দক্ষিণ আফ্রিকা ও নিউজিল্যান্ডকে চোকার বলা হতো বৈশ্বিক টুর্নামেন্টের সেমিফাইনাল থেকে বেশির ভাগ সময় বিদায় নেওয়ায়। ২০২৫ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলে নিউজিল্যান্ড সে দুর্নাম কিছুটা ঘোচাতে পেরেছে। ফাড়া কেটে যাওয়ায় আরও দুটি আইসিসি টুর্নামেন্টে ফাইনাল খেলেছে কিউইরা। 

দক্ষিণ আফ্রিকাও গত বছর টি২০ বিশ্বকাপের ফাইনালিস্ট। চোকারদের উন্নতি হলেও বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ উন্নতি দেখাতে পারছে না। পারফরম্যান্সের গ্রাফটা দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে। তেইশের ওয়ানডে বিশ্বকাপে হতাশ করেছেন সাকিব আল হাসানরা। টানা দুই ম্যাচ হেরে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নিচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্তরা।

পাকিস্তানের কাছে শেষ ম্যাচ হেরে গেলে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ হবে। বাংলাদেশ আইসিসির টুর্নামেন্টে কেন এভাবে ব্যর্থ হয়, কারও কাছেই সে উত্তর নেই। টাইগারদের এমন পারফরম্যান্সে সাবেক অধিনায়ক হাবিবুল বাশার, নির্বাচক আব্দুর রাজ্জাকরা রীতিমতো হতবাক।

বাংলাদেশ প্রথম বিশ্বকাপ খেলে ১৯৯৯ সালে। সেই থেকে কোনো ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়েনি। বিরতিহীন টি২০ বিশ্বকাপ খেলেছে ৯টি। অনিয়মিত হলেও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলেছে। আট জাতির এই ক্রিকেট টুর্নামেন্টেই সেরা সাফল্য পেয়েছে বাংলাদেশ। 

২০১৭ সালে ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সেমিফাইনাল খেলেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজারা। সেমিতে উন্নীত হওয়ার পেছনেও প্রকৃতির হাত ছিল। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি বৃষ্টিতে পরিত্যক্ত হওয়ায় নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ৩ পয়েন্ট নিয়ে সেরা চারে জায়গা করে নিয়েছিল। ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেরা সাফল্য বলতে ১৫ সালে অস্ট্রেলিয়ায় কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। সেখানেও বৃষ্টির আশীর্বাদ পেয়েছিল বাংলাদেশ। 

তবে পারফরম্যান্সের বিবেচনায় সেরা বিশ্বকাপ গেছে ২০০৭ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। হাবিবুল বাশারের নেতৃত্বে সুপার এইটে খেলেছিল। গ্রুপ পর্বে ভারতকে, সুপার এইটে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছিল তারা। টি২০ বিশ্বকাপ বিবেচনা করা হলে ২০০৭ সালের প্রথম আসর। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়ে সুপার এইটে খেলেছিলেন মোহাম্মদ আশরাফুলরা। 

বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে অধারাবাহিকতার কারণ জানতে চাওয়া হলে হাবিবুল বাশার বলেন, ‘আমি আসলেই বুঝতে পারি না, কেন এমন হয়। ২০১৯ সালের বিশ্বকাপ নিয়ে আমার খুব দুঃখ। বাংলাদেশের সেরা দল খেলেছে ওই আসরে। অনেক টপ প্লেয়ার ছিল এবং চূড়ান্ত ফর্মে ছিল। তাদের সঙ্গে যারা ছিল তারাও চূড়ায় ছিল। সেরা দল নিয়েও আমরা ভালো করতে পারিনি, ফেল করেছি। ২০২৩ সালের বিশ্বকাপের আগে পর্যন্ত খুব ভালো ক্রিকেট খেলেছি। বিশ্বকাপে গিয়ে ভিন্ন ক্রিকেট খেললাম।’

২০১০ সাল থেকে দ্বিপক্ষীয় সিরিজে উন্নতি দেখাতে শুরু করে বাংলাদেশ। বিশেষ করে ঘরের মাঠে ভালো খেলছে। তারাই কেন বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্যর্থ হচ্ছে? 

কারণ খুঁজতে গিয়ে বাশার বলেন, ‘আমরা দ্বিপক্ষীয় সিরিজগুলোতে যত ভালো, টুর্নামেন্টগুলোতে অত ভালো না। এশিয়া কাপে কিছু সাফল্য আছে। বিশ্বকাপ পর্যায় কেন যেন নিজেদের হারিয়ে ফেলি। বিশ্বকাপ মঞ্চে হয়তোবা অন্য দলগুলোর পরিকল্পনা ভালো থাকে। বিশ্বকাপে চাপ অনেক বেশি থাকে। আমরা হয়তো চাপ হ্যান্ডেল করতে পারি না। একই পারফরমার বিশ্বকাপে গিয়ে পারে না। বিশ্বকাপে দল হিসেবেও ভালো খেলতে পারি না।’ 

বাংলাদেশ দলের সঙ্গে পাকিস্তানে থাকা নির্বাচক রাজ্জাকের মতে, ‘বৈশ্বিক টুর্নামেন্টে ভালো করতে হলে যে মানের ক্রিকেট খেলতে হয়, আমরা তা করতে পারি না। এ রকম টুর্নামেন্টে ভালো খেলতে হলে বেশ কয়েকজন বড় পারফরমার লাগে। দল হিসেবে ভালো খেলতে হয়। এই দুই জায়গাতে হয়তো কিছুটা ঘাটতি রয়েছে। আরেকটি কারণ হতে পারে– দলের সক্ষমতার চেয়েও প্রত্যাশা বেশি থাকে। যেটা খেলোয়াড়দের চাপে ফেলে।’

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ফ ইন ল খ ল প রফরম

এছাড়াও পড়ুন:

তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম

চট্টগ্রাম টেস্টে আজ প্রথম দিনে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংসে ৬০ রানে ৫ উইকেট পেয়েছেনতাইজুল ইসলাম। টেস্টে এ নিয়ে ১৬তমবার ইনিংসে ৫ উইকেট পেলেন  বাংলাদেশের বাঁহাতি স্পিনার। প্রথম দিনের খেলা শেষে তাইজুলের প্রশংসা করে নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন তামিম ইকবাল।

আরও পড়ুনতাইজুলের মনে হয় না তারা খেলা বোঝে১ ঘণ্টা আগে

বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়কের পেজে তাইজুলের একটি ছবি পোস্ট করে লেখা হয়, ‘এই মুহূর্তে বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত (আন্ডাররেটেড) বোলার। এখন খেলা অন্য বোলারদের পরিসংখ্যান দেখুন, তাহলে আমার কথাটা বুঝতে পারবেন। আরেকবার ৫ উইকেট নিয়ে দারুণ খেলেছ তাইজুল।’

২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে টেস্ট ও ডিসেম্বরে ওয়ানডে অভিষেক তাইজুলের। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে অভিষেক ২০১৯ সালে। ওয়ানডে (২০) ও টি-টোয়েন্টির (২) চেয়ে টেস্ট ম্যাচই (৫২) বেশি খেলেন তাইজুল। চট্টগ্রামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চলতি টেস্টে প্রথম দিনের পারফরম্যান্সসহ মোট ৫৩ টেস্টে এ পর্যন্ত ২২৪ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। তাঁর টেস্ট সংস্করণের পারফরম্যান্সটা যাচাই করে দেখা যায়।

এখনো যাঁরা খেলছেন তাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নাথান লায়নের। অস্ট্রেলিয়ার অফ স্পিনারের টেস্ট অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেকের সময় থেকে লায়নের পারফরম্যান্স—   ১০৩ টেস্টে ২৯.৪৮ গড়ে ৪৪১ উইকেট। মোট ২৪ বার ৫ উইকেট নিলেও তাইজুলের অভিষেকের পর থেকে ১৯ বার ৫ উইকেট নেন লায়ন। তবে অস্ট্রেলিয়া দল বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলায় লায়ন এ সময়ে তাইজুলের চেয়ে অনেক বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন। বোলিং গড় এবং স্ট্রাইকরেটে লায়ন ও তাইজুলের মাঝে ব্যবধান বেশি না। তাইজুলের বোলিং গড় ৩১.৫৬, স্ট্রাইক রেট ৬১.৯, যেখানে লায়নের স্ট্রাইকরেট ৬১.৬ ও গড় ৩০.১৯।

আরও পড়ুনতাইজুলের ভেলকি, শেষ সেশনে গেল ৭ উইকেট২ ঘণ্টা আগে

ভারতের স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন গত বছর ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়েন। টেস্টে তার অভিষেক ২০১১ সালে। তাইজুলের টেস্ট অভিষেক থেকে এই সংস্করণে ৮৫ ম্যাচে ২২.৮৪ গড়ে ৪৩০ উইকেট নেন অশ্বিন। এ সময়ে ২৮ বার পেয়েছেন ৫ উইকেট। অস্ট্রেলিয়ার মতো ভারতও বেশি বেশি টেস্ট খেলায় স্বাভাবিকভাবেই এ সময়ে তাইজুলের তুলনায় বেশি টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছেন অশ্বিন।

ভারতের আরেক স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজার ক্ষেত্রেও একই কথা খাটে। তাইজুলের অভিষেকের দুই বছর আগে টেস্টে অভিষেক জাদেজার। তাইজুলের অভিষেকের সময় থেকে এ পর্যন্ত ৬৮ টেস্টে ২৭৮ উইকেট নিয়েছেন জাদেজা। তবে তাঁর চেয়ে এ সময়ে বেশি সংখ্যকবার ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল। জাদেজা এ সময়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন ১৩ বার, তাইজুল নিয়েছেন ১৬ বার।

তাইজুল ৫ উইকেট নেওয়ার পর তাঁকে জড়িয়ে ধরেন অধিনায়ক নাজমুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সেয়ানে সেয়ানে টক্করে বার্সা ও ইন্টারের কে কত নম্বর পেলেন
  • সাকিবের পথে হাঁটছেন মিরাজ
  • মিরাজে দুর্দান্ত জয় বাংলাদেশের
  • আজিজুল হাকিমের অলরাউন্ড পারফরম্যান্স, কলম্বোয়ও হেসেছে বাংলাদেশ
  • ‘বাজপাখি’ মার্তিনেজের বাজে ফর্ম, আর্জেন্টিনার জন্য কতটা দুশ্চিন্তার
  • নীলফামারীর সাবেক এমপি তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ
  • সমালোচকরা খেলা বোঝে না!—আক্ষেপ তাইজুলের
  • তাইজুলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে অবমূল্যায়িত বোলার’ বললেন তামিম