ঘন কুয়াশায় তিন ঘণ্টা বন্ধের পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি চলাচল শুরু
Published: 21st, February 2025 GMT
ঘন কুয়াশায় আবারও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ও মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া নৌপথে গতকাল বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ হয়েছে। তিন ঘণ্টা পর আজ শুক্রবার সকাল ছয়টার পর এ রুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে। এর আগে পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দুটি রো রো (বড়) ফেরি মাঝনদীতে আটকা পড়ে। দুর্ভোগের শিকার হন কয়েক শ যাত্রীসহ যানবাহন চালক।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় জানায়, কয়েক দিন বিরতির পর গতকাল মধ্যরাত থেকে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। রাত বাড়ার সঙ্গে কুয়াশার ঘনত্বও বাড়তে থাকলে ফেরি চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। রাত আড়াইটার পর পাটুরিয়া ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া দৌলতদিয়া ঘাটগামী এনায়েতপুরী ও খান জাহান আলী নামের দুটি রো রো (বড়) ফেরি মাঝনদীতে আটকা পড়ে। কুয়াশায় ফেরি আটকে থাকার খবর পাওয়ার পর ঘাট থেকে আর কোনো ফেরি ছাড়েনি।
এ সময় পাটুরিয়া ঘাট এলাকায় হাসনা হেনা, ভাইগার, কেরামত আলী নামের তিনটি ফেরি নোঙর করে থাকে। একইভাবে দৌলতদিয়া প্রান্তে ভাষাশহীদ ডা.
মাঝনদীতে আটকে থাকা দুটি বড় ফেরির যাত্রীসহ চালকেরা এবং পাটুরিয়া ও দৌলতদিয়া ঘাটে আটকে থাকা ফেরির যাত্রীসহ নদী পাড়ি দিতে আসা দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসের যাত্রীসহ পরিবহনচালকেরা কুয়াশা ও শীতে বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েন।
দৌলতদিয়া ঘাট এলাকার দায়িত্বরত একটি পরিবহনের তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, বেশ কয়েক দিন বিরতির পর গতকাল মধ্যরাত থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে থাকে। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা যানবাহনের যাত্রীসহ পরিবহনচালক ও সহকারীরা বাড়তি ভোগান্তিতে পড়েন।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) আবদুস সালাম জানান, আকস্মিক ঘন কুয়াশায় দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই নৌপথে তিন ঘণ্টার মতো ফেরিসহ নৌযান চলাচল বন্ধ ছিল। এতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় নদী পাড়ি দিতে আসা বিভিন্ন যানবাহনের যাত্রীসহ চালকদের। আজ সকাল ছয়টার পর থেকে কুয়াশা অনেকটা কমে গেলে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র য ত র সহ ঘন ক য় শ দ লতদ য়
এছাড়াও পড়ুন:
দৌলতদিয়ায় ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে পন্টুনের কবজা, যানবাহন পারাপার ব্যাহত
তীব্র স্রোতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেরির ধাক্কায় ভেঙে গেছে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দের দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ৩ নম্বর পন্টুনের কবজা। ফলে বন্ধ হয়ে গেছে ঘাটটি। গতকাল সোমবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বর্তমানে দৌলতদিয়ায় শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু আছে। এতে যানবাহন পারাপারে মারাত্মক বিঘ্ন ঘটছে এবং সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয় ও ঘাট-সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গতকাল বিকেল থেকে দৌলতদিয়া প্রান্তে পদ্মায় তীব্র স্রোত দেখা দেয়। সন্ধ্যার পর এর তীব্রতা আরও বাড়ে। রাত ১১টার দিকে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া থেকে ছেড়ে আসা রো রো ফেরি শাহ পরান দৌলতদিয়ায় পৌঁছে নিয়ন্ত্রণে রাখতে না পারায় ফেরিটি প্রচণ্ড বেগে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুনে ধাক্কা দিলে কবজা ভেঙে যায়। এর পর থেকে ঘাটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়।
এর আগে ২৩ আগস্ট থেকে তীব্র স্রোতের কারণে দৌলতদিয়ার ৭ নম্বর ঘাটও বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে চারটি ঘাটের মধ্যে কেবল ৪ নম্বর ঘাট সচল রয়েছে। সেখানে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যাত্রীবাহী পরিবহন এবং জরুরি কিছু পণ্যবাহী গাড়ি পার করা হচ্ছে। তবে সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ রাখা হয়েছে।
দৌলতদিয়া জিরো পয়েন্টে (৩ নম্বর ঘাট) দায়িত্বরত বিআইডব্লিউটিসির নিরাপত্তা পরিদর্শক ইদ্রিস আলী ভূঁইয়া বলেন, গতকাল রাতে ফেরি শাহ পরান ঘাটে ভেড়ার সময় প্রচণ্ড ধাক্কায় পন্টুনের কবজা ভেঙে যায়। তখন থেকে ঘাটটি বন্ধ রাখা হয়।
এদিকে সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসের প্রতিবাদে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় কয়েক দিন ধরে সড়ক অবরোধ করা হচ্ছে। এতে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা থেকে অনেক গাড়ি দৌলতদিয়া ঘাট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এ কারণেও দৌলতদিয়া ঘাট এলাকায় গাড়ির চাপ পড়ছে। আজ মঙ্গলবার সকালে দৌলতদিয়া প্রান্তে প্রায় দুই কিলোমিটার লম্বা গাড়ির লাইন তৈরি হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গাড়ির লাইন আরও লম্বা হচ্ছে। দীর্ঘ সময় আটকে থাকায় চালকসহ যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
সৌহার্দ্য পরিবহনের ঘাট তত্ত্বাবধায়ক মনির হোসেন বলেন, ‘শুধু একটি ঘাট চালু থাকায় যানবাহন স্বাভাবিকভাবে পার হতে পারছে না। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী গাড়ি আটকে দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। আমাদের চারটি যাত্রীবাহী বাস চার ঘণ্টার বেশি সময় ধরে আটকে আছে। বাসগুলো ফেরিতে উঠতে চার থেকে পাঁচ ঘণ্টার মতো সময় লাগছে।’
বিআইডব্লিউটিসির দৌলতদিয়া কার্যালয়ের সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মোহাম্মদ সালাউদ্দিন বলেন, তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি পারাপারে অনেক বেশি সময় লাগছে। গতকাল রাত পৌনে ১২টার দিকে ৩ নম্বর ঘাটের পন্টুন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এখন শুধু ৪ নম্বর ঘাট চালু রয়েছে। যাত্রীবাহী বাস ও কিছু জরুরি গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পার করা হচ্ছে। সাধারণ পণ্যবাহী গাড়ি আপাতত পার করা যাচ্ছে না।