এম এ এইচ মাহবুব আলম। ২০০৮ সালেও গ্রামের একটি ফার্মেসিতে ওষুধ বিক্রি করতেন। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পরও তার নাম তেমন শোনা যায়নি। আলোচনায় আসেন ২০১১ সালে। ওই বছর ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে অ্যাড. লুৎফুল হাই সাচ্চুর আকস্মিক মৃত্যুতে উপ-নির্বাচনে জয় পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। সদর উপজেলার চিনাইর গ্রামে নিজ এমপির বাড়ি হওয়া যেন ‘সাপে বর’ হয়ে ধরা দেয় মাহবুবের। এরপর আর পেছনে ফিরতে হয়নি। সর্বশেষ ছিলেন সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী মোকতাদির চৌধুরীর ব্যক্তিগত সহকারী। 

ওষুধ বিক্রেতা থেকে মাহবুব আলম বনে যান শত কোটি টাকার মালিক। নিজ গ্রামে রয়েছে চার তলা ডুপ্লেক্স বাড়ি, জেলা শহরের হালদার পাড়ায় দুটি ফ্ল্যাট, ঢাকা ও কুমিল্লায় আছে বাড়ি। এ ছাড়াও, ক্ষমতার অপব্যবহার করে বাগিয়ে নিয়েছেন জেলা আ.

লীগসহ বিভিন্ন দপ্তরের প্রায় ১৪টি সব বড় পদ-পদবি।

গত বছর ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আ.লীগ সরকারের পতনের পর স্থানীয় বেশিরভাগ নেতাকর্মী মাহবুব আলমের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছেন। তাদের ভাষ্য, জেলা কমিটিগুলোতে মাহবুব আলমের দৌরাত্ম্যে কোণঠাসা ছিলেন তারা। মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হওয়ার কারণে ভয়ে কিছু বলতেও পারেননি।

আরো পড়ুন:

সিংড়ায় আ.লীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ২

আ.লীগের শাসনামলে দেশে কোনো নির্বাচনই হয়নি: দুলু

চিনাইর গ্রামের বৃদ্ধ লুৎফুর রহমান বলেন, ‘‘মাহবুব আলম চিনাইর বাজারে তার বাবার ফার্মেসিতে ২০১০ সালের আগে বসতেন। মোকতাদির চৌধুরী এমপি হওয়ার পর আর ফার্মেসিতে বসেননি।’’

জেলা সৈনিক লীগের আহ্বায়ক ও সাবেক যুবলীগ নেতা জেপি জুম্মান মাহবুবকে ‘বাটপার’ আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে লেখেন, মাহবুবের মত বাটপারদের রবিউল ভাই (সাবেক মন্ত্রী) শত শত কোটি টাকার মালিক বানিয়েছেন।

সাবেক জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও আওয়ামী আইনজীবী প্যানেলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদুল কবীর তপন বলেন, 
‘‘সাবেক গণপূর্তমন্ত্রী তার অনুসারীদের ছাড়া অন্যদের ভিড়তে দিতেন না। আর তার ব্যক্তিগত সহকারী মাহবুব আলমকে দিয়ে জেলার পদ-পদবিসহ সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করতেন। এসব নিয়ন্ত্রণ করার কারণই ছিল আর্থিক লেনদেন করা। মন্ত্রী ও মাহবুব তাদের লোকদের ছাড়া বাকিদের রাজনীতিতে ‘একঘরে’ করে রাখতেন।’’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে মাহবুব আলম জেলার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করতেন। তার পরামর্শ ছাড়া সদর-বিজয়নগরের নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) এডিবি তালিকার যত উন্নয়নমূলক কাজ হত, সবকিছুর তালিকা মাহবুব করে দিতেন। 

মাহবুব আলমের পদ-পদবি: ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা শিক্ষা কমিটির সদস্য, সদর উপজেলা আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক, পরিচালক বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইনস্যুরেন্স লি., সভাপতি সদর বিআরডিবির, সাবেক গণপূর্ত মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী ও মন্ত্রীর অবর্তমানে লিখিত আকারে দেওয়া মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন, কেন্দ্রীয় সমবায় ব্যাংক লিমিটেড ব্রাহ্মণবাড়িয়ার চেয়ারম্যান, পৌর ডিগ্রী কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা কমিটির সভাপতি, চিনাইর কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য, রেড ক্রিসেন্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদস্য, চিনাইর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, চট্টগ্রাম বিভাগের চারবারের সেরা বিদ্যোৎসাহী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা যুবলীগের সদস্য, চিনাইর আঞ্জুমানারা হাই স্কুলের সদস্য।

ঢাকা/এনএইচ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আওয় ম ল গ ব র হ মণব ড় য় মন ত র র র সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

তিন সাংবাদিকের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় ডিআরইউ’র উদ্বেগ

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সদস্য সাংবাদিক রফিকুল বাসার, মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও মিজানুর রহমানসহ কয়েকজন সংবাদকর্মীর চাকরিচ্যুতির ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ডিআরইউ।

বুধবার (৩০ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যনির্বাহী কমিটির পক্ষে সভাপতি আবু সালেহ আকন ও সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান সোহেল সংবাদকর্মীদের চাকুরিচ্যুতির ঘটনায় এ উদ্বেগ জানান।

উল্লেখ্য, চ্যানেল আই’র সাংবাদিক রফিকুল বাসার, এটিএন বাংলার মুহাম্মদ ফজলে রাব্বি ও দীপ্ত টিভির সাংবাদিক মিজানুর রহমানকে মঙ্গলবার কোনো রকম পূর্ব নোটিশ ছাড়াই চাকরিচ্যুত করে কর্তৃপক্ষ।

ডিআরইউ নেতৃবৃন্দ তিন সাংবাদিককে চাকরিচ্যুতির কারণ ব্যাখ্যা করার দাবি জানিয়েছেন।

এএএম//

সম্পর্কিত নিবন্ধ