গ্রাহকের ১১ কোটি আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান মো. শওকত আলি চৌধুরীসহ ৪৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) মামলাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে চট্টগ্রাম অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সরকার হাসান শাহরিয়ারের আদালতে মামলাটির আবেদন করেন মুর্তুজা আলী নামে এক ব্যবসায়ী।

বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হেলাল বিন মঞ্জুর তামিম বলেন, ব্যবসায়ী মুর্তুজা আলী ইস্টার্ন ব্যাংকে অ্যাকাউন্টসহ সঞ্চয়ী এফডিআর (স্থায়ী আমানত) অ্যাকাউন্ট খোলেন। এফডিতে তিনি বিভিন্ন মেয়াদে ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকা জমা করেন। এছাড়া সঞ্চয়ী হিসাবে ৫০ লাখ টাকা জমা ছিল তার। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদসহ উচ্চ পদস্থ কয়েকজন কর্মকর্তা মিলে বিভিন্ন নামে এবং ভিন্ন ভিন্ন মোবাইল নাম্বার দিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলে। বাদী বিদেশে থাকা অবস্থায় সেই অ্যাকাউন্টগুলো ব্যবহার করে তারা এফডিআর এর বিপরীতে ঋণ নেয়, যা বাদী জানতেন না। তাই এফডিআরের লাভসহ সর্বমোট ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ইস্টার্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যানসহ মোট ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয়েছে। আদালত মামলার আবেদন গ্রহণ করে সিআইডিকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির এমডি আলী রেজা ইফতেখার, পরিচালক এম গাজিউল হক, সেলিনা আলি, আনিস আহমেদ, মুফাক্কারুল ইসলাম খসরু, গাজী মো.

সাখাওয়াত হোসাইন, কে জে এস বানু, জারা নামরীন, ড. তাওফিক আহমেদ চৌধুরী, রুসলান নাসির, কে এম তানজিব উল হক, খন্দকার আতিক-ই রাব্বানী, মাহরীন নাসির, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক আহমেদ শাহীন, সহকারী ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী জামান, রিয়াদ মাহমুদ চৌধুরী, এম খোরশেদ আনোয়ার, মাহমুদুন নবী চৌধুরী, এম খোরশেদ আলম, মহিউদ্দিন আহমদ, ইউনিট হেড মো. ওবাইদুল ইসলাম, মাহদিয়ার রহমান, মো. মাইনুল হাসান ফয়সাল, ট্রানজেকশন ব্যাংকিং হেড মো. জাবেদুল আলম, হেড অব কর্পোরেট বিজনেস সঞ্জয় দাশসহ ব্যাংকটির আরও অনেকেই।

মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাদী মো. মুর্তুজা আলী একজন ব্যবসায়ী এবং ভাইয়া গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক। ২০১৭ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের ও আর নিজাম শাখায় পাঁচ কোটি ২০ লাখ টাকা সঞ্চয়ী হিসেবে জমা করেন। কিন্তু ব্যাংকের নিয়মনুযায়ী সঞ্চয়ী হিসাবের ওপর ৭ শতাংশ মুনাফা পাওয়ার কথা থাকলেও ব্যাংক তা দেয়নি তাকে। পরে ব্যাংকে থাকা অর্থের পরিমাণ মুনাফাসহ ৬ কোটি ১০ লাখ টাকা দাঁড়ালে মুর্তুজা আলী সেই অর্থ ইস্টার্ন ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় স্থানান্তর করেন। পরে ২০১৭ ও ২০১৮ সালে তিনি ইস্টার্ন ব্যাংকের চান্দগাঁও শাখায় ৫ কোটি ৮০ লাখ টাকার ছয়টি এফডিআর খোলেন এবং এর বিপরীতে একটি ওএসডি (সিকিউরড ওভারড্রাফট) ঋণের জন্য আবেদন করেন। ২০১৯ সালে বিদেশে থাকার সময় তিনি ব্যাংকটির চান্দগাঁও শাখায় তার নামে দুটি জাল সঞ্চয়ী অ্যাকাউন্ট ও চারটি জাল ঋণ অ্যাকাউন্টের বিষয়ে জানতে পারেন। তার জাল স্বাক্ষর ও ভুল তথ্য দিয়ে ওই অ্যাকাউন্ট দিয়ে ৯ কোটি ৭৭ লাখ ৩২ হাজার ৮৬৭ টাকা লেনদেন করে পাঁচ কোটি ৪৪ লাখ ৯৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়। এ ঘটনার পর বাদী তার সব পাওনা বুঝে পেতে ইস্টার্ন ব্যাংক বরাবর লিখিত আইনি নোটিশ পাঠালেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ টাকা ফেরত দিতে অস্বীকৃতি জানায়। ২০১৭ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইস্টার্ন ব্যাংক থেকে সব মিলিয়ে ১১ কোটি পাওনা বলে মামলার আরজিতে উল্লেখ করেছেন মুর্তুজা আলী।

প্রসঙ্গত, ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসি’র চেয়ারম্যান ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী শওকত আলী চৌধুরী চট্টগ্রামসহ সারাদেশে ‘ডিসকো শওকত’ হিসেবে পরিচিত। পাশাপাশি তিনি ফিনলে প্রপার্টিজ এর পরিচালক ও অংশীদার।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস য়

এছাড়াও পড়ুন:

মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা

দুই ঘণ্টার বৃষ্টিবিঘ্নের পর অবশেষে নাবি মুম্বাইয়ের ডি ওয়াই পাতিল স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে নারী ক্রিকেট বিশ্বকাপ-২০২৫ এর প্রতীক্ষিত ফাইনাল। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। আর ব্যাট হাতে মাঠে নামে ভারত।

শুরুটা দারুণ করে ‘উইমেন ইন ব্লু’। ওপেনার স্মৃতি মান্ধানা ও শেফালি ভার্মা গড়েন ১০৪ রানের জুটি। এই রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৪৫ রানে আউট হন মান্ধানা। আর তাতেই রচনা হয় নতুন ইতিহাস। মিতালি রাজকে পেছনে ফেলে বিশ্বকাপের এক আসরে ভারতের পক্ষে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক হয়ে যান মান্ধানা।

আরো পড়ুন:

গৌহাটি টেস্টে ‘লাঞ্চের আগে টি-ব্রেক’! জানুন কেন এই ব্যতিক্রম

রোহিতের সেঞ্চুরির ‘হাফ-সেঞ্চুরি’, ঢুকলেন এলিট ক্লাবে

চলতি বিশ্বকাপে ৯ ইনিংসে মান্ধানার মোট রান ৪৩৪, যা ২০১৭ সালের আসরে মিতালি রাজের করা ৪০৯ রানের রেকর্ডকেও ছাড়িয়ে গেছে।

ভারতের হয়ে এক বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহকের তালিকা:
৪৩৪ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২৫)
৪০৯ – মিতালি রাজ (২০১৭)
৩৮১ – পুনম রাউত (২০১৭)
৩৫৯ – হারমানপ্রীত কৌর (২০১৭)
৩২৭ – স্মৃতি মান্ধানা (২০২২)

এবারের আসরে দুর্দান্ত ছন্দে ছিলেন মান্ধানা:
এখন পর্যন্ত দুইটি ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলেছেন স্মৃতি মান্ধানা। ২০১৭ সালের আসরেই প্রথম আলোচনায় আসেন তিনি। করেছিলেন ৩২৭ রান। আর এবার ২০২৫ বিশ্বকাপে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫৪.২৫ গড়ে ৪৩৪ রান। যা তার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা পারফরম্যান্স।

তবে শুরুটা কিন্তু খুব একটা উজ্জ্বল ছিল না। প্রথম তিন ম্যাচে তিনি করেছিলেন মাত্র ৪৬ রান। কিন্তু এরপরই যেন জেগে ওঠেন। টানা দুটি ফিফটির পর নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে করেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি।

সেমিফাইনালে ভালো শুরু করেও বড় ইনিংসে রূপ দিতে পারেননি ২৯ বছর বয়সী এই ওপেনার। ফাইনালেও ভালো সূচনা করে ৫৮ বলে ৮টি চার মেরে ৪৫ রানে সাজঘরে ফেরেন।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নির্বাচিত সরকার ছাড়া ব্যবসার পরিবেশের উন্নতি হবে না, অর্থনীতিতে গতি আসবে না
  • স্তম্ভিত হারমানপ্রীত, আবেগ-রোমাঞ্চ-গর্ব-ভালোবাসায় মিলেমিশে একাকার
  • মিতালিকে ছাড়িয়ে ইতিহাস গড়লেন মান্ধানা