চ্যাম্পিয়নস ট্রফি থেকে বাদ পড়া লিটন বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে
Published: 16th, February 2025 GMT
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে থাকা ক্রিকেটাররা এখন দুবাইয়ে, প্রস্তুতি নিচ্ছেন মাঠে নামার। ফর্মের কারণে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি দলে জায়গা না পেলেও বসে নেই লিটন দাসও।
বিপিএলের পর কয়েকদিন ছুটি কাটিয়ে আজ বাংলাদেশ টাইগার্সের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন লিটন। জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটারদের নিয়ে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে আজই টাইগার্সের ক্যাম্প শুরু হয়েছে।
মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের এবারের আসর। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট অপারেশনস ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফীস প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, দলগুলোর প্রস্তুতি শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত টাইগার্সের ক্যাম্প চলবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে সুযোগ না পাওয়া ও জাতীয় দলের আশপাশে আছেন এমন ক্রিকেটাররা এতে অংশ নিচ্ছেন।
বাংলাদেশ টাইগার্সের এই ক্যাম্প পরিচালনা করছেন দেশি কোচেরা। তত্ত্বাবধানে আছেন সোহেল ইসলাম। শুরুটা ফিটনেসের কাজ দিয়ে হলেও পরে স্কিল অনুশীলন করবেন ক্রিকেটাররা। ১০-১২ দিনের এই ক্যাম্পের বিষয়ে নাফীস বলেছেন, ‘প্রিমিয়ার লিগের আগের যে সময়টা আছে, তখন যেন জাতীয় দলের আশপাশে থাকা ক্রিকেটাররা অনুশীলনের ভেতর থাকতে পারে। লিগ শুরু হলে সবাই নিজেদের দলের সঙ্গে অনুশীলন শুরু করবেন।’
আন্তর্জাতিক বা ঘরোয়া ব্যস্ততা না থাকলেও শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এখন ব্যস্ততা অনেক। একাডেমি মাঠে অনূর্ধ্ব-১৯ দলের পাশেই প্রিমিয়ার লিগের অনুশীলন করছেন নারী ক্রিকেটাররা। এর মধ্যে আজ থেকে টাইগার্স ক্যাম্প শুরু হয়েছে ইনডোরে।
আগামী ১৯ ফেব্রুয়ারি শুরু হতে যাচ্ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এবারের আসর। পরদিন বাংলাদেশ মাঠে নামবে ভারতের বিপক্ষে। নাজমুল হোসেনদের পরের দুটি ম্যাচ ২৪ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি, যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানের বিপক্ষে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে কেউ চোটে পড়লে যেন বিকল্প তৈরি থাকে, বাংলাদেশ টাইগার্স ক্যাম্প তারও প্রস্তুতি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
সাকিব আল হাসানের সঙ্গে নিজের তুলনাকে মেহেদী হাসান মিরাজ হয়তো উপভোগই করেন। কারণ, তাঁর স্বপ্ন সাকিবের মতো বিশ্বনন্দিত অলরাউন্ডার হয়ে ওঠা। সেই পথে বোধ হয় গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। বিশেষ করে টেস্টে দেশে-বিদেশে সম্প্রতি ভালো করছেন। পাকিস্তানে দারুণ প্রশংসিত ছিলেন অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুই টেস্টের হোম সিরিজে উভয় টেস্টে নিজেকে ছাপিয়ে গেলেন। সিলেটের হারের ম্যাচেও ১০ উইকেট ছিল তাঁর। চট্টগ্রামে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট নিয়ে সাকিব ও সোহাগ গাজীর কাতারে নাম লেখালেন। মূলত মিরাজের অলরাউন্ড নৈপুণ্যে ইনিংস ব্যবধানে টেস্ট জেতা সম্ভব হয়।
গতকাল শতকের ঘরে যেতে কম কসরত করতে হয়নি তাঁর। নব্বইয়ের ঘরে গিয়ে তো অনিশ্চয়তায় পড়ে গিয়েছিলেন হাসানের আউটের শঙ্কায়। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হওয়ায় দ্বিতীয় শতকের দেখা পান তিনি। ২০২১ সালে এই চট্টগ্রামেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি ছিল মিরাজের। গতকালের পারফরম্যান্স নিয়ে টাইগার এ অলরাউন্ডার বলেন, ‘ব্যাটিংয়ের সময় চেষ্টা করেছিলাম ২ রান নিয়ে ১০০ রানে যেতে। সেভাবে দৌড় দিয়েছিলাম। কিন্তু ফিল্ডারের হাতে বল চলে গিয়েছিল (হাসি)। তার পর তো আল্লাহর ওপর ছেড়ে দিয়েছিলাম। হাসান অনেক ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তানজিমও ভালো সাপোর্ট দিয়েছে। তাইজুল ভাইও। এই তিনজনকেই অনেক অনেক ধন্যবাদ। কারণ, ওদের জন্যই আমি ১০০ রান করতে পেরেছি।’
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে করা সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট প্রাপ্তিকে নিজের সেরা পারফরম্যান্স দাবি মিরাজের, ‘ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ১০০ করেছিলাম, ৩ উইকেট নিয়েছিলাম। অল্পের জন্য ৫ উইকেট হয়নি। হলে ভালো লাগত। ওই ম্যাচ হেরেছিলাম এই মাঠে। সে জিনিসটা মাথায় ছিল। ভালো লাগছে ম্যাচটি জিতেছি।’ মিরাজ ১৬২ বলে ১১টি চার ও একটি ছয় মেরে ১০৪ রান করেন। ২১ ওভারে ৩২ রান দিয়ে নেন পাঁচ উইকেট।
টেস্টে এ রকম অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশে আর দু’জনের আছে। সাকিব আল হাসান দু’বার ম্যাচে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট পেয়েছেন ২০১১ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে মিরপুরে আর ২০১৪ সালে খুলনায়। সোহাগ গাজী নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি ও পাঁচ উইকেট শিকার করেন চট্টগ্রামে। সেই মাইলফলক ছোঁয়া মিরাজকে সম্প্রতি অলরাউন্ডার ক্যাটেগরিতে ফেলা হয়। সাকিবের বিকল্প ভাবা হয় তাঁকে এখন।
এ ব্যাপারে মিরাজের অভিমত, ‘দেখেন একটা জিনিস, যখন সাকিব ভাই ছিলেন, ভিন্ন রোল ছিল। এখন ভিন্ন রোল। যেহেতু টিম ম্যানেজমেন্ট, সবাই ব্যাটিংয়ে আস্থা রাখে। আমিও ভেবেছি আমার ব্যাটিংটা গুরুত্বপূর্ণ। এখন হয়তো আমি লিডিং রোল প্লে করছি, আগে সাকিব ভাই করত। এখন আমাদের দায়িত্ব আরও বেশি।’
সিলেটে দুই ইনিংসে পাঁচ উইকেট করে নিয়েও দলকে জেতাতে পারেননি মিরাজ। চট্টগ্রামে সাদমান, তাইজুলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ম্যাচ জয়ের নায়ক হন। এই সাফল্য নিয়ে বলেন, ‘সত্যি কথা বলতে, প্রথম ম্যাচ হারার পর যেভাবে কামব্যাক করেছি, এটা খুবই দরকার ছিল। আমাদের সবাই ভেবেছিল, আমরা ভালো করব।’ মিরাজ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন কোচিং স্টাফ ও সতীর্থের কাছে। আর তাঁর কাছে কৃতজ্ঞতা পুরো দলের।