযুগের কবি আবদুল হাকিম, নিজের মাতৃভাষা অপছন্দকারীর জন্মপরিচয় সম্পর্কেই সন্দেহ পোষণ করেছেন। লিখেছেন–
‘যে সবে বঙ্গেত জন্মি হিংসে বঙ্গবাণী।
সে সব কাহার জন্ম নির্ণয় ন জানি।’
এ জন্য একুশে ফেব্রুয়ারি কিংবা ভাষার মাস বলে ভাষাকে মহিমান্বিত করার কিছু নেই। আমাদের বাংলা ভাষা সব সময়ই মহিমান্বিত, সেরা ভাষা– এটি সবসময় নিজের ভেতরে লালন করতে হবে। নিজের চেতনায় জাগিয়ে রাখতে হবে শুধু একটি মাস নয়, বারোটা মাস। বাংলার প্রতি ভালোবাসা চিরজাগ্রত থাকুক। u
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫)
এশিয়া কাপে আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। চ্যাম্পিয়নস লিগে মাঠে নামবে ম্যানচেস্টার সিটি, নাপোলি, বার্সেলোনা।
সিপিএল: কোয়ালিফায়ার-১ গায়ানা-সেন্ট লুসিয়া
সকাল ৬টা, স্টার স্পোর্টস ২
আফগানিস্তান-শ্রীলঙ্কা
রাত ৮-৩০ মি., টি স্পোর্টস ও নাগরিক
বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ
বেলা ৩টা, স্টার স্পোর্টস সিলেক্ট ১
কোপেনহেগেন-লেভারকুসেন
রাত ১০-৪৫ মি., সনি স্পোর্টস ২
ম্যানচেস্টার সিটি-নাপোলি
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ১
নিউক্যাসল-বার্সেলোনা
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ২
ফ্রাঙ্কফুর্ট-গালাতাসারাই
রাত ১টা, সনি স্পোর্টস ৫