যুবকের মরদেহ উদ্ধারের পর স্ত্রী আটক
Published: 16th, February 2025 GMT
ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুতে রানা মন্ডল নামে এক যুবকের ফাঁস দেওয়া মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার দুপুরে উপজেলার শড়াতলা গ্রামে নিজ ঘর থেকে গলাই গামছা পেঁচানো অবস্থায় পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। রানা ওই গ্রামের মঈনুদ্দিন মন্ডলের ছেলে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ রানার স্ত্রী শম্পা খাতুনকে আটক করেছে।
রানার স্বজনদের দাবি, বনিবনা না হওয়ায় রানাকে বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে শম্পা খাতুন। পরে গলাই ওড়না পেঁচিয়ে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখেছে।
সদর মন্ডল নামে এক প্রতিবেশি জানান, রানা এলাকায় ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। গ্রামে একটি চায়ের দোকান ছিল তার। এছাড়া সে কৃষিকাজও করতো। স্ত্রীর সঙ্গে তার বেশকিছুদিন ধরে বনিবনা হচ্ছিল না। প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়াবিবাদ হতো।
রানার মা পারভিনা খাতুনের ভাষ্য, কয়েকদিন ধরে পুত্রবধূর সঙ্গে ছেলের মনোমালিন্য চলছিল। তার ছেলে বাড়িতে খাওয়া দাওয়াও করত না। ঘটনার দিন দুপুরের আগেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। পরে ছেলে নিজ ঘরে ঘুমিয়ে থাকার সময় তার স্ত্রী বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে মরদেহ ঘরের আড়ায় ঝুঁলিয়ে রাখে। একই ভাষ্য রানার বাবা মাঈনুদ্দিন মন্ডলের।
অভিযোগ অস্বীকার করে ওই যুবকের স্ত্রী শম্পা খাতুন দাবি করেন, ঘটনার সময় তিনি রান্নাঘরে রান্না করছিলেন। পরে খবর পেয়ে অন্যদের সঙ্গে ঘরে গিয়ে স্বামীকে ফাঁস দেওয়া অবস্থায় আড়ায় ঝুলে থাকতে দেখেন।
হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি এম এ রউফ খান বলেন, খবর পেয়ে ওই যুবকের মরদেহ উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই যুবকের স্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। প্রাথমিকভাবে হত্যার কোনো আলামত পাওয়া যায়নি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ঝ ন ইদহ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?