স্মার্টফোনে সময়ের যে আধিপত্য, তার পেছনে অ্যাপ হচ্ছে প্রধান সঞ্চালক। আবার অ্যাপের কারণেই অনিরাপদ ও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাচ্ছে ডিজিটাল দুনিয়া। নিরাপত্তা হারাচ্ছে ব্যক্তিজীবন ও ডিজিটাল অর্থ। অজ্ঞাতে ডাউনলোড হওয়া অ্যাপ কতটা বিপজ্জনক রূপ ধারণ করেছে, তা নিয়ে লিখেছেন সাব্বিন হাসান
হুটহাট কারণ ছাড়াই স্মার্টফোনে নিজে থেকে ডাউনলোড হচ্ছে অ্যাপ। অনেকেই এমন সমস্যার মুখোমুখি হয়েছেন। হঠাৎ করে অ্যাপ ডাউনলোড হতে শুরু করলে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। ডাউনলোড উৎসের ঠিকঠাক খোঁজ মেলে না। অজান্তে ডাউনলোডের জেরে অনেক সময়ই প্রয়োজন নেই এমন অ্যাপ স্টোরেজে জায়গা করে নেয়।
ফলে স্মার্টফোনের স্টোরেজে পড়ে বাড়তি চাপ। অন্যদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাপ ডাউনলোডের কারণে বহুমুখী সমস্যা দৃশ্যমান হয়। সুতরাং স্বয়ংক্রিয় (অটোমেটিক) অ্যাপ ডাউনলোড বন্ধ করা বিশেষ ক্ষেত্রে জরুরি। নিজের ডিভাইসে যে কোনো অ্যাপ ডাউনলোড হওয়ার অনুমতি (পারমিশন) দেওয়া নির্বুদ্ধিতার পরিচয়। এমন যেন না ঘটে, সে জন্য বেশ কিছু বিষয় জানা প্রয়োজন।
প্রদেয় শর্তসাপেক্ষ
প্রথমেই অ্যাপ ডাউনলোডে দেওয়া অনুমতি বদলে নিতে হবে। নিজের ডিভাইসের অ্যাপ সেটিংসে প্রবেশ করতে হবে। অ্যাপ বিকল্পে ট্যাপ করতে হবে। এবার যে অ্যাপ পরিবর্তন করতে চাইছেন, তাতে ট্যাপ করতে হবে। বিশেষ ক্ষেত্রে অ্যাপটি খুঁজে না পেলে সব অ্যাপ দেখে বিকল্পে ট্যাপ করতে হবে।
তার পর খোঁজ করা অ্যাপটি নির্বাচন করতে হবে। অনুমতি বিকল্প অংশে ট্যাপ করতে হবে। কোনো অ্যাপকে অনুমতি দিলে বা বাতিল করার প্রয়োজন হলে তা এখানে পাবেন। অনুমতিবিষয়ক সেটিংস বদলের প্রয়োজনে ওখানে ট্যাপ করতে হবে। তারপর অনুমতি দিতে চাইলে বা অনুমতি না দিলে বিকল্প অপশন বেছে নিতে হবে। মাইক্রোফোন, লোকেশন ও ক্যামেরাবিষয়ক অনুমতির জন্য উল্লিখিত বিষয়ের মধ্য থেকে নিজের প্রয়োজন নির্বাচন করার সুযোগ নিতে হবে। তখন অ্যাপ যে কোনো সময় প্রদেয় অনুমতি মেনেই যথাযথ কাজ করবে। এমনকি যখন অ্যাপ ব্যবহার করেন না, তখনও ওই নির্দেশ বহাল থাকবে। শুধু অ্যাপ ব্যবহার করার সময়ে অনুমতি অ্যাকশন ব্যবহার করতে হবে। প্রতিবার অ্যাপ খোলার সময় অনুমতি চাইবে। অ্যাপ বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত প্রদেয় অনুমতি নির্দেশনা মেনে চলবে।
অনুমতি পরিবর্তন
নিজের ডিভাইসে সেটিংস অ্যাপে যেতে হবে। সুরক্ষা, গোপনীয়তা ও পারমিশন ম্যানেজার বিকল্পের পর ট্যাপ করতে হবে। সেখানে কোনো অ্যাপে অনুমতি দিলে বা বাতিল করলে তা দেখতে পারবেন। অ্যাপের অনুমতি পরিবর্তনের প্রয়োজনে অনুমতি সেটিংস নির্বাচন করতে হবে। নিজে থেকে এখন আর কোনো অ্যাপ ডাউনলোড হতে পারবে না।
নিজের অ্যান্ড্রয়েড ডিভাইসে খুব জনপ্রিয় ও সুপরিচিত অ্যাপ ডাউনলোড করলেও নিরাপত্তার দিক থেকে পুরোপুরি ঝুঁকিমুক্ত থাকবেন, তা কিন্তু নয়। গবেষকরা এমন কথা জানিয়েছেন। অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যার পরিচালিত ডিভাইসে গুগলের প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা জনপ্রিয় সবকটি অ্যাপের মধ্যে কয়েক শতাংশ অ্যাপ বিশেষ ক্ষেত্রে ওয়েবসাইটের সঙ্গে যুক্ত করে, যা ব্যবহার করা হলে নিরাপত্তা ও ব্যক্তিগত গোপনীয়তায় ঝুঁকি তৈরি হয়। গুগল প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড হওয়া জনপ্রিয় কয়েক হাজার অ্যাপ নিয়ে পরিচালিত গবেষণায় এমন তথ্য জানা গেছে।
চিহ্নিত সব অ্যাপ সামাজিক যোগাযোগ, বিকিকিনি (ই-কমার্স), সংবাদ ও বিনোদনের সঙ্গে যুক্ত।
অ্যাপকেন্দ্রিক ঝুঁকি এড়াতে অ্যান্ড্রয়েড ইউআরএল রিস্ক অ্যাসেসর (এইউআরএ) নামে সফটওয়্যার কাজ করে। টুল ব্যবহারে জানা যায়, কয়েক হাজার অ্যাপসে লক্ষাধিক ওয়েবসাইট জড়িয়ে আছে। গবেষণা বলছে, জনপ্রিয় অনেক অ্যাপ ঝুঁকিপূর্ণ ওয়েবসাইটে নিয়ে যায়।
যদি অ্যাপ জটিল সাইটের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হয় এবং অ্যাপ ও সাইটের আয় নিশ্চিত হয়, তবে বিশেষ ক্ষেত্রে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের গ্রাহক তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে যাওয়ার বিষয়টি একেবারেই জানেন না। ভুক্তভোগী অধিকাংশই মনে করেন, অ্যাপ জনপ্রিয় ও বড় প্ল্যাটফর্ম থেকে ডাউনলোড করার মানে সেটি নিরাপদ। সতর্ক হওয়ার শর্তে, এমন ধারণা
আদৌ ঠিক নয়।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: অ য প ড উনল ড ব যবহ র কর ট য প করত জনপ র য় ব কল প
এছাড়াও পড়ুন:
দলগুলো ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে ব্যর্থ হলে সরকার নিজের মতো সিদ্ধান্ত নেবে
জুলাই জাতীয় সনদ বা সংস্কার প্রস্তাব বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে মতভেদ দেখা দিয়েছে, তাতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিজ উদ্যোগে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে সম্ভাব্য দ্রুততম সময়ে অন্তর্বর্তী সরকারকে ঐক্যবদ্ধ দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। রাজনৈতিক দলগুলো যদি ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত দিতে না পারে, তাহলে সরকার তার মতো করে সিদ্ধান্ত নেবে।
আজ সোমবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের ‘জরুরি সভায়’ এই সিদ্ধান্ত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে সেখানে এক সংবাদ সম্মেলনে সরকারের সিদ্ধান্ত জানান আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, আদিলুর রহমান খান ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
গত মঙ্গলবার জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের উপায় নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে সুপারিশ জমা দিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এতে বলা হয়েছে, সনদের সংবিধান-সম্পর্কিত সংস্কার প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ আদেশ জারি করে তার ভিত্তিতে গণভোট হবে। গণভোটে প্রস্তাব পাস হলে আগামী সংসদ সংবিধান সংস্কার পরিষদ হিসেবে ২৭০ দিনের মধ্যে সংবিধান সংস্কার করবে।
তবে গণভোট কবে হবে, সে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভার সরকারের ওপর ছেড়ে দিয়েছে ঐকমত্য কমিশন। সরকার সিদ্ধান্ত নেবে গণভোট কি জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিন একই সঙ্গে হবে, নাকি আগে হবে। এসব সুপারিশ জমা দেওয়ার পর রাজনৈতিক দলগুলো পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিয়েছে। এ রকম পরিস্থিতিতে আজ জরুরি বৈঠকে বসে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল