নাসিরুদ্দিন হোজ্জার বাড়িতে একবার চুরি হলো। সারা দিন পর বেচারা বাড়ি ফিরে দেখেন দরজা ভাঙা, ঘরে কিছুই নেই। প্রতিবেশী যারা সান্ত্বনা দিতে এসেছিল, সবার মুখে একই কথা, ‘তুমি ঘরে ভালো করে তালা দাওনি নিশ্চয়ই। আরে দরজাটা তো একটু শক্তপোক্ত বানাতে হয়।’ কেউ বলল, ‘সারা দিন এমন করে ঘর খালি ফেলে রাখলে চুরি তো হবেই। এত বেখেয়াল হলে চলে।’ সবার সব কথা শুনে হোজ্জা বেশ অবাক হয়ে বললেন, ‘চুরি হলো আমার ঘরে। সবাই আমাকেই দুষছ। কই যে চোর চুরি করল তাকে তো একবারও কিছু বলছ না!’

হোজ্জাকে একবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা গেলে ভালো হতো। ৭০০ বছর পরেও এখানে ‘চুরি যার ঘরে, দোষ তার ঘাড়ে’ সংস্কৃতি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে বেশ কিছু গল্প ফেঁদে ফেলতে পারতেন তিনি।

এখনকার কেতাবি ভাষায় এই বিষয়কে বলা হয় ভিকটিম ব্লেমিং। অর্থাৎ ঘটনার দায় ভুক্তভোগীর ঘাড়ে চাপানো। আবার এই দায় চাপানোর সুবিধার্থে বহুমাত্রিক কোনো ঘটনার বিভিন্ন মাত্রাকে অস্বীকার করে তার একমাত্রিক বয়ানও তৈরি করা হয়। যাকে বলা হয় গ্যাসলাইটিং। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক বছরে বিশেষত নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া একাধিক ঘটনা ও তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকার ধরন দেখলে মনে হয় ভিকটিম ব্লেমিং ও গ্যাসলাইটিং বিষয়টিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অধ্যবসায় চলছে সেখানে।

কখনো ছাত্রীদের চিকিৎসা গ্রহণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কখনোবা ছাত্রী হলের ওপর জারি করা সান্ধ্য আইন। আর এবারের ঘটনায় তো নজির সৃষ্টি করে ফেলেছে চবি প্রশাসন। একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। কারণ, তাঁরা নিজেদের হল এলাকায় ভাঙচুরের প্রতিবাদ করেছিলেন।

৫ ফেব্রুয়ারি রাতের এ ঘটনায় পক্ষ ছিল চারটি। মারমুখী ছাত্রদের একটি পক্ষ, নিজেদের সাংবাদিক দাবি করা কতিপয় ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক ছাত্রীরা।

আরও পড়ুনচবিতে অভ্যুত্থানের মেয়েরা কেন ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও বহিষ্কৃত১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল এলাকা থেকে ছাত্রী হল বেশ খানিকটা দূরেই অবস্থিত বলা যায়। যেখানে সেই রাতে ছাত্ররা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান, সেটি তিনটি ছাত্রী হলের মধ্যবর্তী সীমানাপ্রাচীর–বেষ্টিত একটি স্থান। পুরো ঘটনায় সাদা চোখেই প্রথম যে প্রশ্নটা ওঠা উচিত, তা হলো রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজেদের হল এলাকা ছেড়ে এতগুলো ছাত্র কেন প্রবেশ করলেন ছাত্রী হল এলাকায়? কে বা কারা তাঁদের এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নেতৃত্ব বা ইন্ধন জোগাল?

অথচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও চিত্রে আমরা দেখলাম, বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসা প্রশাসনের অবস্থান আবাসিক ছাত্রীদের মুখোমুখি। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উত্থিত আঙুলের সামনে উত্তেজিত ছাত্ররা নয়; বরং দাঁড়িয়ে আছেন নিরাপত্তাপ্রত্যাশী আতঙ্কিত ছাত্রীরা।

এরপর ছাত্রীদের সঙ্গে প্রশাসনের বাগ্‌বিতণ্ডা এবং প্রক্টরিয়াল বডির একজনকে শারীরিক আঘাত করার যে ঘটনা ঘটে, তাতেও অবাক হতে হয়। ভাঙচুর এবং ছাত্রদের মারমুখী আচরণ দেখে আতঙ্কিত ছাত্রীরাই সেদিন রাতে প্রক্টরকে ফোন করে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। অর্থাৎ ঘটনাস্থলে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ছাত্রদের দলটির। বাধা দিতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের দ্বন্দ্ব হতে পারত। কিন্তু আমরা দেখলাম ঘটনাস্থলে বাধাপ্রাপ্ত হলেন যাঁরা নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনকে ডেকে আনলেন তাঁরাই। তদন্তও হলো তাঁদের বিরুদ্ধে, শাস্তিও পেলেন তাঁরাই।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সমাজ ও রাষ্ট্রের বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং সঠিক প্রশ্নটি করা। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি যে লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে, তা কেবল নারীদের নিরাপত্তা ও আত্মমর্যাদার ওপর আঘাতই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ডকে ক্ষুণ্ন করছে।

সেই মধ্যরাতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা যা করলেন আমাদের অবাক হতেই হয়। চোখ রাঙিয়ে, আঙুল নাচিয়ে নিরাপত্তাপ্রত্যাশী ছাত্রীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করলেনই, অন্যায়ের শিকার ছাত্রীদের পক্ষে যারা দাঁড়ালেন, তাঁদের নিয়েও প্রক্টর নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে যা লিখলেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রক্টরিয়াল বডির আচরণ, মানসিকতা, তদন্ত ও বিচারের বিষয়টি সারাদেশে সমালোচিত হওয়ার পরও ২২ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেটের বিশেষ সভাতে সেখানে ভুক্তভোগী ওই ১০ জন ছাত্রীর বিচারই করা হলো। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ছাত্র, কতিপয় সাংবাদিক বা প্রক্টরদের কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হলো না। নারীর প্রতি স্বৈরাচার আর বৈষম্যের এমন আচরণ শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কলঙ্কিত হয়েছে রক্তঝরা জুলাই আন্দোলনের চেতনাও।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের এই ভূমিকাটি বেশ আবর্তনসংকুল ও বিবর্তনহীন।

২০২২ সালের ১৭ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক আবাসিক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। পরদিন প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। তবে ঘটনাটি আলোচনা ও আন্দোলনের জন্ম দেয় যখন প্রশাসন ছাত্রী হলের ওপর সান্ধ্য আইন জারি করে। যেন বলা হলো—সন্ধ্যার পর ছাত্রীরা হল থেকে বের হয় বলেই এমন ঘটনা ঘটে। এরপর অবশ্য ছাত্রীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রশাসন তার সিদ্ধান্ত বদলাতে ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়।

২০১৭ সালের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক ছাত্রী চিকিৎসকের হাতে হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিকিৎসা সংক্রান্ত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলে, ‘সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার বাইরে একান্ত জরুরি অবস্থা ব্যতিরেকে কোনো মহিলা/ছাত্রী রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে না।’

বলা বাহুল্য, সেদিনও তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে ছাত্রীরা এই সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য করে প্রশাসনকে। তবে এ তিনটি বড় ঘটনা বাদেও আরও অনেক ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে ফেরে। যার অনেকগুলোতে কোনো অভিযোগ বা বিচার চাওয়ার ঝামেলাতেই জড়াতে চাননি ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। কারণ, ইতিহাস থেকে তাঁরা শিখেছেন আঙুলটি তাঁদের দিকেই উঠবে।

এসব ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অপর পক্ষে ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক বা বহিরাগত যে–ই থাকুক না কেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীদের প্রশ্নবিদ্ধ বা দায়ী করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে অত্যন্ত সফল ভূমিকা পালন করে গেছে। এসব দেখে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রের আক্ষেপ মনে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি দুঃখ করে লিখেছিলেন, ‘নারীমুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাই।’

বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা সুবিচার পাওয়ার জন্য বারবার আন্দোলন ও প্রতিবাদের যে ক্লান্তিকর পথ পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন, তা তাঁদের শিক্ষাজীবন, মনস্তত্ত্ব এবং বিকাশের পথকেও বাধাগ্রস্ত করছে। উচ্চতর গবেষণা বা রাষ্ট্রের জটিল সমস্যার সমাধান আমরা এসব শিক্ষার্থীর কাছে কীভাবে আশা করব, যাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই তাঁরা নিরাপদ নন?

বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সমাজ ও রাষ্ট্রের বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং সঠিক প্রশ্নটি করা। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি যে লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে, তা কেবল নারীদের নিরাপত্তা ও আত্মমর্যাদার ওপর আঘাতই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ডকে ক্ষুণ্ন করছে।

নুসরাত জাহান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রথম আলোর সহসম্পাদক

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ

একজন উপদেষ্টার বিরুদ্ধে কুমিল্লার মুরাদনগরে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ করেছেন একদল ব্যক্তি। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘মুরাদনগর উপজেলা সনাতন ধর্মাবলম্বী জনতা’ ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলন হয়। সেখানে মুরাদনগর থেকে আসা সনাতন ধর্মের কয়েকজন কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে যুব ও ক্রীড়া এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বাবা ও চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসনের অভযোগ করা হয়। তা ছাড়া পুলিশকে ব্যবহার করে নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলে এই উপদেষ্টার পদত্যাগও দাবি করেন সংবাদ সম্মেলনকারীরা। তবে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেছেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্য ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এলাকার সাবেক একজন সংসদ সদস্যের অনুসারীরা উদ্দেশ্যমূলকভাবে এসব করছেন।

সংবাদ সম্মেলনে ‘সর্ব ধর্ম মিশন’র প্রচারক পরিচয় দিয়ে দুলাল দেবনাথ বলেন, ‘বিগত ১৫ বছর ইউসুফ আবদুল্লাহর (আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন) নেতৃত্বে সন্ত্রাসী কার্যক্রম করা আওয়ামী লীগের দোসরেরা আজ উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবার ও ভাইয়ের নেতৃত্বে মুরাদনগরে পুনর্বাসিত হওয়ার চেষ্টা করছে এবং কায়কোবাদ (বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ) সাহেবের সুনামকে নষ্ট করার জন্য তারা বিভিন্নভাবে চেষ্টা করছে। ক্ষমতার অপব্যবহারের কারণে আমরা তার (উপদেষ্টার) পদত্যাগ চাই।’

অভিযোগ করে দুলাল দেবনাথ আরও বলেন, ‘উপদেষ্টা আসিফ ভুঁইয়ার বাবা আজকে আমার বাড়িতে দুজন হিন্দু কমিউনিটির লোক পাঠিয়ে বাধা সৃষ্টি করেছে, আমি যেন এই প্রোগ্রামে না আসতে পারি। এ ছাড়া আমরা মুরাদনগর থেকে ঢাকায় আসার পথে কুমিল্লার দাউদকান্দি টোল প্লাজায় গাড়ির কাগজপত্র চেকের (যাচাই বাছাই) নামে এক ঘণ্টা আটকে রাখা হয়।’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মুরাদনগর উপজেলা পূজা উদ্‌যাপন কমিটির সহসভাপতি দীন দয়াল পাল। তিনি বলেন, মুরাদনগর উপজেলায় যানজট নিরসনে সাবেক পাঁচবারের এমপি মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদ স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ দেন। তবে পুলিশকে ব্যবহার করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদের বাবা, চাচাতো ভাই ছাত্রলীগ নেতা–কর্মীদের দিয়ে স্বেচ্ছাসেবকদের মারধর করায়। পরে এই স্বেচ্ছাসেবকদের পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এর প্রতিবাদে থানার সামনে বিক্ষোভ মিছিল হয় এবং সেদিন সেনাবাহিনী ও পুলিশের সঙ্গে রাতভর সালিসও চলে। অথচ রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশের সালিসে বসে বিষয়টি সমাধান করতে আসা বিএনপি নেতা–কর্মীদের বিরুদ্ধে পুলিশ মামলা দেয় এবং পবিত্র ঈদ ও রমজানজুড়ে পুরো মুরাদনগরে পুলিশ ও ডিবি আতঙ্ক বিরাজ করে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মুরাদ নগর ইউনিয়ন পূজা উদ্‌যাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক রঞ্জন রায়, কামাল্লা দেবপরি মন্দির কমপ্লেক্সের সাংস্কৃতিক সম্পাদক বিপ্লব কুমার সাহা, নিবাস চন্দ্র ঘোষ, দয়ানন্দ ঠাকুর।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া প্রথম আলোকে বলেন, অভিযোগগুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন এর আগেও একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছিল। আমার কাছে যে তথ্য রয়েছে, কয়েকজন সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতাকে সামনে রেখে এটি করা হচ্ছে, যারা সাবেক এমপি কায়কোবাদের সঙ্গে রাজনীতি করেন। সনাতন ধর্মাবলম্বী অনেককে এসি বাসে করে ঢাকায় নিয়ে আসা হয়েছে এবং তাদের প্রত্যেককে নির্দিষ্ট পরিমাণ একটা অর্থ দেওয়া হয়েছে।’

বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য কায়কোবাদের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ করে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, ‘বরং কায়কোবাদ আওয়ামী লীগের সদ্য সাবেক এমপি জাহাঙ্গীরের সঙ্গে থেকে চাঁদাবাজি, মাদক ব্যবসা, বালু উত্তোলন, মাটি উত্তোলনের অবৈধ কাজগুলোর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন করছেন এবং সবাইকে নিয়ে রাজনীতি করছেন।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘একটা ভিডিওতে দেখেছি, যারা এক সময় কায়কোবাদের ফাঁসি চেয়ে মিছিল করেছিল, তারা এখন কায়কোবাদের সঙ্গে ঘোরাঘুরি করেন। যদি আপনি মুরাদনগরের সাধারণ মানুষকে জিজ্ঞাসা করেন কী অবস্থা এলাকার? তাহলে তারা চাঁদাবাজ ও মাদক ব্যবসায়ীদের যে অত্যাচার, সে কথা আপনাদের বলবে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে গুরুত্ব আরোপ
  • অফিসে ঢুকে প্রধান শিক্ষককে জুতাপেটা করার অভিযোগ
  • মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার বিচার দাবি ১০৪ নাগরিকের
  • গোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি
  • শারীরিক শাস্তি শিশুর বিকাশে বড় বাধা, বিলোপ জরুরি
  • সন্তানের বন্ধু হতে চাইলে
  • উপদেষ্টার বিরুদ্ধে ‘ফ্যাসিবাদী আচরণের’ অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বললেন আসিফ মাহমুদ
  • সবুজ এলাকায় পুলিশের প্রাণঘাতী অস্ত্রের ব্যবহার কম হয়
  • গোবিপ্রবিতে কর্মকর্তাদের শৃঙ্খলাবিষয়ক কর্মশালা শুরু
  • মূলধারার শিক্ষার সঙ্গে কারিগরি শিক্ষা সম্পৃক্ত করা দরকার: শিক্ষা উপদেষ্টা