বিধানসভা নির্বাচনে ২১৫ আসন পেতেই হবে: মমতা ব্যানার্জি
Published: 27th, February 2025 GMT
পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলে বা তার আগে অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে।
তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে নির্বাচনী প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। এসময় দলীয় কর্মীদের নির্বাচনী লক্ষ্য বেঁধে দেন তিনি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী বিধানসভা ভোটে ২১৫টা আসন পেতেই হবে। আসন আরো বেশি পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ২১৫টা আসনের কম কোনো মতেই নয়।
আরো পড়ুন:
বরেণ্য অভিনেতা মুরালি গ্রেপ্তার
স্বাগতিক পাকিস্তান নাকি ভারত!
মমতা বলেন, ২০২১ সালে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ২১৪ আসনের রেকর্ড দলকে ভাঙতে হবে ২০২৬-এ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মীরা কী করবেন, কী করবেন না, তাও পয়েন্ট ধরে বুঝিয়ে দেন তিনি। পরীক্ষার আগে শিক্ষক যেমন ‘সাজেশন’ দেন, বলা যায় তৃণমূল দলনেত্রী সেভাবেই নেতাজি ইনডোরে স্টেডিয়ামে ক্লাস নিলেন দলীয় কর্মীদের। পাশাপাশি ভোটার লিস্টের স্বচ্ছতার প্রশ্নে ভারতের নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নেওয়ার পাশাপাশি বিজেপিকে টার্গেট করেন মমতা।
মমতা বলেন, এবার বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের জামানত জব্দ করার পালা।’
সক্রিয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতার স্পষ্ট বার্তা, যারা ভালো কাজ করছেন তাদের পদোন্নতি আমরা করব। কিন্তু যারা কাজ করেন না, শুধু ভাষণ দেন, বিবৃতি দেন, পার্টির সমালোচনা করেন, বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করেন না, মানুষের পাশে থাকেন না, তাদের জন্য আমার কোনো দয়ামায়া নেই।
তিনি বলেন, দলীয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। দলকে আরো শক্তিশালী করতে হবে। এলাকায় কে আসছে, না আসছে নজর রাখতে হবে দলীয় কর্মীদের। এলাকায় যাতে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, নজর রাখতে হবে সেদিকে।
কর্মীদের নির্বাচনী টিপস দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, ভোটের আগে ভোটার লিস্টে কারচুপি করেছে কমিশন। ভোটার তালিকা থেকে আঁধার কার্ড সব বিষয়ে কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা।
নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতার হুঁশিয়ারি, এই বিষয়ে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আগামীদিনে নির্বাচনের কমিশনের দপ্তরে ধর্না দেবেন তিনি।
নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মীসভা থেকে মমতার বার্তা, ভোটার তালিকা পরিষ্কার করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি এজেন্সিকে দিয়ে ভোটার তালিকা অনলাইনে করছে, আর সেখানে কারসাজি হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করেনি। একই এপিক কার্ডে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারের জায়গায় অন্য রাজ্যের ভোটারের তুলেছে।
প্রামাণ্য নথি হিসেবে ভোটার লিস্ট হাতে নিয়ে মমতার অভিযোগ, ভোটারদের কার্ডে রদবদল করে বাংলার ভোটে ভিন রাজ্য থেকে লোক নিয়ে এসে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বক্তব্য রাখার সময়ে, মুর্শিদাবাদের রানিনগরের এক বাসিন্দা সইদুল ইসলামের নাম তোলেন তিনি। তার যে এপিক নম্বর রয়েছে, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে হরিয়ানার কোনো এক সনিয়া দেবীর নাম।
রানিনগরেরই আরো এক বাসিন্দা মোহাম্মদ আলি হোসেন, তার এপিক নম্বরের সঙ্গেও একই কাণ্ড করা হয়েছে বলে উদাহরণ দেন মমতা। তার অভিযোগ, স্যাম্পল সার্ভে করে যা নথি হাতে এসেছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটারের জায়গায় বহু ক্ষেত্রে হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও বিহারের নাম ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই কাজের পিছনে কিছু এআরও এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন।
ভোটার তালিকায় এমন গরমিল করেই দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে বিজেপি জিতেছে বলে ইঙ্গিত দেন মমতার। তিনি বলেন, দিল্লি পারেনি, মহারাষ্ট্র পারেনি, বাংলায় আমরা ধরব, জবাব দেবো। আমি আপনাদের রহস্যটা উন্মোচন করে দিলাম। এর পরের কাজটা আপনাদের। বাংলার মানুষকে বলব, ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করুন। ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন।
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ম দ র ব ধ নসভ মমত র ন মমত
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?