১১ জুলাই ‘বিশ্ব জনসংখ্যা দিবস’। প্রতিবছর এই দিনে জনসংখ্যাবিষয়ক কোনো একটি কেন্দ্রীয় প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বৈশ্বিক ও জাতীয় পর্যায়ে জনসচেতনতা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়। তবে এ আলোচনায় আমরা অনেক সময় সংখ্যার ঊর্ধ্বগতির বিশ্লেষণে আটকে যাই। হারিয়ে যায় জনসংখ্যার মধ্যে থাকা বৈচিত্র্য ও সেই বৈচিত্র্যের অভ্যন্তরে বিরাজমান বৈষম্যের বাস্তবতা। জনসংখ্যার নির্দিষ্ট উপগোষ্ঠীগুলো ঠিক কতটা পিছিয়ে পড়েছে, কেন পড়েছে এবং এ বৈষম্য কীভাবে জনসংখ্যাভিত্তিক উন্নয়ন কৌশলকে বাধাগ্রস্ত করছে—এ বিষয়েও সম্যক ধারণা ও আলোচনা হওয়া উচিত।
বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৭ কোটি ৪০ লাখ। কিন্তু এ সংখ্যার ভেতর লুকিয়ে আছে অসংখ্য পরিচয়—গ্রামীণ-নগর, নারী-পুরুষ-বাইরের লিঙ্গ পরিচয়, সংখ্যাগরিষ্ঠ-সংখ্যালঘু ধর্ম ও জাতিগোষ্ঠী, সক্ষম-প্রতিবন্ধী, দারিদ্র্যসীমার ওপরে ও নিচে থাকা মানুষ, বিভিন্ন ভাষার জনগোষ্ঠী ইত্যাদি। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান বিভাগ বলছে, ‘জনসংখ্যা কেবল জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার নয়, বরং কে কোথায় জন্মাচ্ছে, কেমন করে বেড়ে উঠছে, কোন সেবা পাচ্ছে আর কে পাচ্ছে না—এসবের সমষ্টি।’
বাংলাদেশে বৈষম্য কেবল অর্থনৈতিক নয়; বরং জনসংখ্যার ভেতরকার পরিচয়, অবস্থান ও ক্ষমতাকাঠামোর মধ্যেও দৃশ্যমান। রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি পর্যায়ের নীতিমালা ও পরিষেবার কেন্দ্রে এখনো ‘গড়পড়তা মানুষের’, যে সাধারণত নগরবাসী, সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মের, পুরুষ, ক্ষমতাহীন ও বাংলাভাষী— তাদেরই এ চিত্রে ধরে নেওয়া হয়। অথচ বাস্তবতা আরও জটিল। বাংলাদেশের বিভিন্ন বিভাগ ও জেলার মধ্যে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে।
বাংলাদেশ ডেমোগ্রাফিক অ্যান্ড হেলথ সার্ভে ২০২২ অনুযায়ী, ঢাকা বিভাগে প্রসবকালীন স্বাস্থ্যসেবা ৮১ দশমিক ৫%, অথচ রংপুরে ৪৫ ও ময়মনসিংহে মাত্র ৪২%। পরিবার পরিকল্পনাপদ্ধতি ব্যবহারের হার খুলনা ও বরিশালে বেশি হলেও সিলেট ও চট্টগ্রামে তা কম, যা ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের দিক থেকেও ব্যাখ্যা করা হয়। ইউনিসেফ ও বিবিএসের এক যৌথ জরিপ অনুযায়ী, ঢাকা শহরে শিশুমৃত্যুর হার প্রতি হাজারে ২৮ জন হলেও সুনামগঞ্জ ও কুড়িগ্রামে তা প্রায় দ্বিগুণ। উপজেলা বা ইউনিয়ন পর্যায়ে অনেক সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকলেও নেই দক্ষ জনবল, প্রয়োজনীয় ওষুধ বা সরঞ্জাম। এ কারণে ‘সার্ভিস কভারেজ’ থাকলেও ‘সার্ভিস কোয়ালিটি’ প্রায়ই নিশ্চিত হয় না।
বাংলাদেশে প্রায় ৫০টির মতো স্বীকৃত ও স্বীকৃতিবিহীন জাতিগোষ্ঠী রয়েছে। ২০১৯ সালের জাতীয় আদিবাসী কাউন্সিল অনুযায়ী, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাংলাভাষীর বাইরে প্রায় ২০ লাখ মানুষ বাস করে, যারা চাকমা, মারমা, গারো, হাজং, সাঁওতাল, খাসিয়া, মণিপুরি ইত্যাদি গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। জাতিগত গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে শিক্ষার হার ও সরকারি চাকরিতে অংশগ্রহণ আশঙ্কাজনকভাবে কম। উদাহরণস্বরূপ, পার্বত্য চট্টগ্রামে মাধ্যমিক পর্যায়ে আদিবাসী মেয়েদের স্কুল ড্রপআউটের হার ৪৫–এরও বেশি। বাংলাদেশে আদিবাসীদের জন্য সংরক্ষিত কোনো শিক্ষানীতি নেই, যা তাদের নিজস্ব ভাষায় ও সংস্কৃতিতে শিখতে সহায়তা করে। ইউনেসকোর ২০২০ সালের প্রতিবেদনে বলা হয়, মাতৃভাষাভিত্তিক শিক্ষার অভাবে শিশুদের ‘শিখতে না পারার ঝুঁকি’ ২ দশমিক ৫ গুণ বেশি। বঞ্চিত এ জনগোষ্ঠীর জন্য পার্বত্য চুক্তির বাস্তবায়ন এখনো পরিপূর্ণ নয়। জমি অধিকার, ভাষার স্বীকৃতি ও স্থানীয় নিয়োগে বৈষম্য তাদের আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাংলাদেশে ২০১৯ সালের হেইজ জরিপ অনুযায়ী, দেশে প্রায় ৭ দশমিক ৫% মানুষ কোনো না কোনো শারীরিক বা মানসিক প্রতিবন্ধকতায় ভুগছে। কিন্তু সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও সরকারি সেবায় প্রবেশাধিকারে তারা পিছিয়ে। প্রতিবন্ধী শিশুদের মধ্যে স্কুলে ভর্তির হার মাত্র ৪৫, যেখানে জাতীয় গড় ৯৬%। অনেক কমিউনিটি ক্লিনিকেই হুইলচেয়ার র্যাম্প নেই, নেই দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের জন্য ব্রেইল নির্দেশনা বা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ সংবেদনশীলতা। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ অন্যান্য সেবাপ্রতিষ্ঠানেও সেটি অনুপস্থিত। ২০২১ সালে প্রকাশিত ডিজঅ্যাবিলিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন রিসার্চ সেন্টারের একটি গবেষণায় দেখা যায়, কর্মজীবী প্রতিবন্ধীদের ৭০% বেকার এবং যাঁরা কর্মরত তাঁদের গড় আয় প্রতিবন্ধী নন, এমন ব্যক্তিদের চেয়ে প্রায় ৪০% কম।
২০১৩ সালে সরকার হিজড়া জনগোষ্ঠীকে ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও বাস্তবে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানে তাদের অন্তর্ভুক্তি এখনো অনেক দূরে। সরকারিভাবে বাংলাদেশে আনুমানিক ১২ হাজার থেকে ১৫ হাজার হিজড়া ব্যক্তি রয়েছেন, যদিও অনানুষ্ঠানিকভাবে এই সংখ্যা আরও বেশি বলে ধারণা করা হয়। বন্ধু সোসাইটির একটি গবেষণা অনুযায়ী, ৭৪% হিজড়া ব্যক্তি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও শেষ করতে পারেনি। ৯০%–এরও বেশি মানুষ এখনো অবৈধ-অনৈতিকভাবে জীবিকা নির্বাহ করে। তাদের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে জেন্ডার সংবেদনশীল সেবা এখনো সীমিত।
জনসংখ্যার একটি বড় অংশ, যারা বাস করে বস্তি, চরাঞ্চল, উপকূলীয় এলাকা বা পরিবেশগতভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চলে; যেমন চা–বাগান, বলতে গেলে তারা সরকারি পরিষেবার কাঠামোর বাইরেই থেকে যায়। ঢাকার বস্তিতে বসবাসকারীদের মধ্যে শিশুমৃত্যুর হার জাতীয় গড়ের চেয়ে দেড় গুণ বেশি। কিশোরী ও নারীরা এসব এলাকায় স্বাস্থ্যসেবা ও মাসিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় নানান বাধার মুখে পড়েন। অনেক সময় এসব জনগোষ্ঠীর কোনো সরকারি নথি পর্যন্ত থাকে না। এ কারণে তারা রেশন কার্ড, সরকারি অনুদান বা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে পারে না।
উন্নয়ন পরিকল্পনায় যখন কেবল গড় পরিসংখ্যান দেখা হয়, তখন ‘মাথাপিছু আয়’, ‘শিশুমৃত্যুর হার’, ‘স্কুলে ভর্তি’ ইত্যাদি সূচক অনেক সময় উন্নয়নের একধরনের বিভ্রম তৈরি করে। বাস্তবে গড় উন্নয়নের আড়ালে অনেকে থেকে যায় একেবারে পিছিয়ে। যেমন কোনো দেশে শিশুমৃত্যুর গড় হার কমে এলেও আদিবাসী বা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিশুদের মৃত্যুহার অপরিবর্তিত থাকলে তা প্রকৃত উন্নয়ন নয়, বরং বৈষম্যের গভীরতা আরও চেপে বসে। এ কারণেই বৈশ্বিক উন্নয়ন সংস্থা ও গবেষকেরা এখন ‘লিভ নো ওয়ান বিহাইন্ড’ ধারণার ওপর জোর দিচ্ছেন। এ ধারণা অনুসারে, উন্নয়নের সাফল্য তখনই প্রকৃত অর্থে মূল্যায়িত হবে, যখন প্রতিটি গোষ্ঠী উন্নয়নের ছায়ায় আসবে, বিশেষ করে যারা দীর্ঘদিন ধরে অবহেলিত।
এসব বৈষম্য দূর করতে আমাদের মতো দেশের জন্য কী করা প্রয়োজন? এ ব্যাপারে এখন আলোচনা করা যাক। জনসংখ্যার বৈচিত্র্য যখন প্রকৃত সত্য, তখন নীতিনির্ধারণ, গবেষণা ও সেবা প্রদানেও সেই বৈচিত্র্যের প্রতিফলন থাকা জরুরি। তবে কাজটি শুধু নীতিগত সদিচ্ছা দিয়ে সম্ভব নয়, দরকার একটি কাঠামোগত ও তথ্যভিত্তিক পদ্ধতির। আমাদের দেশে পরিসংখ্যানব্যবস্থা এখনো ‘গড়’ বা সামগ্রিক চিত্র তুলে ধরতে বেশি মনোযোগী। কিন্তু এটি বাস্তবতাকে আড়াল করে। প্রয়োজন বৈচিত্র্য ও বৈষম্যের অন্তর্নিহিত চিত্রটি স্পষ্ট করার জন্য ডিজঅ্যাগ্রিগেটেড ডেটা সংগ্রহ ও বিশ্লেষণ—যা লিঙ্গ, বয়স, ধর্ম, জাতিগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধিতা, অঞ্চল, সামাজিক শ্রেণি ইত্যাদি অনুযায়ী পৃথক তথ্য উপস্থাপন করে।
এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, স্থানীয় সরকারসহ সব বিভাগীয় স্তরে ডেটা কালেকশন টুলস ও সফটওয়্যার হালনাগাদ করতে হবে, যাতে উপাত্ত সংগ্রহের সময় জনগণের অন্তর্নিহিত পরিচয়গুলো উপেক্ষিত না হয়। এ ছাড়া প্রতিবন্ধী বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের জন্য তথ্যে আলাদা শ্রেণিবিন্যাস ও আইটেম অন্তর্ভুক্তির প্রয়োজন রয়েছে, যা বর্তমানে বেশির ভাগ জরিপেই অনুপস্থিত।
বৈচিত্র্যপূর্ণ সমাজে ‘এক মাপে সবার জন্য উপযুক্ত’ কৌশল কখনোই কার্যকর হয় না। কারণ, হিজড়া জনগোষ্ঠীর চাহিদা যেমন লিঙ্গ পরিচয়জনিত নিরাপত্তা, কর্মসংস্থান ও স্বাস্থ্যসেবায় পৃথক, তেমনি আদিবাসীদের ক্ষেত্রে তা ভাষা, সাংস্কৃতিক পার্থক্য ও ভূমি অধিকারের সঙ্গে যুক্ত। আবার প্রতিবন্ধী জনগোষ্ঠীর ক্ষেত্রে প্রাধান্য পায় সহজপ্রাপ্যতা, চলাচলযোগ্যতা ও সহায়ক প্রযুক্তি। এ বাস্তবতাকে স্বীকার করে সরকার ও উন্নয়ন অংশীদারদের উচিত অনেক ক্ষেত্রে গোষ্ঠীভিত্তিক পরিকল্পনা ও বাজেট বরাদ্দ নিশ্চিত করা। যেমন শিক্ষা ক্ষেত্রে হিজড়া বা প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য কাস্টমাইজড কারিকুলাম, ব্রেইল বা সাইন ল্যাঙ্গুয়েজভিত্তিক শিক্ষক এবং আদিবাসীদের মাতৃভাষায় পাঠ্যপুস্তক প্রয়োজন।
নৈতিক ও মানবাধিকার ছাড়াও সামাজিক অন্তর্ভুক্তি অর্থনৈতিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য অপরিহার্য। এর অর্থ, সব গোষ্ঠীর মানুষ যেন রাষ্ট্রীয় সেবা, সামাজিক সুরক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও কর্মসংস্থানে সমানভাবে প্রবেশ করতে পারে। আমাদের সামাজিক কাঠামোতে অনেক শ্রেণি–পেশাকে ‘অদৃশ্য’ বা ‘অস্বাভাবিক’ হিসেবে উপস্থাপন করা হয়, যা সামাজিক বৈষম্যের অন্যতম উৎস। একে বদলাতে হলে প্রয়োজন মানবাধিকারভিত্তিক শিক্ষা ও বৈচিত্র্যবান্ধব মূল্যবোধ গড়ে তোলা।
এ শিক্ষার শুরু হতে পারে স্কুল থেকেই। যেখানে পাঠ্যপুস্তকে প্রতিবন্ধিতা, আদিবাসী সংস্কৃতি ও ভাষার ইতিবাচক উপস্থাপন থাকতে হবে। সচেতনতা তৈরির জন্য মিডিয়া, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম, নাটক, সিনেমা ও জনপ্রিয় সংস্কৃতিকে ব্যবহার করা যেতে পারে। গণমাধ্যম ও সরকারি প্রচারে প্রতিটি জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করলে ‘অন্য রকম’ পরিচয়গুলোও সমাজের মূলধারায় স্থান পেতে পারে। এ ক্ষেত্রে বেসরকারি সংস্থা, একাডেমিক প্রতিষ্ঠান ও স্থানীয় প্রশাসন মিলিতভাবে কাজ করতে পারে, যেমন ‘গণশিক্ষা কর্মসূচি’, ‘সংস্কৃতিবান্ধব গ্রন্থাগার ও গণমাধ্যম’ চালুর মাধ্যমে।
এ বৈষম্য দূর করা কেবল উন্নয়নের প্রশ্ন নয়; এটি সম্মান, অধিকার ও ন্যায়ের প্রশ্ন। সুতরাং এখনই সময়, আমাদের উন্নয়নের চিন্তা ও কর্মকৌশলকে আরও মানবিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও তথ্যনির্ভর করে তোলার। এসব বৈষম্যের চিত্র কেবল মানবিক নয়, তা নৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংবিধানিক দায়বদ্ধতার ক্ষেত্রেও চ্যালেঞ্জ। যদি উন্নয়ন কেবল গড় সংখ্যা দেখে হয়, তাহলে ‘সবাইকে নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার’ স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে না। তাই প্রয়োজন ‘জনসংখ্যা’ শব্দটির ভেতরকার ‘মানবিক বহুত্ব’কে চিনে নীতিনির্ধারণ ও সেবাদানের ক্ষেত্রে ‘ভিন্নতা অনুসারে সমতা’ নিশ্চিত করা।
হাসিনুর রহমান খান,অধ্যাপক, ফলিত পরিসংখ্যান এবং ডেটা সায়েন্স,
পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
ই–মেইল: [email protected]
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর স খ য ন জনস খ য র জনগ ষ ঠ র অন ক সময় দ র জন য ব স তবত অন য য় পর য য় আম দ র র একট সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
এইচএসসিতে গত বছরের চেয়ে পাসের হার কমেছে ১৯ শতাংশ
২০২৫ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) সকালে দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষাকেন্দ্র বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
দেশের ৯টি সাধারণ ও কারিগরি এবং মাদ্রাসা বোর্ড মিলিয়ে ১১টি শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৫৮ দশমিক ৮৩। ২০২৪ সালে পাসের হার ছিল ৭৭ দশমিক ৭৮। সেই হিসাবে এবার পাসের হার কমেছে ১৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ।
এদিক এ বছরের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, এবার পাসের হারে সব চেয়ে এগিয়ে মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড। এ বোর্ডে পাসের হার ৭৫ দশমিক ৬১। অন্য বোর্ডগুলোর মধ্যে ঢাকা শিক্ষা রোর্ডে পাসের হার ৬৪ দশমিক ৬২, কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডে পাসের হার ৪৮ দশমিক ৮৬, রাজশাহীতে ৫৯ দশমিক ৪০, যশোর ৫০ দশমিক ২০, চট্টগ্রামে ৫২ দশমিক ৫৭, বরিশালে ৬২ দশমিক ৫৭, সিলেটে ৫১ দশমিক ৮৬, দিনাজপুরে ৫৭ দশমিক ৪৯, ময়মনসিংহে ৫১ দশমিক ৫৪ ও কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে ৬২ দশমিক ৬৭।
আরও পড়ুনএইচএসসিতে জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন৩ ঘণ্টা আগেএদিকে ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষায় এবার সারা দেশে জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে। এবার জিপিএ–৫ পেয়েছেন ৬৯ হাজার ৯৭ জন। গত বছর, অর্থাৎ ২০২৪ সালে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ১ লাখ ৪৫ হাজার ৯১১ জন। সে হিসাবে এবার জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমেছে ৭৬ হাজার ৮১৪ জন।
শিক্ষার্থীরা ফলাফল দেখবেন যেভাবে
১.
সংশ্লিষ্ট শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটের রেজাল্ট (Result) কর্নারে ক্লিক করে বোর্ড ও প্রতিষ্ঠানের EIIN–এর মাধ্যমে ফলাফল ডাউনলোড করতে পারবেন। সব শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে Result কর্নারে ক্লিক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের EIIN এন্ট্রি করে নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের রেজাল্ট শিট ডাউনলোড করতে পারবেন।
২.
পরীক্ষার্থীরা নিজ নিজ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষা বোর্ডগুলোর সমন্বিত ওয়েবসাইট ঠিকানা ও সংশ্লিষ্ট বোর্ডের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করতে পারবেন।
৩.
নির্ধারিত Short Code–16222–এ এসএমএসের মাধ্যমে ফলাফল পাবেন শিক্ষার্থীরা। পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পর এসএমএসের মাধ্যমে HSC Board Name (First 3 Letters) Roll Year টাইপ করে 16222 নম্বরে পাঠাতে হবে শিক্ষার্থীদের।
উদাহরণ: HSC Dha 123456 2024 লিখে 16222–তে পাঠাতে হবে।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষা শুরু হয় গত ২৬ জুন। লিখিত পরীক্ষা গত ১৯ আগস্ট শেষ হয়। ব্যবহারিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২১ থেকে ৩১ আগস্ট। এবার ১১টি শিক্ষা বোর্ডের অধীন ১২ লাখ ৫১ হাজার ১১১ শিক্ষার্থী পরীক্ষা দেন।