বাংলাদেশে রাজনৈতিক পরিবেশ শক্তিশালী করতে যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রকল্প নিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভুল তথ্য দিয়েছেন বলে দাবি করেছে তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান ডিসমিসল্যাব। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশের মাত্র দুজন ব্যক্তি মিলে চালানো একটি ছোট প্রতিষ্ঠানকে ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার খবরটি শুধু সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেই নয়, ভারত ও বাংলাদেশেও বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। এর ফলে বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ বিনিয়োগের ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়েছে। তা ছাড়া এ ঘটনায় অনেকের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে বলে মনে করে ডিসমিসল্যাব।

প্রতিষ্ঠানটি বলছে, বাংলাদেশে মার্কিন করদাতাদের ২৯ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার খরচ হওয়ার আগেই ‘স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ’ (এসপিএল) নামের একটি প্রকল্পের অর্থায়ন বাতিল করেছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব গভর্নমেন্ট ইফিসিয়েন্সি (ডজ) যে খবর প্রকাশ করেছে, সেটি বিভ্রান্তিকর। কারণ, ২৯ মিলিয়ন ডলার বাংলাদেশি দুজন ব্যক্তির প্রতিষ্ঠানের কাছে যায়নি। মূলত এসপিএল প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রে নিবন্ধিত ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল, যাদের বিভিন্ন দেশে ২১৮টি প্রকল্প আছে। বাংলাদেশেও প্রতিষ্ঠানটির ১২টি প্রকল্প রয়েছে বলে জানিয়েছে ডিসমিসল্যাব।

ইউএস স্পেন্ডিং ডট গভের ওয়েবসাইট ঘেঁটে ডিসমিসল্যাব বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ইউএসএআইডির অর্থায়নে ২০০১ সাল থেকে বাংলাদেশে সুশাসন, রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও নাগরিক সমাজের উন্নয়নে যত প্রকল্প নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে ২৯ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি একটি প্রকল্পই আছে। ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৭ সাল থেকে স্ট্রেনদেনিং পলিটিক্যাল ল্যান্ডস্কেপ প্রকল্পটির আওতায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করেছে। এর মধ্যে পলিটিকস ম্যাটার্স বাংলাদেশ নামক ই–লার্নিং প্ল্যাটফর্ম, দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট, পিস প্রেশার গ্রুপ, ইয়াং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রাম অন্যতম। ইয়ং লিডারস ফেলোশিপ প্রোগ্রামের আওতায় আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জাতীয় পার্টির ৫৩৬ জন তরুণ নেতাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে।

দ্য হাঙ্গার প্রজেক্টের ২০২০ সালের একটি পর্যালোচনা প্রতিবেদনে বলা হয়, এসপিএলের অধীনে ২৩৬টি কর্মশালার মাধ্যমে ৫ হাজার ৪১০ জন রাজনৈতিক নেতা–কর্মী অংশগ্রহণমূলক ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ভিন্নমত সহনশীলতা এবং দলীয় পরিচয়ের বাইরে একসঙ্গে কাজ করার দক্ষতা অর্জন ও অনুশীলন করেছে এবং এরা মূলত তিনটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলে জানিয়েছে ডিসমিসল্যাব।

মিডিয়া গবেষণা প্ল্যাটফর্ম ডিসমিসল্যাব বলছে, যুক্তরাজ্য সরকারের প্রতিশ্রুত টাকার একটি অংশ প্রায় ২ মিলিয়ন পাউন্ড যায় আরেক মার্কিন সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেকটোরাল সিস্টেমসের (আইএফইএস) কাছে। প্রতিষ্ঠানটি স্টুডেন্টস এগেইনস্ট ভায়োলেন্স এভরিহোয়ার বা সেভ কর্মসূচির অধীনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রো গভর্ন্যান্স রিসার্চ ইনিশিয়েটিভের সঙ্গে সারা দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করে।

সেভ প্রকল্পের লক্ষ্য ছিল শিক্ষার্থীদের জন্য একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা, যেখানে তারা সংঘাতের গতিপ্রকৃতি বুঝতে পারবে, শান্তিপূর্ণ রাজনীতির ভূমিকা সম্পর্কে সচেতন হবে এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জন করতে পারবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন ত ক প রকল প

এছাড়াও পড়ুন:

নরসিংদীতে কলাবাগান থেকে অজ্ঞাতনামা যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার

নরসিংদীর পলাশে কলাবাগান থেকে অজ্ঞাতনামা এক যুবকের রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ রোববার সকালে উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

নিহত ব্যক্তির আনুমানিক বয়স ৩৫ বছর। তাঁর নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) নিহতের আঙুলের ছাপ সংগ্রহ করে পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চালাচ্ছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটার দিকে পাঁচদোনা-চরসিন্দুর আঞ্চলিক সড়কের পাশে ধনারচর গ্রামের একটি কলাবাগানে রক্তাক্ত লাশটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। পরে খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন বলেন, নিহত যুবকের শরীরের বিভিন্ন স্থানে ধারালো অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, গতকাল রাতে দুর্বৃত্তরা তাঁকে কুপিয়ে হত্যা করে লাশ ফেলে রেখে গেছে।

ওসি আরও বলেন, ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। হত্যার কারণ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে তদন্ত চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ