হৃদয় বাংলাদেশের অমূল্য সম্পদ, বললেন রমিজ রাজা
Published: 21st, February 2025 GMT
৩৫ রানে নেই ৫ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে এমন পরিস্থিতিতে কত দূরই বা আর যেতে পারবে বাংলাদেশ! অনেকে হয়তো বিরক্ত হয়ে টেলিভিশন বন্ধ করে উঠেও পড়েছিলেন। কিন্তু দুই তরুণ তাওহিদ হৃদয় এবং জাকের আলী ভেবেছেন অন্য ভাবে।
কঠিন পরিস্থিতিতে ঘুরে দাঁড়িয়ে গড়লেন ২০৬ বলে ১৫৪ রানের জুটি। যে জুটি বাংলাদেশকে গড়ে দেয় ২২৮ রানের ভিত। ইনিংসের শেষ ওভারে আউট হওয়ার আগে হৃদয় খেলেন ১১৮ বলে ১০০ রানের ইনিংস। আর জাকের খেলেছেন ১১৪ বলে ৬৮ রানের ইনিংস। দুজনের জুটিটি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ষষ্ঠ উইকেটে এবং ভারতের বিপক্ষে বাংলাদেশের যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ।
হৃদয়-জাকের জুটির অবদানে বাংলাদেশ জিততে না পারলেও ম্যাচ শেষে প্রশংসিত হয়েছেন দুজন। বিশেষ করে শেষ দিকে ক্র্যাম্প (মাংসপেশির টান) নিয়েও হৃদয়ের ব্যাটিং অনেককে আকৃষ্ট করেছেন। যার মধ্যে আছেন পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার ও ধারাভাষ্যকার রমিজ রাজাও। গতকাল রাতে ম্যাচ শেষে নিজের ইউটিউব চ্যানেল ‘রমিজ স্পিকস’-এ পাকিস্তানের সাবেক এ ওপেনার বলেছেন, হৃদয় বাংলাদেশের জন্য অমূল্য এক সম্পদ।
আরও পড়ুনরোহিতেরও হৃদয় জয় করেছেন তাওহিদ হৃদয় ১৪ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশকে বিপর্যয় থেকে উদ্ধার করা হৃদয়কে নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় উল্লেখ করে রমিজ বলেছেন, ‘বাংলাদেশ যে অবস্থায় ছিল, মনে হচ্ছিল এক শ রানও হয়তো করতে পারবে না। কিন্তু সেখান থেকে ইনিংসকে টেনে নেওয়াটা (দারুণ ছিল)। জাকেরের পারফরম্যান্সও অসাধারণ ছিল। দারুণ একটি জুটি গড়েছে তাঁরা। তবে ভারতের মতো শক্তিশালী বোলিং লাইনআপের বিরুদ্ধে এমন পরিস্থিতিতে দলকে উদ্ধার করা এবং তারপর সেঞ্চুরি করা অনেক দুর্দান্ত ব্যাপার। হৃদয় অনেক নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড়। সে যদি নিজেকে সময় দেয় তবে ধারাবাহিকভাবে এমন বড় ইনিংস খেলতে পারবে। হৃদয়ের মাঝে দারুণ সম্ভাবনা আছে।’
১১৮ বলে ১০০ রান করেছেন তাওহিদ হৃদয়.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?