দেশে আবারও বাড়ল স্মারক স্বর্ণ মুদ্রার দর। প্রতিটি মুদ্রায় আরও ১০ হাজার টাকা বেড়ে এক লাখ ৩৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সর্বশেষ গত ১৪ অক্টোবর ১০ হাজার টাকা বাড়িয়ে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। এর আগে গত ১ সেপ্টেম্বর প্রতিটি মুদ্রায় ১০ হাজার এবং গত ১৬ জুলাই ৫ হাজার টাকা করে বাড়ানো হয়। আন্তর্জাতিক ও দেশের বাজারে স্বর্ণের দর বৃদ্ধির কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। স্বারক মুদ্রার দর এক লাখ টাকা হয় গত ২৬ ডিসেম্বর। আর ২০২৩ সালে ৬ দফায় ২৫ হাজার টাকা বেড়েছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, স্বারক স্বর্ণ মুদ্রার নতুন দর কার্যকর হয়েছে ১৬ ফেব্রুয়ারি রোববার থেকে। স্বারক রৌপ্য মুদ্রার দরও বাড়িয়ে ৭ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। বর্তমানে তিন ধরনের স্মারক স্বর্ণ মুদ্রা রয়েছে। প্রতিটি মুদ্রা ২২ ক্যারেট মানের ১০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণ দিয়ে তৈরি। এসব মুদ্রা হলো- আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০০০, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ১৯২০-২০২০ এবং স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ১৯৭১-২০২১। সাধারণভাবে স্মারক মুদ্রা শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল ও অন্যান্য শাখা অফিসে পাওয়া যায়। মিরপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকের টাকা যাদুঘরেও বিক্রি করা হয়।

স্বারক স্বর্ণ মুদ্রা ছাড়াও বিভিন্ন ধরনের রৌপ্য স্মারক ও কাগুজে স্মারক নোট রয়েছে। বিশেষ দিন বা স্থাপনাকে স্মরণীয় করে রাখতে বিভিন্ন নোট ছাড়া হয়। বর্তমানে স্বর্ণ মুদ্রার বাইরে ১২ ধরনের স্মারক রৌপ্য মুদ্রা আছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার রজত জয়ন্তী, বাংলাদেশ ব্যাংক রজত জয়ন্তী, বঙ্গবন্ধু সেতু উদ্বোধন, বাংলাদেশের ৪০তম বিজয় বার্ষিকী, বিদ্রোহী কবিতার ৯০ বছর, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সার্ধশত জন্মবার্ষিকী, আইসিসি ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ বাংলাদেশ, বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের শতবর্ষ, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জন্মশতবর্ষ, বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী, বাংলাদেশ-জাপান কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি ও জাতির গৌরবের প্রতীক পদ্মা সেতু।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বর ণ ম দ র স বর ণ ম দ র র ম দ র র দর জয়ন ত

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির মতো সরু গাজার শিশুদের হাত

গাজার নাসের হাসপাতালের শিশু অপুষ্টি ওয়ার্ডের শিশুরা একরকম নিশ্চল হয়ে পড়ে আছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তীব্র ক্ষুধার কারণে ক্লান্ত হয়ে এই শিশুরা কাঁদতে পারেন না।

চিকিৎসকরা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সবচেয়ে তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের চিকিৎসা করানো জায়গাগুলোতে নীরবতা এখন সাধারণ ঘটনা। শিশুদের এই নীরবতা তাদের শরীর কাজ না করার লক্ষণ।

১০ মাস বয়সী মারিয়া সুহাইব রাদওয়ানের মা জেইনা রাদওয়ান বলেন, “সে সবসময় নিশ্চল হয়ে পড়ে থাকে, এভাবে শুয়ে থাকে... ডাক দিলেও তার সাড়া পাওয়া যায় না।”

জেইনা তার শিশু সন্তানের জন্য দুধ বা পর্যাপ্ত খাবার খুঁজে পাচ্ছেন না এবং বুকের দুধ খাওয়াতে পারছেন না। কারণ তিনি নিজেও কম খাচ্ছেন, দিনে একবার খাবার খেয়ে বেঁচে আছেন।

গত সপ্তাহে, রয়টার্সের সাংবাদিকরা নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে পাঁচ দিন কাটিয়েছেন। এটি গাজার সবচেয়ে বিপজ্জনক ক্ষুধার্ত শিশুদের চিকিৎসা করতে সক্ষম মাত্র চারটি কেন্দ্রের মধ্যে একটি। রয়টার্সের সাংবাদিকরা সেখানে উপস্থিত থাকাকালেই তীব্র অপুষ্টিতে ভোগা ৫৩ জন শিশুকে ভর্তি করা হয়েছিল।

ইসরায়েল মার্চ মাসে ত্রাণের প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে গাজার খাদ্য মজুদ ফুরিয়ে আসছে। খাদ্য মজুদ ফুরিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে জুন এবং জুলাই মাসে পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ব্যাপক দুর্ভিক্ষের সতর্কবার্তা দেয় এবং ক্ষীণকায় শিশুদের ছবি বিশ্বকে হতবাক করে দেয়। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ৮৯ জন শিশুসহ ১৫৪ জন অপুষ্টিতে মারা গেছে। 

নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের শিশু ও প্রসূতি বিভাগের প্রধান ডা. আহমেদ আল-ফাররা বলেন, “আমাদের শিশুদের জন্য দুধ দরকার। আমাদের চিকিৎসা সরঞ্জাম দরকার। আমাদের কিছু খাবার দরকার, পুষ্টি বিভাগের জন্য বিশেষ খাবার। হাসপাতালের জন্য আমাদের সবকিছু দরকার।”

তিনি জানান,তার হাসপাতাল এখন অপুষ্টিতে ভোগা শিশুদের চিকিৎসা করছে যাদের আগে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা ছিল না, যেমন শিশু ওয়াতিন আবু আমুনাহ। প্রায় তিন মাস আগে সুস্থভাবে জন্মগ্রহণ করেছিল। জন্মের সময় তার ওজনের চেয়ে ১০০ গ্রাম কম এখন তার ওজন।

ফাররা বলেন, “গত তিন মাসে তার ওজন এক গ্রামও বাড়েনি। বরং শিশুটির ওজন কমেছে। পেশী সম্পূর্ণরূপে হ্রাস পেয়েছে। হাড়ের উপরে কেবল ত্বক রয়েছে, যা ইঙ্গিত দেয় যে শিশুটি তীব্র অপুষ্টির পর্যায়ে প্রবেশ করেছে। এমনকি শিশুটির মুখ: তার গাল থেকে চর্বি টিস্যুও হারিয়ে গেছে।"

শিশুটির মা ইয়াসমিন আবু সুলতান শিশুটির অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের দিকে ইঙ্গিত করে জানান, তার বাহু তার মায়ের বৃদ্ধাঙ্গুলির মতো মোটা

তিনি বলেন, “দেখতে পারছেন? এগুলো তার পা... তার বাহুগুলোর দিকে তাকান।”
 

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ