বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আবদুল মঈন খান বলেছেন, ‘দেশের মানুষের গণতান্ত্রিক ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে অবিলম্বে। এটা নিয়ে ছিনিমিনি খেলা চলবে না। মানুষ ভোট দিতে চায়।’

আজ সোমবার বিকেলে টাঙ্গাইলে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঈন খান এসব কথা বলেন। নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় রাখা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি ঘটানো ও দ্রুত নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শহরের শহীদ স্মৃতি পৌর উদ্যানে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

বাংলাদেশের মানুষের রক্তে গণতন্ত্র রয়েছে উল্লেখ করে সমাবেশে মঈন খান বলেন, ‘আমরা আজ থেকে ৫৩–৫৪ বছর আগে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলাম কেন? কেন আমরা পাকিস্তান থেকে বের হয়ে এসেছিলাম কেন? গণতন্ত্রের জন্য। যদি সেই গণতন্ত্র না থাকে, তাহলে সেই স্বাধীনতা মূল্যহীন হয়ে যাবে। কাজেই আমরা সেই ভোটাধিকার ফিরে পেতে চাই।’

আরও পড়ুনষড়যন্ত্রকারীরা জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন চান: আবদুল আউয়াল মিন্টু১ ঘণ্টা আগে

সমাবেশে আসা নেতা–কর্মীদের উদ্দেশে আবদুল মঈন খান প্রশ্ন রেখে বলেন, ‘আপনারা কি ভোট না দিয়ে সংস্কার নিয়ে ডক্টরেট গবেষণা করবেন বছরের পর বছর ধরে, সেটা চান?’ তখন জনতা হাত তুলে ‘না না’ উচ্চারণ করেন। এ সময় মঈন খান বলেন, ‘আমরা ভোট দিতে চাই। সংস্কারের গবেষণা নিয়ে ছয় মাস, ছয় বছর কাটাতে চাই না। এটাই হচ্ছে বাংলাদেশের মানুষের কথা।’

মঈন খান আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ এই অন্তর্বর্তী সরকারকে সাদর সম্ভাষণ করে দেশে এনেছে। একটি গুরুদায়িত্ব দিয়েছে, তাদেরকে একটি ম্যান্ডেট দিয়েছে। সেই ম্যান্ডেটটি কী? স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ থেকে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশে রূপান্তর করতে হবে। এই ম্যান্ডেট বাংলাদেশের মানুষ অন্তর্বর্তী সরকারকে দিয়েছে। আমরা অনুরোধ করব, এই অন্তর্বর্তী সরকার যেন তাদের সে গুরুদায়িত্বের প্রতি সজাগ হয়ে জনগণের যে প্রত্যাশা, তা অবিলম্বে পূরণ করে একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করে বাংলাদেশে পুনরায় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনবে।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশে আর কোনো দিন নিশিরাতের ভোট হবে না: জহির উদ্দিন স্বপন৩ ঘণ্টা আগে

টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীনের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন (টুকু), শিশুবিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক কাজী সাইয়েদুল আলম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ, সহসাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক সাঈদ সোহরাব, নির্বাহী কমিটির সদস্য এস এম ওবায়দুল হক। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ ইকবাল।

বেলা সাড়ে তিনটায় সমাবেশে শুরু হলেও দুপুরের আগে থেকেই বিএনপিসহ এর বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে সমাবেশস্থলে আসতে শুরু করেন। দুপুরের মধ্যে সমাবেশস্থল পূর্ণ হয়ে যায়। সেখানে জাতীয়তাবাদী সামাজিক, সাংস্কৃতিক দলের (জাসাস) শিল্পীরা সংগীত পরিবেশন করেন।

আরও পড়ুনসংস্কারের নামে আর অযথা সময়ক্ষেপণ চায় না বিএনপি: এমরান সালেহ প্রিন্স১ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গণতন ত র ব এনপ র মঈন খ ন আবদ ল

এছাড়াও পড়ুন:

সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান

সংবাদপত্রের কালো দিবস ছিল আজ। সোমবার এ উপলক্ষে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক বাণীতে বলেছেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বহুদলীয় গণতন্ত্রের মৌলিক উপাদান। গণতন্ত্রের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্ব দিতে হলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার মধ্যরাতে পাঠানো এক বাণীতে তিনি বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৬ জুন বাংলাদেশের ইতিহাসে এক কালো দিবস। এদিন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠী সব দল বাতিল করে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। তাদের অনুগত চারটি সংবাদপত্র রেখে জাতিকে নির্বাক করে দিয়েছিল। বিভিন্ন সংবাদপত্রে কর্মরত অসংখ্য সংবাদকর্মী বেকার হয়ে পড়েন। তাদের রুজি-রোজগার ও সন্তানদের ভবিষ্যৎ নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দেওয়া হয়।’

তিনি বলেন, ‘একাত্তরের যুদ্ধের মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশের ভৌগোলিক স্বাধীনতা অর্জন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতন্ত্রে মানুষের নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত হয় এবং এর মূল শর্ত হলো বাক, চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় ভিন্নমত প্রকাশের সুযোগ থাকায় রাষ্ট্র ও সমাজ জবাবদিহির আওতায় আসে এবং দেশের সরকার গঠনে নাগরিকের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে।’

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা যুদ্ধের মূল চেতনার সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে বহুদলীয় গণতন্ত্রের পথচলাকে স্তব্ধ করে দিয়ে একদলীয় বাকশাল কায়েম করে। পরে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এ দেশের কাঙ্ক্ষিত বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রবর্তন করেন। বাকশাল সরকারের সব ধরনের অগণতান্ত্রিক কালাকানুন বাতিল করে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেন।’

তারেক রহমান উল্লেখ করেন, ‘সংবাদপত্রের স্বাধীনতা হরণ মূলত চিন্তা ও বিবেককে বন্দি রাখা। শেখ মুজিবুর রহমানের মতো তার মেয়ে শেখ হাসিনাও একই পথ ধরে তাদের প্রকৃত দর্শন একদলীয় ব্যবস্থার পুনঃপ্রবর্তন করেছিল নতুন আঙ্গিকে। নানা কালাকানুন প্রণয়ন করে সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের ওপর অব্যাহত জুলুম চালিয়েছে তারা।’

সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদের সই করা বাণীতে বলা হয়, বাংলাদেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছিল। সত্য উচ্চারণ করলেই নেমে আসত নির্যাতনের খড়্গ। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কর্মীসহ সব পর্যায়ের মানুষকে সার্বক্ষণিক শঙ্কিত থাকতে হয়েছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও সাইবার সিকিউরিটি অ্যাক্টের মতো একের পর এক ড্রাকোনিয়ান (কঠোর) আইন প্রণয়ন করে সংবাদপত্র ও মত প্রকাশের স্বাধীনতাকে ভয়াল দুর্গে বন্দি করা হয়েছিল। বিগত ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর গণমাধ্যম কিছুটা স্বাধীনতা ভোগ করলেও এখনও ফ্যাসিবাদী শক্তির হাত থেকে পুরোপুরি মুক্ত নয়।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য তিন ধরনের সংস্কারের কথা বললেন বদিউল আলম মজুমদার
  • সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে: তারেক রহমান
  • দেশবাসী দ্রুত নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রে উত্তরণ চায়: আমীর খসরু
  • রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে জনগণের হিস্যা কোথায়
  • প্রধান উপদেষ্টা অনেক বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন: ফখরুল
  • ইউনূস-তারেকের বৈঠক দেশের মানুষের জন্য স্বস্তির বার্তা, আশার আলো