ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই ইস্টার্ন ব্যাংকের বিরুদ্ধে মামলা
Published: 27th, February 2025 GMT
এক গ্রাহকের অবৈধ চাপে নতিস্বীকার না করায় ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করতেই ইস্টার্ন ব্যাংক পিএলসির (ইবিএল) পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনার কমিটিকে জড়িয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। এমন দাবি করেছেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী আলী রেজা ইফতেখার। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ন ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে একথা বলেন তিনি। আলী রেজা ইফতেখার আরও বলেন, এ মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে ইস্টার্ন ব্যাংক আইনি পদক্ষেপ নেবে।
ব্যাংকটির গ্রাহক মুর্তজা আলীর দায়ের করা মামলার বিষয়ে অবস্থান জানাতে আয়োজিত এ সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন ব্যাংকের লিগ্যাল রিটেইনার ব্যারিস্টার ওমর সাদাত এবং কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্স বিভাগপ্রধান জিয়াউল করিম।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সম্প্রতি একটি গ্রাহকের দায়ের করা মামলার বিষয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকের অবস্থান স্পষ্ট করতে চায় ইবিএল। মামলাটি গত ২৬ ফেব্রুয়ারি দায়ের করা হয়েছে। এটি ২০১৭ সালে সংঘটিত একটি তহবিল আত্মসাতের ঘটনা সম্পর্কিত, যা ব্যাংকের একটি শাখার প্রাক্তন কর্মকর্তা বহিরাগত প্রতারকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে করেছিলেন। ওই ঘটনায় ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে এবং দোষী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। পরবর্তী সময়ে আদালত তাদের দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডসহ আর্থিক জরিমানা আরোপ করেন। তবে সাম্প্রতিক মামলাটি ঘটনার প্রায় আট বছর পর দায়ের করা হয়েছে। এতে ইস্টার্ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের অন্যায়ভাবে জড়ানো হয়েছে। যদিও তাদের সঙ্গে ২০১৭ সালের ঘটনার কোনো সম্পর্ক ছিল না। উপরন্তু, মামলাটি দায়েরকারী গ্রাহকের প্রতারকদের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার সন্দেহও তৎকালীন সময়ে উত্থাপিত হয়েছিল।
ইবিএলের পক্ষ থেকে আরও বলা হয়, প্রচলিত প্রথা অনুযায়ী গ্রাহকের দৈনন্দিন লেনদেনের সঙ্গে ব্যাংক-এর পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা থাকে না। তা সত্ত্বেও গ্রাহক, মুর্তজা আলী গত ২৬ ফেব্রুয়ারি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যাংকের সুনাম ক্ষুণ্ন করার লক্ষ্যে ২০১৭ সালের ঘটনার সঙ্গে নিজের সম্পৃক্ততা আড়াল করার অভিপ্রায়ে পরিচালনা পর্ষদ এবং ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন, যা ব্যাংকের ওপর অনৈতিক চাপ সৃষ্টি করার একটি অপচেষ্টা বলে প্রতীয়মান হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, ইস্টার্ন ব্যাংক সর্বোচ্চ করপোরেট গভর্ন্যান্স, স্বচ্ছতা এবং আইন মেনে চলার নীতিতে বিশ্বাসী। ব্যাংক তার গ্রাহক ও স্টেকহোল্ডারদের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
এর ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। সংক্ষুব্ধ চাকরিজীবীদের এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পরিপত্রে যা বলা হয়েছে
২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তবে ইতোমধ্যে একটিমাত্র টাইম স্কেল অথবা সিলেকশন গ্রেড পেলে নতুন স্কেলে শুধু একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।
পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারীদের প্রদত্ত এসব আর্থিক সুবিধা কোনোক্রমেই ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে দেওয়া হবে না। পরবর্তী সময়ে পরিপত্রের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা।
মূল পে-স্কেলে যা বলা আছে
সরকারি চাকরিতে নিচের স্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ সীমিত। এসব পদোন্নতিবঞ্চিতদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বহুল আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পুরোনো প্রথা বাতিল করে। একইসঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রথা প্রবর্তন করে। নতুন স্কেল অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এরমধ্যে একটি পাবেন চাকরির ১০ বছর পর (১১তম বছরে)। আর অপরটি ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৭তম বছরে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল পে-স্কেলে এ বিধান করা হলেও এ সুবিধা কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে মূল পে-স্কেলে উল্লেখিত নিয়ম কার্যকর করতে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূল পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার ৩ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এটি জারি করা হয়।