পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচন ২০২৬ সালের মার্চ-এপ্রিলে বা তার আগে অনুষ্ঠিত হবে। ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেস এরই মধ্যে নির্বাচনী প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে। 

তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা ব্যানার্জি আজ বৃহস্পতিবার দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কলকাতার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে নির্বাচনী প্রস্তুতি বৈঠক করেছেন। এসময় দলীয় কর্মীদের নির্বাচনী লক্ষ্য বেঁধে দেন তিনি। 

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আগামী বিধানসভা ভোটে ২১৫টা আসন পেতেই হবে। আসন আরো বেশি পাওয়ার চেষ্টা করতে হবে। ২১৫টা আসনের কম কোনো মতেই নয়।

আরো পড়ুন:

বরেণ্য অভিনেতা মুরালি গ্রেপ্তার

স্বাগতিক পাকিস্তান নাকি ভারত!

মমতা বলেন, ২০২১ সালে সর্বশেষ বিধানসভা নির্বাচনে পাওয়া ২১৪ আসনের রেকর্ড দলকে ভাঙতে হবে ২০২৬-এ। নির্বাচনকে সামনে রেখে কর্মীরা কী করবেন, কী করবেন না, তাও পয়েন্ট ধরে বুঝিয়ে দেন তিনি। পরীক্ষার আগে শিক্ষক যেমন ‘সাজেশন’ দেন, বলা যায় তৃণমূল দলনেত্রী সেভাবেই নেতাজি ইনডোরে স্টেডিয়ামে ক্লাস নিলেন দলীয় কর্মীদের। পাশাপাশি ভোটার লিস্টের স্বচ্ছতার প্রশ্নে ভারতের নির্বাচন কমিশনকে এক হাত নেওয়ার পাশাপাশি বিজেপিকে টার্গেট করেন মমতা।  

মমতা বলেন, এবার বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএমের জামানত জব্দ করার পালা।’

সক্রিয় কর্মীদের উদ্দেশ্যে মমতার স্পষ্ট বার্তা, যারা ভালো কাজ করছেন তাদের পদোন্নতি আমরা করব। কিন্তু যারা কাজ করেন না, শুধু ভাষণ দেন, বিবৃতি দেন, পার্টির সমালোচনা করেন, বিজেপি-সিপিএম-কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াই করেন না, মানুষের পাশে থাকেন না, তাদের জন্য আমার কোনো দয়ামায়া নেই।

তিনি বলেন, দলীয় কর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে মানুষের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে হবে। দলকে আরো শক্তিশালী কর‍তে হবে। এলাকায় কে আসছে, না আসছে নজর রাখতে হবে দলীয় কর্মীদের। এলাকায় যাতে কোনো অনভিপ্রেত ঘটনা না ঘটে, নজর রাখতে হবে সেদিকে।

কর্মীদের নির্বাচনী টিপস দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে মমতার অভিযোগ, ভোটের আগে ভোটার লিস্টে কারচুপি করেছে কমিশন। ভোটার তালিকা থেকে আঁধার কার্ড সব বিষয়ে কেলেঙ্কারি হয়েছে বলে দাবি করেন মমতা। 

নির্বাচন কমিশনের স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মমতার হুঁশিয়ারি, এই বিষয়ে যদি কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হয় তাহলে আগামীদিনে নির্বাচনের কমিশনের দপ্তরে ধর্না দেবেন তিনি।

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূলের কর্মীসভা থেকে মমতার বার্তা, ভোটার তালিকা পরিষ্কার করতে হবে। নির্বাচন কমিশন একটি এজেন্সিকে দিয়ে ভোটার তালিকা অনলাইনে করছে, আর সেখানে কারসাজি হচ্ছে। মাঠ পর্যায়ে গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ করেনি। একই এপিক কার্ডে পশ্চিমবঙ্গের ভোটারের জায়গায় অন্য রাজ্যের ভোটারের তুলেছে।

প্রামাণ্য নথি হিসেবে ভোটার লিস্ট হাতে নিয়ে মমতার অভিযোগ, ভোটারদের কার্ডে রদবদল করে বাংলার ভোটে ভিন রাজ্য থেকে লোক নিয়ে এসে ভোট দেওয়ার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। বক্তব্য রাখার সময়ে, মুর্শিদাবাদের রানিনগরের এক বাসিন্দা সইদুল ইসলামের নাম তোলেন তিনি। তার যে এপিক নম্বর রয়েছে, তার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়েছে হরিয়ানার কোনো এক সনিয়া দেবীর নাম।

রানিনগরেরই আরো এক বাসিন্দা মোহাম্মদ আলি হোসেন, তার এপিক নম্বরের সঙ্গেও একই কাণ্ড করা হয়েছে বলে উদাহরণ দেন মমতা। তার অভিযোগ, স্যাম্পল সার্ভে করে যা নথি হাতে এসেছে, তা চমকে দেওয়ার মতো। একই এপিক নম্বরে বাংলার ভোটারের জায়গায় বহু ক্ষেত্রে হরিয়ানা, পাঞ্জাব ও বিহারের নাম ঢোকানো হয়েছে বলে অভিযোগ। আর এই কাজের পিছনে কিছু এআরও এবং ডেটা এন্ট্রি অপারেটরের দিকে আঙুল তুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন। 

ভোটার তালিকায় এমন গরমিল করেই দিল্লি ও মহারাষ্ট্রে বিজেপি জিতেছে বলে ইঙ্গিত দেন মমতার। তিনি বলেন, দিল্লি পারেনি, মহারাষ্ট্র পারেনি, বাংলায় আমরা ধরব, জবাব দেবো। আমি আপনাদের রহস্যটা উন্মোচন করে দিলাম। এর পরের কাজটা আপনাদের। বাংলার মানুষকে বলব, ভোটার তালিকা যাচাই-বাছাই করুন। ডেটা অপারেটরদের ওপর লক্ষ্য রাখুন।

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর কর ম দ র ব ধ নসভ মমত র ন মমত

এছাড়াও পড়ুন:

অতিরিক্ত মোটা হওয়ায় যাত্রীকে তুলতে অস্বীকৃতি উবার চালকের

চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সম্প্রতি রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান উবারের একটি গাড়ি ডেকেছিলেন মাইকেল। গাড়িটি আসার পর দরজা খুলে ভেতরে ঢুকতে যেতেই বাধল বিপত্তি। ‘অতিরিক্ত মোটা’ হওয়ায় চালক তাঁকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানান। যুক্তরাষ্ট্রে ঘটে যাওয়া এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।

গেমিং প্ল্যাটফর্ম টুইচের জনপ্রিয় স্ট্রিমার মাইকেল। ওই প্ল্যাটফর্মে তাঁর ৬০ হাজারের বেশি সাবস্ক্রাইবার রয়েছে। তিনি তাঁর কল অব ডিউটি গেমপ্লের জন্য পরিচিত।

মাইকেল সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। ভিডিওর শিরোনামে তিনি লিখেছেন, ‘আমি মজা করছি না। আমার উবার চালক বলেছেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। তাই তাঁর গাড়িতে আমাকে নেওয়া সম্ভব নয়। এমনকি তিনি আমার দিকে বন্দুক তাক করার হুমকিও দিয়েছেন।’ মাইকেলের ওই ভিডিও পাঁচ কোটিবারের বেশি দেখা হয়েছে।

ভিডিওতে দেখা যায়, মাইকেল উবারের গাড়িচালককে বলছেন, ‘আপনি এইমাত্র বললেন, আমি নাকি অনেক বেশি মোটা। আমি কিন্তু আপনার ভিডিও করছি।’ উত্তরে উবার চালক নারী বলেন, ‘এটা যুক্তি আর বাস্তবতার ব্যাপার। আর আমি এটা বলার অধিকার রাখি।’ কিন্তু বাক্যটি শেষ করার আগেই মাইকেল তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বলেন, ‘না, আপনি এটা বলতে পারেন না।’ তখন ওই নারী হাত উঁচিয়ে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি পারি। এটা আমার গাড়ি। আপনি এখান থেকে চলে যান।’

বাগ্‌বিতণ্ডার একপর্যায়ে ওই উবার চালক বলেন, ‘আপনি কি চান, আমি আমার বন্দুকটা বের করি?’ এ কথা শোনার সঙ্গে সঙ্গে মাইকেল গাড়ির দরজা বন্ধ করে সেখান থেকে চলে যান। এক্সে দেওয়া অন্য একটি পোস্টে মাইকেল বলেন, এ ঘটনার কারণে তিনি সেদিন চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেননি।

উবারের নীতি অনুযায়ী, চালকেরা বৈধ কারণ ছাড়া কোনো যাত্রীকে গাড়িতে তুলতে অস্বীকৃতি জানাতে পারবেন না। ওজন, লিঙ্গ, বর্ণ কিংবা ধর্মের ভিত্তিতে কোনো যাত্রীর সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ করা সম্পূর্ণ নিষেধ।

এই ঘটনা ভাইরাল হওয়ার পর উবার চালকের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ