ফৌজদারি মামলায় অপরাধী নেতাদের আজীবন ভোটে লড়া নিষিদ্ধ করার পক্ষে নয় ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। সরকার মনে করে, ছয় বছরের জন্য নিষিদ্ধ করার প্রচলিত আইন যথেষ্ট। তবে তার পরিবর্তন প্রয়োজন হলে আইনসভা বা সংসদই সেই সিদ্ধান্ত নেবে। সেই কাজ বিচার বিভাগের ঠিক করা অনুচিত।

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার গত বুধবার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা পেশ করে এই মনোভাব জানিয়েছে। সরকার বলেছে, এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে কোনো ধরনের পরিবর্তন প্রয়োজন মনে করা হলে সংসদই তা করবে।

জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ৮ ও ৯ নম্বর ধারার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে বিজেপি নেতা ও আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় এক জনস্বার্থ মামলা করেছেন। ৮ নম্বর ধারা অনুযায়ী, বিশেষ কিছু ফৌজদারি অপরাধে কোনো রাজনৈতিক নেতার দুই বছর বা তার বেশি সাজা হলে কারাদণ্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী ছয় বছর (২+৬=৮) তিনি ভোটে দাঁড়াতে পারবেন না। ৯ নম্বর ধারা অনুযায়ী দুর্নীতি অথবা রাষ্ট্রের প্রতি বিশ্বস্ত না থাকার কারণে কোনো নেতা পদচ্যুত হলে সেই দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছর তিনি নির্বাচনে দাঁড়ানোর অধিকার হারাবেন। আবেদনকারীর দাবি, উভয় ক্ষেত্রেই শাস্তির মেয়াদ আজীবন করা হোক। অর্থাৎ, আর কোনো দিন সেই নেতা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন না।

সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি দীপংকর গুপ্ত ও বিচারপতি মনমোহনের বেঞ্চ এ বিষয়ে কেন্দ্রের মনোভাব জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে কেন্দ্র জানিয়েছে, বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে সংসদের এখতিয়ারভুক্ত। বিচার বিভাগের এই ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা ঠিক হবে না।

বর্তমান আইনে কোনো নেতা কোনো আদালতে দোষী সাব্যস্ত হলে এবং শাস্তির মেয়াদ দুই বছর হলে সঙ্গে সঙ্গে তিনি আইনসভার সদস্যপদ হারান। আগে উচ্চতর আদালতে আবেদন জানানোর জন্য তিন মাস সময় দেওয়া হতো।

কেন্দ্রীয় সরকারের আইন ও বিচার মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী লোকসভার ৫৪৩ জন সদস্যের মধ্যে ২৫১ জনের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপরাধে যুক্ত থাকার অভিযোগে মামলা রয়েছে। শীর্ষ আদালতে পেশ হওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, পাঁচ বছর বা তার বেশি কারাবাস হতে পারে, এমন গুরুতর মামলা রয়েছে ১০৭ জন বর্তমান সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন য য় অপর ধ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

এশিয়া কাপে আজকের রাত যেন এক নাটকীয় অধ্যায়। ‘বি’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে আবুধাবির মাঠে মুখোমুখি হবে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ সময় রাত সাড়ে ৮টায় শুরু হওয়া এই লড়াই কেবল দুই দলের নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলাদেশের ভাগ্যও। কোটি টাইগার সমর্থক তাই আজ তাকিয়ে থাকবে টিভি পর্দায়। কারণ, এই ম্যাচেই নির্ধারিত হবে, বাংলাদেশ কি সুপার ফোরে উড়াল দেবে, নাকি গ্রুপ পর্বেই শেষ হবে স্বপ্নযাত্রা।

গ্রুপের সমীকরণ এখন টানটান নাটকের মতো। তিন ম্যাচে পূর্ণ ৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে শ্রীলঙ্কা। সমান ৪ পয়েন্ট থাকলেও রান রেটে পিছিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। আফগানিস্তানের ঝুলিতে আছে ২ পয়েন্ট; এক জয় ও এক হারের ফল। হংকং অবশ্য তিন ম্যাচেই হেরে অনেক আগেই বিদায় নিয়েছে।

আরো পড়ুন:

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

আরব আমিরাতকে ১৪৭ রানের টার্গেট দিল পাকিস্তান

এখন হিসাবটা এমন—
আফগানিস্তান হেরে গেলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবেই সুপার ফোরে।
আফগানিস্তান জিতলে সমীকরণ জটিল হবে। তখন শ্রীলঙ্কা, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশের পয়েন্ট সমান ৪ হলেও নেট রান রেটে স্পষ্ট এগিয়ে থাকবে আফগানরা (২.১৫০)। শ্রীলঙ্কার রান রেট ১.৫৪৬, আর বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে -০.২৭০-তে।

অর্থাৎ আফগানিস্তান যদি জেতে, তবে বাংলাদেশকে তাকিয়ে থাকতে হবে এক অসম্ভব সমীকরণের দিকে। সেটা হলো- লঙ্কানদের অন্তত ৭০ রানের ব্যবধানে হারতে হবে এবং তা করতে হবে ৫০ বল হাতে রেখে। অন্যথায় রান রেটের খেলায় পিছিয়েই থাকতে হবে টাইগারদের। তবে বৃষ্টি যদি হানা দেয় কিংবা ম্যাচ কোনো কারণে পরিত্যক্ত হয়, তাহলে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা দু’দলই নিশ্চিতভাবেই চলে যাবে সুপার ফোরে।

ম্যাচকে ঘিরে দুই শিবিরেই চাপ-উত্তেজনার আবহ। আফগানিস্তানের অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার গুলবাদিন নাইব মনে করেন, চাপটা আসলে শ্রীলঙ্কার ওপরই বেশি, “আমরা এসব টুর্নামেন্ট খেলতে অভ্যস্ত, আমাদের কোনো চাপ নেই। শ্রীলঙ্কা ভালো দল ঠিকই, তবে তারাও চাপে থাকবে। আমার মনে হয় দারুণ একটা ম্যাচ হবে।”

অন্যদিকে শ্রীলঙ্কার অলরাউন্ডার দাসুন শানাকা বাংলাদেশ প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “প্রতিটি ম্যাচই আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। হ্যাঁ, বাংলাদেশের সমর্থকরা আমাদের জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আমরাও জয়ের লক্ষ্যেই মাঠে নামব।”

হংকংয়ের বিপক্ষে জিতলেও শ্রীলঙ্কাকে ঘাম ঝরাতে হয়েছিল। সেই অভিজ্ঞতা বলছে, আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয়টা সহজ হবে না তাদের জন্যও। শেষ পর্যন্ত কারা হাসবে জয়ের হাসিতে, আর কোন সমীকরণে দাঁড়াবে বাংলাদেশের ভাগ্য; এই প্রশ্নের উত্তরই দেবে আজকের আবুধাবির রাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ