Risingbd:
2025-08-01@04:45:38 GMT

সব পথ এসে মিশে গেছে শহীদ মিনারে

Published: 21st, February 2025 GMT

সব পথ এসে মিশে গেছে শহীদ মিনারে

আজ অমর একুশে ফেব্রুয়ারি মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস। বাঙালির আত্মপরিচয় গড়ার দিন। মাতৃভাষার জন্য জীবন দেওয়ার বিরল কৃতিত্ব গড়ার ৭৩ বছর পূর্ণ হলো আজ। 

১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে তৎকালীন পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর পেটোয়া বাহিনী। শহীদ হন সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিউর প্রমুখ। এর পর থেকেই ২১ ফেব্রুয়ারি পালন করা হয় শহীদ দিবস। পরে ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পায়। এখন বাংলাদেশসহ ১৯৪টি দেশে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করা হচ্ছে।

ভাষা আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের মধ্যে দিয়ে আসে বাংলাদেশের কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা। 
একুশে ফেব্রুয়ারির প্রথম প্রহরে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি মো.

সাহাবুদ্দিন ও প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এর পর উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যগণ, দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, তিন বাহিনীর প্রধান, কূটনীতিকগণ শহীদ মিনারের মূল বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।

এরপর শহীদ মিনার উন্মুক্ত করে দেওয়া হয় সর্বস্তরের মানুষের শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য। রাজনৈতিক দল, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানো শুরু হয়। 

শুক্রবার ভোর থেকে শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা জানাতে মানুষের ঢল নামে। শ্রদ্ধা নিবেদন করতে আসা মানুষের সারি শহীদ বেদি থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার পর্যন্ত দীর্ঘ হয়। আজ ফাগুন হাওয়া ও তপ্ত রোদে নগরীর সব পথ যেন মিশে গেছে শহীদ মিনারে।

সবাই ফুল নিয়ে আসেন শ্রদ্ধা জানাতে। কেউ নিয়ে এসেছেন ফুলের ডালা, কেউবা এনেছেন একগুচ্ছ কিংবা একটি ফুল। ব্যানার, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ডে ছেয়ে গেছে পুরো শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ।

বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহীদ মিনারে মানুষের ভিড় বাড়ছেই। কারও হাতে হয়ত কিছুই নেই, তবু খালি পায়ে শহীদ মিনারে গিয়ে অনুভব করার চেষ্টা করছেন ভাষাসংগ্রামীদের সে রক্তাক্ত ইতিহাসকে। 

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মাইকে অনবরত বেজেই চলেছে  কালজয়ী গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি/ আমি কি ভুলিতে পারি’। শ্রদ্ধা জানাতে আসা সবার মনে এ গানের সুরের অনুরণন তৈরি হচ্ছিল। বেলা গড়ানোর পরও মানুষের স্রোত একটু কমেনি, বিকেল পর্যন্ত এ জনসমাগম থাকবে। তারপর শহীদ মিনারের অনতিদূরে চলা অমর একুশে গ্রন্থমেলায় শ্রদ্ধা জানাতে আসা জনতার ঢেউ ধাবিত হবে। আজ পুরো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকাই থাকবে জনতার পদভারে মুখরিত।

বিপুল এ জনস্রোতে যেন নিরাপত্তা নিয়ে কোনো শঙ্কা না তৈরি হয়, সেজন্য কঠোর নজরদারি বজায় রেখেছে পুলিশ, র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।  

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ