ক্রিডেন্স ক্রিকেট জিনিয়াস: কুইজে পুরস্কার জেতার সুযোগ
Published: 20th, February 2025 GMT
আট বছর পর ফিরেছে ‘চ্যাম্পিয়নস ট্রফি’। হাইব্রিড মডেলের এই টুর্নামেন্টে পাকিস্তান ও দুবাইয়ে বসবে তারার মেলা। আজ বুধবার থেকে শুরু হওয়া টুর্নামেন্টটির নবম আসর চলবে ৯ মার্চ ২০২৫ পর্যন্ত। এবার অংশ নিচ্ছে আটটি দেশ—বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, আফগানিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা।
এ উপলক্ষে প্রথম আলো ডটকম এবং টাইম জোনের উদ্যোগে শুরু হয়েছে বিশেষ আয়োজন ‘ক্রিডেন্স ক্রিকেট জিনিয়াস’। যেখানে আটটি দেশের অসংখ্য তারকা–ক্রিকেটারের ভিড়ে উদীয়মান ও সম্ভাবনাময় পাঁচজন ক্রিকেটারের উত্থান এবং ক্রিকেটীয় জীবনের জানা-অজানা চমকপ্রদ তথ্য নিয়ে নির্মিত হবে পাঁচটি ভিডিও।
যেগুলো প্রকাশ হবে credencecricketgenius.
আয়োজনটিতে থাকবে পাঠক–দর্শকদের অংশগ্রহণের সুযোগ। প্রতিটি পর্বের ওপর থাকবে পাঁচটি করে কুইজ। credencecricketgenius.com ওয়েবসাইটে ভিডিও প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কুইজের উত্তর দিতে হবে। দ্রুততম সময়ে সঠিক উত্তরদাতাদের মধ্য থেকে স্কোরের ভিত্তিতে প্রতি পর্বে ছয়জন করে বিজয়ী নির্বাচিত করা হবে। তাঁদের মধ্যে একজন পাবেন টাইম জোনের পক্ষ থেকে ক্রিডেন্সের আকর্ষণীয় হাতঘড়ি এবং বাকি পাঁচজন পাবেন আকর্ষণীয় গিফট ভাউচার।
কুইজে অংশগ্রহণের নিয়মাবলি—
১. ১৮ বছর বা এর বেশি বয়সী বাংলাদেশি নাগরিক কুইজে অংশ নিতে পারবেন।
২. কুইজে অংশ নিতে credencecricketgenius.com ওয়েবসাইটে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে আপনার প্রোফাইল তৈরি করুন।
৩. অংশগ্রহণকারীর নাম অবশ্যই জাতীয় পরিচয়পত্র/জন্মনিবন্ধন সনদ অনুযায়ী হতে হবে। অন্যথায় বিজয়ী হলেও পুরস্কারের জন্য অযোগ্য বিবেচিত হবেন।
৪. কুইজের উত্তর দিতে হবে প্রতিটি পর্ব প্রকাশের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।
৫. একটি প্রোফাইল দিয়ে প্রতিদিন একবারই কুইজে অংশ নেওয়া যাবে এবং একজন প্রতিযোগী পুরো আয়োজনে একবারই বিজয়ী হতে পারবেন।
৬. কুইজের উত্তর দেওয়ার সময় অন্য ট্যাবে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লগ–আউট হয়ে যাবে, এবং পরবর্তী সময়ে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করা যাবে না।
৭. চ্যাম্পিয়নস ট্রফি–২০২৫ চলাকালীন অনুষ্ঠিত হবে এ কুইজ প্রতিযোগিতা।
৮. প্রতিযোগিতা–সংক্রান্ত সব বিষয়ে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত।
উল্লেখ্য, যে পাঁচ ক্রিকেটারের ওপর ভিডিও নির্মিত হবে, তাঁরা হলেন ভারতের শুভমান গিল, নিউজিল্যান্ডের রাচিন রবীন্দ্র, আফগানিস্তানের নাভিন-উল-হক, ইংল্যান্ডের হ্যারি ব্রুক এবং বাংলাদেশের নাহিদ রানা। পর্বগুলো গ্রন্থনা করছেন আরমান বিন কামাল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন
মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।
‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা
শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।
শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫ঐতিহাসিক পটভূমি
মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।
গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা
মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।
আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’
সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট
আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪