ছাত্রদের গায়ে গুলি লাগার আগে সেই গুলি আমার বুকে লাগবে
আবু সাহাদাৎ বাঁধন
১৮ ফেব্রুয়ারি ড. জোহা দিবস। এ দিনটি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ (রাবি) দেশের সচেতন মহলের কাছে এক অবিস্মরণীয় দিন হিসেবে চিহ্নিত। ১৯৬৯ সালের এই দিনে রাবির রসায়ন বিভাগের শিক্ষক ও প্রক্টর ড. শামসুজ্জোহা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে নির্মমভাবে শহীদ হন।
নিজের জীবনের বিনিময়ে সেদিন তিনি তাঁর ছাত্রদের জীবন রক্ষা করেছিলেন। তিনি ছাত্রদের রক্ষা করতে নিজের জীবন বাজি রেখেছিলেন। বলেছিলেন– ‘ছাত্রদের গায়ে গুলি লাগার আগে সেই গুলি আমার বুকে লাগবে।’ ১৯৬১ থেকে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত দেশের বেদনাময় ও আত্মত্যাগের ঘটনাগুলোর মধ্যে ড.

শামসুজ্জোহার শাহাদাতবরণ অন্যতম। ড. জোহার স্মরণে ১৮ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের জোহা চত্বরে মানববন্ধন করেন রাবি সমকাল সুহৃদ সমাবেশের সদস্যরা। দিনটিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান তারা। এ ছাড়া মানববন্ধন শেষে টিএসসিসি বটমূলে এক কুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন– রাবি সমকাল সুহৃদের সভাপতি আবু সাহাদাৎ বাঁধন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ খালিদ, তাজিউর রহমান তাজ, কোষাধ্যক্ষ দীপু বিশ্বাস, সুহৃদ পুষ্পিতা দাস, তাসনীন রহমান মীমসহ শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। রাবি সুহৃদ সভাপতি আবু সাহাদাৎ বাঁধন বলেন, ‘ড. শামসুজ্জোহা স্যার আমাদের অনুপ্রেরণা। তাঁর আত্মদানের মাধ্যমেই তৎকালীন স্বৈরশাসক আইয়ুব খান সরকারের ভিত কেঁপে উঠেছিল, এগিয়ে গিয়েছিল বাঙালি জাতির জাগরণী চেতনা, যা দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামকে বেগবান করেছিল। নতুন প্রজন্মকে আমরা জোহা স্যারের আত্মত্যাগের কথা জানাতে চাই। তাই ১৮ ফেব্রুয়ারিকে জাতীয় শিক্ষক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হোক।’

সুন্দরবন রক্ষায় সবার এগিয়ে আসতে হবে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখার সমকাল সুহৃদ সমাবেশ সুন্দরবন দিবস উপলক্ষে একটি অনলাইন আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। ১৪ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৩০ মিনিটে গুগল মিটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত এ সভার মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘সুন্দরবনে অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, প্রাণ-প্রকৃতির সর্বনাশ।’
সভায় সভাপতিত্ব করেন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ, রাবি শাখার সভাপতি আবু সাহাদাৎ বাঁধন এবং সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক ইফরিম সিদ্দিকী। প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমকাল সুহৃদ সমাবেশ, রাবি শাখার সাবেক সভাপতি আরিফুল ইসলাম।  
আলোচনায় বক্তারা সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য রক্ষা এবং পর্যটকদের নিয়ন্ত্রণে আনার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। প্রধান আলোচক আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘সুন্দরবন আমাদের উপকূলীয় অঞ্চলের জন্য একটি প্রাকৃতিক ঢাল। কিন্তু অনিয়ন্ত্রিত পর্যটন, বনের সম্পদ আহরণ এবং দূষণের কারণে এর পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বন্যপ্রাণীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পর্যটক সংখ্যা সীমিত করা এবং বিকল্প কর্মসংস্থানের মাধ্যমে স্থানীয়দের বননির্ভরতা কমানোর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।’  
সভায় আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুমিত হাসান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ খালিদ, তাজিউর রহমান তাজ, সুহৃদ জিহাদুল ইসলাম, তাসনীম আলম মীম এবং অন্যান্য সুহৃদ সদস্য।  
সমকাল সুহৃদ সমাবেশ, রাবি শাখার সভাপতি আবু সাহাদাৎ বাঁধন বলেন, ‘পর্যটনের নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আমাদের বন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের দিকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া উচিত। সুন্দরবন রক্ষার দায়িত্ব আমাদের সবার।’  
সভায় সুন্দরবন রক্ষায় গণসচেতনতা বাড়ানো এবং সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বান জানানোর মধ্য দিয়ে শেষ হয় আলোচনা। 
সভাপতি সুহৃদ সমাবেশ, রাবি

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ন দরবন র আম দ র

এছাড়াও পড়ুন:

উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ক্ষণিকা বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে ও বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। 

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এ সময় বক্তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাবির বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের সনাক্তসহ এর পেছনে ষড়যন্ত্রকারীদের চিহ্নিত করার দাবি জানান।

আরো পড়ুন:

ঢাবির ৪০ শতাংশ শিক্ষক আন্তর্জাতিক মানের: উপাচার্য

ঢাবি উপাচার্যের সঙ্গে সিঙ্গাপুর হাইকমিশনের সাক্ষাৎ

ঢাবির লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী ইব্রাহিম মাহমুদ বলেন, “সারা বাংলাদেশের আন্দোলনে ছাত্রদের বিভিন্ন আন্দোলন ও সংগ্রামকে পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল একে অপরের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিতে চায়। উত্তরায় শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছিল, তারা ন্যায়ের পক্ষে ছিল। কিন্তু একটি কচক্রী মহল কৌশলে তাদের ঢাবি শিক্ষার্থীদের ওপর লেলিয়ে দিয়েছে।”

তিনি বলেন, “কিছু ইনফ্লয়েঞ্চার এবং কন্টেন্ট ক্রিয়েটরদের কনটেন্টের উপর ভিত্তি করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতি সারা বাংলাদেশের মানুষের মধ্যে বিদ্বেষ ছড়ানো হচ্ছে। ফলে আজ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষণিকা বাস ও শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।”

শিক্ষার্থী হাসিব আল ইসলাম বলেন, “কিছু দুর্বৃত্ত এবং কিশোর গ্যাংয়ের সন্ত্রাসীরা ছাত্রদের আন্দোলনে প্রবেশ করে ঢাবির বাসে হামলা করে চালক ও শিক্ষার্থীদের আহত করেছে। একটি কুচক্রী মহল সারা দেশে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রামের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে যে ঐক্য গড়ে উঠেছে, তা নষ্ট করার জন্য ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ এ হামলা। এটি কোন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা নয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সম্পর্কের ফাটল ধরাতেই এ হামলা।”

তিনি বলেন, “জুলাইয়ে গড়ে ওঠা ঐক্যকে যারা ভাঙতে চাচ্ছে, তাদের সনাক্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। গণ-অভ্যুত্থানের আট মাস হয়ে গেলেও প্রশাসন জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এ হামলার দায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এড়াতে পারেন না। দ্রুত আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থার উন্নতি করে ক্ষণিকা বাসে হামলার সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। এতে বিলম্ব হলে ঢাবি শিক্ষার্থীরা এর উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত আছে।”

দুপুরে রাজধানীর উত্তরার আজমপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পরিবহনকারী ক্ষণিকা বাসে ভাঙচুর চালায় একদল শিক্ষার্থী। এ ঘটনায় বাসের ড্রাইভারসহ কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবনের মধুসহ ২৪ পণ্য পেল জিআই সনদ
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • সুন্দরবনে হরিণ শিকারে যাওয়া ব্যক্তির লাশ উদ্ধার, মৃত্যুর কারণ নিয়ে ধোঁয়াশা
  • বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন
  • ‘তোর সময় শেষ’ লেখা চিঠির সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে সাংবাদিককে হুমকি
  • উত্তরায় বাসে হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে মানববন্ধন
  • কড়া নজরদারি সুন্দরবন সীমান্তে
  • সৌন্দর্যের সন্ধানে সুন্দরবনের গহীনে : দ্বিতীয় পর্ব
  • সুন্দরবনে অস্ত্রসহ বনদস্যু আটক
  • উপকূল রক্ষা বাঁধে ভয়াবহ ধস, প্লাবনের আশঙ্কা সুন্দরবন তীরবর্তী জনপদে