ভিকটিম ব্লেমিংয়ের রাজনীতি বনাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
Published: 27th, February 2025 GMT
নাসিরুদ্দিন হোজ্জার বাড়িতে একবার চুরি হলো। সারা দিন পর বেচারা বাড়ি ফিরে দেখেন দরজা ভাঙা, ঘরে কিছুই নেই। প্রতিবেশী যারা সান্ত্বনা দিতে এসেছিল, সবার মুখে একই কথা, ‘তুমি ঘরে ভালো করে তালা দাওনি নিশ্চয়ই। আরে দরজাটা তো একটু শক্তপোক্ত বানাতে হয়।’ কেউ বলল, ‘সারা দিন এমন করে ঘর খালি ফেলে রাখলে চুরি তো হবেই। এত বেখেয়াল হলে চলে।’ সবার সব কথা শুনে হোজ্জা বেশ অবাক হয়ে বললেন, ‘চুরি হলো আমার ঘরে। সবাই আমাকেই দুষছ। কই যে চোর চুরি করল তাকে তো একবারও কিছু বলছ না!’
হোজ্জাকে একবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আনা গেলে ভালো হতো। ৭০০ বছর পরেও এখানে ‘চুরি যার ঘরে, দোষ তার ঘাড়ে’ সংস্কৃতি অক্ষুণ্ন রাখার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে নিয়ে বেশ কিছু গল্প ফেঁদে ফেলতে পারতেন তিনি।
এখনকার কেতাবি ভাষায় এই বিষয়কে বলা হয় ভিকটিম ব্লেমিং। অর্থাৎ ঘটনার দায় ভুক্তভোগীর ঘাড়ে চাপানো। আবার এই দায় চাপানোর সুবিধার্থে বহুমাত্রিক কোনো ঘটনার বিভিন্ন মাত্রাকে অস্বীকার করে তার একমাত্রিক বয়ানও তৈরি করা হয়। যাকে বলা হয় গ্যাসলাইটিং। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে গত কয়েক বছরে বিশেষত নারী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া একাধিক ঘটনা ও তার প্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ভূমিকার ধরন দেখলে মনে হয় ভিকটিম ব্লেমিং ও গ্যাসলাইটিং বিষয়টিকে এক অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার অধ্যবসায় চলছে সেখানে।
কখনো ছাত্রীদের চিকিৎসা গ্রহণের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া, কখনোবা ছাত্রী হলের ওপর জারি করা সান্ধ্য আইন। আর এবারের ঘটনায় তো নজির সৃষ্টি করে ফেলেছে চবি প্রশাসন। একযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ জন নারী শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে। কারণ, তাঁরা নিজেদের হল এলাকায় ভাঙচুরের প্রতিবাদ করেছিলেন।
৫ ফেব্রুয়ারি রাতের এ ঘটনায় পক্ষ ছিল চারটি। মারমুখী ছাত্রদের একটি পক্ষ, নিজেদের সাংবাদিক দাবি করা কতিপয় ছাত্র, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শেখ হাসিনা হলের আবাসিক ছাত্রীরা।
আরও পড়ুনচবিতে অভ্যুত্থানের মেয়েরা কেন ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ ও বহিষ্কৃত১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হল এলাকা থেকে ছাত্রী হল বেশ খানিকটা দূরেই অবস্থিত বলা যায়। যেখানে সেই রাতে ছাত্ররা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটান, সেটি তিনটি ছাত্রী হলের মধ্যবর্তী সীমানাপ্রাচীর–বেষ্টিত একটি স্থান। পুরো ঘটনায় সাদা চোখেই প্রথম যে প্রশ্নটা ওঠা উচিত, তা হলো রাত সাড়ে ১১টার দিকে নিজেদের হল এলাকা ছেড়ে এতগুলো ছাত্র কেন প্রবেশ করলেন ছাত্রী হল এলাকায়? কে বা কারা তাঁদের এই বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির নেতৃত্ব বা ইন্ধন জোগাল?
অথচ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ভিডিও চিত্রে আমরা দেখলাম, বিশৃঙ্খলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসা প্রশাসনের অবস্থান আবাসিক ছাত্রীদের মুখোমুখি। প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উত্থিত আঙুলের সামনে উত্তেজিত ছাত্ররা নয়; বরং দাঁড়িয়ে আছেন নিরাপত্তাপ্রত্যাশী আতঙ্কিত ছাত্রীরা।
এরপর ছাত্রীদের সঙ্গে প্রশাসনের বাগ্বিতণ্ডা এবং প্রক্টরিয়াল বডির একজনকে শারীরিক আঘাত করার যে ঘটনা ঘটে, তাতেও অবাক হতে হয়। ভাঙচুর এবং ছাত্রদের মারমুখী আচরণ দেখে আতঙ্কিত ছাত্রীরাই সেদিন রাতে প্রক্টরকে ফোন করে নিরাপত্তা চেয়েছিলেন। অর্থাৎ ঘটনাস্থলে বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার কথা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ছাত্রদের দলটির। বাধা দিতে গিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রশাসনের দ্বন্দ্ব হতে পারত। কিন্তু আমরা দেখলাম ঘটনাস্থলে বাধাপ্রাপ্ত হলেন যাঁরা নিরাপত্তা চেয়ে প্রশাসনকে ডেকে আনলেন তাঁরাই। তদন্তও হলো তাঁদের বিরুদ্ধে, শাস্তিও পেলেন তাঁরাই।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সমাজ ও রাষ্ট্রের বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং সঠিক প্রশ্নটি করা। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি যে লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে, তা কেবল নারীদের নিরাপত্তা ও আত্মমর্যাদার ওপর আঘাতই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ডকে ক্ষুণ্ন করছে।সেই মধ্যরাতে প্রক্টরিয়াল বডির সদস্যরা যা করলেন আমাদের অবাক হতেই হয়। চোখ রাঙিয়ে, আঙুল নাচিয়ে নিরাপত্তাপ্রত্যাশী ছাত্রীদের অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করলেনই, অন্যায়ের শিকার ছাত্রীদের পক্ষে যারা দাঁড়ালেন, তাঁদের নিয়েও প্রক্টর নিজের ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে যা লিখলেন তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। প্রক্টরিয়াল বডির আচরণ, মানসিকতা, তদন্ত ও বিচারের বিষয়টি সারাদেশে সমালোচিত হওয়ার পরও ২২ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেটের বিশেষ সভাতে সেখানে ভুক্তভোগী ওই ১০ জন ছাত্রীর বিচারই করা হলো। বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী ছাত্র, কতিপয় সাংবাদিক বা প্রক্টরদের কাউকেই বিচারের আওতায় আনা হলো না। নারীর প্রতি স্বৈরাচার আর বৈষম্যের এমন আচরণ শুধু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় নয়, কলঙ্কিত হয়েছে রক্তঝরা জুলাই আন্দোলনের চেতনাও।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি প্রশাসনের এই ভূমিকাটি বেশ আবর্তনসংকুল ও বিবর্তনহীন।
২০২২ সালের ১৭ জুলাই রাতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাঁচ তরুণের হাতে এক আবাসিক ছাত্রী যৌন নিপীড়ন ও মারধরের শিকার হন। পরদিন প্রক্টরের কাছে অভিযোগ করেন ওই ছাত্রী। তবে ঘটনাটি আলোচনা ও আন্দোলনের জন্ম দেয় যখন প্রশাসন ছাত্রী হলের ওপর সান্ধ্য আইন জারি করে। যেন বলা হলো—সন্ধ্যার পর ছাত্রীরা হল থেকে বের হয় বলেই এমন ঘটনা ঘটে। এরপর অবশ্য ছাত্রীদের তীব্র আন্দোলনের মুখে প্রশাসন তার সিদ্ধান্ত বদলাতে ও দোষীদের বিচার নিশ্চিত করতে বাধ্য হয়।
২০১৭ সালের মার্চ মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে চিকিৎসা নিতে গিয়ে এক ছাত্রী চিকিৎসকের হাতে হেনস্তার শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর ২০ মার্চ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চিকিৎসা সংক্রান্ত এক জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলে, ‘সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার বাইরে একান্ত জরুরি অবস্থা ব্যতিরেকে কোনো মহিলা/ছাত্রী রোগীর প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে না।’
বলা বাহুল্য, সেদিনও তীব্র প্রতিবাদ ও আন্দোলনের মুখে ছাত্রীরা এই সিদ্ধান্ত বদলাতে বাধ্য করে প্রশাসনকে। তবে এ তিনটি বড় ঘটনা বাদেও আরও অনেক ঘটনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মুখে মুখে ফেরে। যার অনেকগুলোতে কোনো অভিযোগ বা বিচার চাওয়ার ঝামেলাতেই জড়াতে চাননি ভুক্তভোগী ছাত্রীরা। কারণ, ইতিহাস থেকে তাঁরা শিখেছেন আঙুলটি তাঁদের দিকেই উঠবে।
এসব ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, অপর পক্ষে ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসক বা বহিরাগত যে–ই থাকুক না কেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তার ভুক্তভোগী নারী শিক্ষার্থীদের প্রশ্নবিদ্ধ বা দায়ী করার ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে অত্যন্ত সফল ভূমিকা পালন করে গেছে। এসব দেখে বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক ছাত্রের আক্ষেপ মনে পড়ে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি দুঃখ করে লিখেছিলেন, ‘নারীমুক্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চাই।’
বিষয়টি অত্যন্ত হতাশাজনক। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের নারী শিক্ষার্থীরা সুবিচার পাওয়ার জন্য বারবার আন্দোলন ও প্রতিবাদের যে ক্লান্তিকর পথ পাড়ি দিতে বাধ্য হচ্ছেন, তা তাঁদের শিক্ষাজীবন, মনস্তত্ত্ব এবং বিকাশের পথকেও বাধাগ্রস্ত করছে। উচ্চতর গবেষণা বা রাষ্ট্রের জটিল সমস্যার সমাধান আমরা এসব শিক্ষার্থীর কাছে কীভাবে আশা করব, যাঁদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই তাঁরা নিরাপদ নন?
বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজ সমাজ ও রাষ্ট্রের বৈষম্যকে প্রশ্নবিদ্ধ করা এবং সঠিক প্রশ্নটি করা। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি যে লিঙ্গবৈষম্যমূলক আচরণের পুনরাবৃত্তি ঘটাচ্ছে, তা কেবল নারীদের নিরাপত্তা ও আত্মমর্যাদার ওপর আঘাতই নয়, বরং বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবেও প্রতিষ্ঠানটির মানদণ্ডকে ক্ষুণ্ন করছে।
নুসরাত জাহান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী এবং প্রথম আলোর সহসম্পাদক
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু : পুলিশের দাবি, বাড়ির ছাদ থেকে পড়েছেন, হত্যার অভিযোগ পরিবারের
ভোলা সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সহসভাপতি সাইফুল্লাহ আরিফকে (৩০) হত্যা করা হয়েছে বলে তাঁর পরিবার অভিযোগ করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে তাঁর বাবা বশির উদ্দিন (মাস্টার) এই অভিযোগ করেন।
এ সময় বশির উদ্দিন বলেন, পুলিশ দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ার কোনো সুযোগ নেই; সেখানে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক।
এর আগে গত শনিবার পুলিশ সুপার শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, প্রাথমিক তদন্তের তথ্য অনুযায়ী অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে সাইফুল্লাহ আরিফ মারা গেছেন।
সাইফুল্লাহ আরিফ ভোলা পৌরসভার কালীবাড়ি রোডে নবী মসজিদ গলি এলাকার বশির উদ্দিনের ছেলে। গত ৩১ আগস্ট ভোরে নিজ বাড়ির সামনে থেকে সাইফুল্লাহ আরিফের লাশ উদ্ধার করা হয়।
আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বশির উদ্দিন বলেন, ‘আমার ছেলে দুর্ঘটনায় নয়, তাঁকে হত্যা করা হয়েছে। এর কিছু প্রমাণ আছে। আরিফের শরীরে একাধিক কাটা ও ভাঙা জখম ছিল, এমনকি হাতের রগ কাটা ছিল। পুলিশের দাবি করছে, ছাদ থেকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু ছাদ থেকে পড়ে মৃত্যুর সুযোগ নেই, কারণ, ছাদে বাঁশের বেড়া ও প্রতিটি তলায় ব্যালকনি ছিল। পুলিশ সুপার আমার ছেলেকে নেশাগ্রস্ত আখ্যা দিলেও তাঁর কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেননি। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছাড়া পুলিশ কীভাবে এমন কথা বলতে পারে। পুলিশের আচরণ শুরু থেকেই সন্দেহজনক। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
বশির উদ্দিন আরও বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফ কোনো ধরনের মাদকের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। সে ছাত্রলীগের সহসভাপতি হলেও কখনো ক্ষমতার অপব্যবহার করেনি। হত্যাকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায় পুলিশ সত্য গোপন করছে। সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করতে মামলাটি সিআইডি বা পিবিআইয়ের কাছে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বশির উদ্দিন বলেন, তাঁর ছেলের সঙ্গে অনেকের বিরোধ ছিল। তবে জমিজমার বিরোধ ও মাদক ব্যবসার বিরোধ নিয়ে তাঁর ছেলে খুন হয়নি। এগুলোর সঙ্গে সে জড়িত ছিল না।
শনিবার পুলিশ শরীফুল হক তাঁর কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সাইফুল্লাহ আরিফের মৃত্যুর রহস্য উদ্ঘাটনে প্রাথমিক তদন্ত শেষে জানা যায়, তিনি অসতর্কতাবশত নিজ বাড়ির ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে মারা গেছেন। ৩০ আগস্ট দিবাগত রাত অনুমান ১২টা ১৫ মিনিটে রাতের খাবার শেষে সাইফুল্লাহসহ পরিবারের সবাই নিজ নিজ ঘরে ঘুমাতে যান। ভোর ৫টা ১০ মিনিটে ফজরের নামাজের জন্য বের হওয়ার সময় তাঁর বাবা বশির উদ্দীন (৭০) বাড়ির সামনে গেটের পাশে রক্তাক্ত অবস্থায় ছেলের মরদেহ দেখতে পান। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ভোলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। সুরতহালে দেখা যায়, আরিফের মাথা ও হাতে গুরুতর আঘাত ছিল। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, আরিফ দীর্ঘদিন ধরে নেশায় আসক্ত ছিলেন এবং হতাশাগ্রস্ত অবস্থায় প্রায়ই ছাদে যেতেন। ঘটনার দিন রাতেও তিনি ছাদে ওঠেন এবং অসতর্কতাবশত রেলিংবিহীন অংশ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান।
পরিবারের অভিযোগ সম্পর্কে আজ দুপুরে পুলিশ সুপার শরীফুল হক মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই ঘটনায় তদন্ত চলমান। সংবাদ সম্মেলনে প্রাথমিক তদন্তের কথা জানানো হয়েছে। তদন্তে তথ্য সংযোগ-বিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’