আমরা তরুণদের হাতে বাংলাদেশ তুলে দিতে চাই: জামায়াত আমির
Published: 22nd, February 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘‘আল্লাহ তুমি সাক্ষী থাকো, আমরা তোমার কোরআনের ভিত্তিতে একটা ইনসাফের মানবিক বাংলাদেশ চাই। যেখানে সবাই সবাইকে সম্মান করবে, ভালোবাসবে। তুমি আমাদের সেই বাংলাদেশ দান করো।’’
তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘‘হে তরুণেরা তোমরা জেগে ওঠো। যে সমাজে তরুণরা জেগে ওঠে, সেই সমাজ আল্লাহ বদলায়ে দেন।’’
২৪ এর আন্দোলনকারীদের ‘স্যালুট’ জানিয় জামায়াতের আমির বলেন, ‘‘তোমরা জীবন বাজি রেখে লড়াইয়ের কারণে আল্লাহ আমাদের আপাতত মুক্ত করেছেন। এবার চিরমুক্তির জন্য জেগে ওঠো। শপথ নাও, বাংলাদেশকে কোরআনের আলোকে গড়বই ইনশাআল্লাহ। চুল পাকা, দাঁড়ি পাকা আমিও তোমাদের সঙ্গে সামনের কাতারে থাকব।’’
তিনি বলেন, ‘‘তরুণেরা আমাদের স্বপ্ন। আমরা আগামীর বাংলাদেশ তরুণদের হাতে তুলে দিতে চাই।’’
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে লক্ষ্মীপুর আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জেলা জামায়াতের উদ্যোগে আয়োজিত গণজমায়েতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডা.
জামায়াত আমির বলেন, ‘‘অতীতে সোনার বাংলা কায়েম করতে গিয়ে শ্মশান বাংলা কায়েম করা হয়েছে। কোরআনই একমাত্র সোনার বাংলার গ্যারান্টি দিতে পারে, আর কিছু দিতে পারবে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘যারা কোরআন সহ্য করতে পারেন না, তাদের বিনয়ের সঙ্গে বলতে চাই। এই দেশের আপামর জনতা বাঁচতে চায় কোরআন বুকে নিয়ে, মরতে চায় কোরান বুকে নিয়ে; আল্লাহর সামনে দাঁড়াতে চায় কোরআন বুকে নিয়ে। আমাদের কোরআন থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না।’’
তিনি বলেন, ‘‘দেশে যতগুলো ইসলামী দল আছে, তাকিয়ে দেখুন- ৫ আগস্টের পর থেকে এখন পর্যন্ত কোথাও কোনো নেতাকর্মী কারো ওপর জুলুম, চাঁদাবাজি, দখলবাজি করেছে? উত্তরা না। এর কারণ তারা কোরআনকে সম্মান করে এবং বুকে ধারণ করে। তারা আল্লাহকে ভয় করেন। যাদের অন্তরে আল্লাহর ভয় আছে, তারা জুলুম করতে পারে না। তারা মানুষকে সৃষ্টির সেরা জীব হিসেবে দেখে।’’
জেলা জামায়াতের আমির মাস্টার রুহুল আমিন ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে ও মো. ফারুক হোসাইন নুর নবীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মাসুম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য কাজী দ্বীন মোহাম্মদ, শাহজাহান চৌধুরী, ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট আতিকুর রহমান প্রমুখ।
দীর্ঘ ২৮ বছর পরে লক্ষ্মীপুরে খোলা ময়দানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে গণজমায়েত অনুষ্ঠিত হলো। এর আগে, ১৯৯৬ সালে লক্ষ্মীপুরে খোলা ময়দানে জামায়াতের সমাবেশ হয়।
ঢাকা/লিটন/রাজীব
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আল ল হ আম দ র ক রআন
এছাড়াও পড়ুন:
নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা
নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।
মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।
এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।
প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি। কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।
মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।
নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।