সদ্য নিয়োগ পাওয়া বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএফডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান তানিকে অপসারণে ৭২ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেয় বৈষম্যহীন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটি। গত রোববার এফডিসি প্রাঙ্গণে সংবাদ সম্মেলন করে এ ঘোষণা দেয় সংগঠনটি। তবে গতকাল মঙ্গলবার এফডিসির প্রশাসনিক ভবনে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে গিয়ে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে পরিচালকদের একটি দল। এই দলে অন্য পরিচালকেরা ছাড়াও ছিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির ২০২৩-২৪ মেয়াদের মহাসচিবের দায়িত্বে থাকা শাহীন সুমন। এই দলে আরও ছিলেন অপূর্ব রানা, হাবিবুল ইসলাম, মিজানুর রহমান লাবু প্রমুখ।

এর আগে বৈষম্যহীন চলচ্চিত্র স্বার্থ সংরক্ষণ কমিটির উপদেষ্টা অভিনেতা ও প্রযোজক আশরাফ উদ্দিন আহমেদ উজ্জ্বল এফডিসিতে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের মতামত জানান। তাঁর ভাষ্যে, ‘এফডিসিতে প্রশাসনিক কাজে যদি কোনো প্রশাসক আসে, আমাদের তো কোনো আপত্তি নেই। কারণ, এটা সরকারি জায়গা। একটা লোক চাকরি করতে আসবে, সে আসতেই পারে। এখানে চাকরি করতেই পারে। কিন্তু আপনি এমন একজনকে পাঠাচ্ছেন, যিনি অজ্ঞাতনামা আসামি আমাদের চোখে, আমরা তাঁকে চিনি না, জানি না, আমাদের ওপর আপনারা চাপিয়ে দেবেন, সেটা হবে না। আমরা সেটা প্রতিহত করব।’ কারও ভুল সিদ্ধান্তের দায় রাষ্ট্র বা জনগণ নিতে পারে না উল্লেখ করে উজ্জ্বল বলেন, ‘চব্বিশের রক্ত বৃথা যাবে না। রক্তে ভেজা বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিস্ট বা তাঁর দোসরদের স্থান নেই। যাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তিনি ফ্যাসিস্টের দোসর। ভুল সিদ্ধান্তে ভুল মানুষকে এফডিসির এমডি নিয়োগ অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। যোগ্য ও চলচ্চিত্রবান্ধব কাউকে এমডি নিয়োগ দিতে হবে।’

এফডিসির প্রশাসনিক ভবনে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে গিয়ে তাঁকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছে পরিচালকদের একটি দল।.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চলচ চ ত র এফড স র

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ