মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর সময় ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে তার পিছে পিছে দৌড়ে শেষপর্যন্ত তাকে আটক করেছেন ট্রাফিক সার্জেন্ট আল মামুন।

ঢাকার দয়াগঞ্জ মোড়ে বাস থেকে মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর সময় ছিনতাইকারীকে ধাওয়া দিয়ে ধরেন আল মামুন। পুলিশের এই কর্মকর্তা ঢাকা মহানগর পুলিশের ট্রাফিক ওয়ারী বিভাগের কর্মরত।

ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন বিভাগের প্রধান উপ-পুলিশ কমিশনার তালেবুর রহমান রাইজিংবিডি ডটকমকে বিষয়টি সম্পর্কে তথ্য দিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

চট্টগ্রামে যুবলীগ-ছাত্রলীগের আরো ৩৯ নেতাকর্মী গ্রেপ্তার

নোয়াখালীতে ইউপি সদস্যকে মারধর করল যুবদল-ছাত্রদল

বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ডিএমপি ঘটনার বিবরণে জানিয়েছে, সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে বাসে ওঠার সময় এক যাত্রীর পকেট থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন এক যুবক। তখন ধাওয়া দিয়ে আটক করা ছিনতাইকারীকে গেন্ডারিয়া থানার এসআই রিপনের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আটক ছিনতাইকারীর নাম কালাম, তার বয়স ৪২ বছর। তার কাছ থেকে মোবাইলটি উদ্ধারের পর সেটি ওই বাসের যাত্রী খন্দকার আশরাফুলকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়, বলা হয়েছে ডিএমপির বিজ্ঞপ্তিতে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দয়াগঞ্জ মোড়ে কর্তব্যরত সার্জেন্ট আল মামুন সাহসিকতার সঙ্গে ছিনতাইকারীকে ধাওয়া করে হাতেনাতে আটক করেন।

ট্রাফিক সার্জেন্ট আল-মামুন বলেছেন, “আমরা প্রায়ই শুনি, দয়াগঞ্জ মোড়ে চলন্ত বাস থেকে, কখনো যাত্রী ওঠা-নামানোর সময় ছিনতাই হয়। এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি রয়েছে। এসব ঘটনা এড়াতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শক্ত অবস্থানের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে।”

ঢাকা/মাকসুদ/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আল ম ম ন র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

শরীয়তপুর শিল্পকলা একাডেমি: যেখানে ‘শিল্প-বাণিজ্য’ আছে, ‘কলা’ নেই

শরীয়তপুর জেলা শিল্পকলা একাডেমির কার্যক্রম বন্ধ আছ এক বছরের বেশি সময় ধরে। একাডেমির মাঠে এক মাস ধরে চলছে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা।

জেলা শিল্পকলা একাডেমি সূত্র জানায়, জেলা শহরের তুলাসার মৌজায় ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কের পাশে জেলা শিল্পকলা একাডেমির অবস্থান। তিন কক্ষের একটি টিনশেডের আধা পাকা ঘরে ১৯৮০ সালে একাডেমির কার্যক্রম শুরু হয়। ৪৫ বছর ধরে সেই ঘরেই একাডেমির কার্যক্রম চলছে।

শিল্পকলা একাডেমিতে সংগীত, নৃত্য, নাটক, আবৃত্তি, চারুকলা ও তালযন্ত্র বিভাগ আছে। বিভাগগুলোতে শিশু-কিশোরেরা প্রশিক্ষণ নেয়। এ বছর সংগীত ও নৃত্য বিভাগে ৬৮ জন ভর্তির তথ্য আছে। অন্য বিভাগগুলোতে কতজন ভর্তি হয়েছে, সে তথ্য তাদের কাছে নেই। আগের বছরগুলোতে কোন বিভাগে কত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়েছিল, সে–সংক্রান্ত কোনো তথ্য শিল্পকলা একাডেমির কর্মকর্তার কাছে নেই।

জেলা কালচারাল অফিসার মোহাম্মদ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি জানুয়ারি মাসে শরীয়তপুরে যোগ দিয়েছেন। এর পর থেকে শিল্পকলার কার্যক্রম শুরু করার চেষ্টা করছেন। প্রশিক্ষণ বিভাগগুলোতে প্রশিক্ষক নিয়োগের কার্যক্রম চলছে। গত মে মাসে নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়েছিল, ১৪ আগস্ট নিয়োগ পরীক্ষা হয়েছে। সেখানে সব বিভাগের প্রশিক্ষক পাওয়া যায়নি। সংগীত, চারুকলা ও তালযন্ত্রের (তবলা) প্রশিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আর নৃত্য, নাটক ও আবৃত্তির প্রশিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি আবার দেওয়া হবে।

কয়েকজন অভিভাবকের ভাষ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর জেলা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষকদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। এর পর থেকে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। শিল্পকলা মাঠে শিল্প ও বাণিজ্য মেলা আয়োজন করার জন্য নিউ স্টাইল মার্কেটিং নামের একটি প্রতিষ্ঠান জেলা প্রশাসকের কাছে আবেদন করে। শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক গত ১২ আগস্ট ওই প্রতিষ্ঠানকে এক মাসের জন্য সেখানে মেলার আয়োজন করার অনুমতি দেন। বর্তমানে শিল্পকলা একাডেমি মাঠের ওই মেলায় বিভিন্ন পণ্যের ৫৫টি দোকান বসানো হয়েছে।

জেলা শিল্পকলা একাডেমির আশপাশে আছে ১০০ শয্যার সদর হাসপাতাল, সিভিল সার্জনের কার্যালয়, জেলা মহিলা সংস্থার কার্যালয়, শিশু একাডেমি, শিশুদের বিনোদনের শরীয়তপুর পার্ক ও সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়। মেলার কারণে ওই এলাকায় এবং সদর হাসপাতালের সামনে সার্বক্ষণিক যানজট লেগে থাকে।

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক হাবীবুর রহমান বলেন, ‘জেলা হাসপাতালের সামনে এমন একটি মেলার অনুমতি কীভাবে দেওয়া হয়েছে, তা আমার বোধগম্য নয়। ওই মেলার কারণে হাসপাতালের প্রবেশমুখে সার্বক্ষণিক যানজট লেগে থাকে।’

শরীয়তপুরের কবি ও সাহিত্যিক শ্যামসুন্দর দেবনাথ বলেন, ‘একটি জেলার সরকারি পর্যায়ে সংস্কৃতিচর্চার কেন্দ্র হচ্ছে শিল্পকলা। তা কীভাবে এক বছর ধরে বন্ধ থাকতে পারে, আমাদের বোধগম্য নয়। এই প্রজন্মের কিশোর ও তরুণদের শিল্প ও সংস্কৃতির প্রতি এমনিতেই আগ্রহ কম। তার ওপরে সংস্কৃতির প্রশিক্ষণকেন্দ্র বন্ধ রাখা মোটেও ভালো লক্ষণ নয়।’

সার্বিক বিষয়ে শরীয়তপুরের জেলা প্রশাসক হাসিনা বেগম বলেন, শিল্পকলা একাডেমির মাঠে এক মাসের জন্য মেলার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। অনুমতি দেওয়ার আগে তিনি জানতেন না, স্থানটি হাসপাতালের সামনে। আর নানা কারণে শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক নিয়োগে দেরি হচ্ছে। নিয়োগপ্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে। শিগগিরই শিল্পকলার কার্যক্রম চালু করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ