ভাষা আসলে মুক্তি। আর মুক্তির কোনো বাঁধাধরা নিয়ম হয় না। নিজের ভাষায় নিজের আর্তনাদের কথা, মুক্তির কথা আমরা বারবার বলতে চাই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদ্‌যাপন উপলক্ষে শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন।

সব জাতিসত্তার মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষালাভের অধিকারসহ সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবিতে ‘বহু ভাষার লহরী’ নামে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বেশ কটি জাতিসত্তার সংগঠন যৌথভাবে অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে।

অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞানের অধ্যাপক মানস চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জন্য ইংরেজি তো বটেই, বাংলাও একটা ঔপনিবেশিক ভাষা। তিনি আরও বলেন, ‘ভাষাচর্চা সেই লোকটার জন্য সহজ নয়, যিনি নিজেই জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় আছেন। অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর জন্য আমরা একটা আরামদায়ক, নিষ্পত্তিমূলক এবং সহযোগিতাপূর্ণ সমাজ যাতে গড়ে তুলতে পারি, সেই আশা রাখি।’

সভায় সমতল জাতিসত্তার প্রতিনিধি সোমা ডুমরি বলেন, ‘ভাষা আমার কাছে আসলে মুক্তি। মুক্তির কোনো বাঁধাধরা নিয়ম হয় না। নিজের ভাষায় নিজের আর্তনাদের কথা, নিজের মুক্তির কথা আমরা বারবার বলতে চাই। কিন্তু প্রত্যেকটা নিপীড়িত জনগোষ্ঠীর মতোই আমরা আমাদের আর্তনাদটা প্রকাশ করতে পারি না। যখন আমাদের আর্তনাদ প্রকাশ করতে চাই, বরাবরই আমাদের কিছু কটূক্তির মধ্যে পড়তে হয়।’

চা–বাগানের জাতিসত্তাগুলোর প্রতিনিধি মিখা পিরেগু বলেন, ‘আমরা নতুন রাষ্ট্রে শুনছি যে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক নতুন বন্দোবস্ত নাকি হবে। আমি প্রশ্ন রাখতে চাই, চা–শ্রমিকেরা সেখানে থাকবেন কি না, অন্যান্য জাতিসত্তার মানুষ সেখানে থাকবেন কি না। নাকি শুধু বাঙালিদের নিয়েই সেই নতুন বন্দোবস্ত হবে, তা আমরা জানতে চাই।’

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন অঙ্কন চাকমা। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সাঁওতাল লিপিতে কি–বোর্ড নির্মাতা সমর সরণ, চাকমা ভাষার গবেষক পুলক জীবন খীসা।

পরে রাতে বিভিন্ন জাতিসত্তার গানের দল এবং নৃত্যের দলের নিজেদের সাংস্কৃতিক পরিবেশনা ছিল। এর মধ্যে রয়েছে রে রে (গারো ব্যান্ড), হুল (সাঁওতাল ব্যান্ড), সংজোগার (পাহাড়ি জাতিসত্তাসমূহ—ত্রিপুরা, মারমা, বম খিয়াং সদস্যদের ব্যান্ড), তাগোল (চাকমা ব্যান্ড), মুন্ডা গানের দল। এ ছাড়া মাহালি ভাষার একক সংগীত ও মণিপুরি নৃত্যও পরিবেশন করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন

এছাড়াও পড়ুন:

জাতীয় যুবশক্তি'র নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত

জাতীয় যুবশক্তি'র নারায়ণগঞ্জ জেলা সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (১৬ জুন) বিকেলে মাসদাইর অক্টো অফিস এলাকায় পৌর স্টেডিয়াম মিলনায়তন কক্ষে এ সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক নিরব রায়হানের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি'র কেন্দ্রীয় যুগ্ম সদস্য সচিব ও শৃঙ্খলা উপকমিটির প্রধান আব্দুল্লাহ আল আমিন। 


তিনি তার বলেন, 'জাতীয় যুবশক্তি জাতীয় নাগরিক পার্টির সবচেয়ে বড় শক্তি। জাতীয় যুবশক্তির হাত ধরেই নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের পথে আমরা বাংলাদেশে সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখবো। এবং আমরা সংগঠনের একে অন্যের সহযোগিতায় দুর্বার এগিয়ে আসবো।

রাজনীতির মাঠে আমাদের কোনো সহযোদ্ধাকে যদি কেউ প্রতিহত করতে চায়, আমরা সবাই মিলে কঠিন প্রতিরোধ গড়ে তুলবো। 

যেন দ্বিতীয়বার এমন দুঃসাহস কেউ না দেখাতে পারে' উক্ত সমন্বয় সভায় আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহবায়ক তুহিন মাহমুদ, সিনিয়র সংগঠক ইয়াছিন আরাফাত এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির কেন্দ্রীয় সংগঠক শওকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আহমেদুর রহমান তনু। 

একইসাথে জাতীয় যুবশক্তি এগিয়ে যেতে পরামর্শ গ্রহণ করা হয় নারায়ণগঞ্জ জেলার এনসিপির সকল উপজেলার সমন্বয়কারীদের ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের স্থানীয় নেতৃবৃন্দের। 

শুভেচ্ছা বক্তব্য রেখেছেন জাতী যুবশক্তির কেন্দ্রীয় সংগঠক সাইফুল ইসলাম রোমান। তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি বলেন, এই সমন্বয় সভা আমাদের জাতীয় যুবশক্তিকে নারায়ণগঞ্জে দ্রুত সময়ের মধ্যে সংগঠিত করতে সহযোগিতা করবে। 
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ