রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষের স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে। গত বুধবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে ভর্তি পরীক্ষা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. রবিউল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এ ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ওয়েবসাইটে তিনটি ক্যাটাগরিতে মেধাক্রম প্রকাশ করা হয়েছে। মেধাতালিকায় আসা শিক্ষার্থীরা আগামী ৮ থেকে ১৫ মার্চ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে বিভাগের পছন্দক্রম প্রদান করতে পারবেন।

এবার দুই ধাপে অনুষ্ঠিত হয়েছে রুয়েটের ভর্তি পরীক্ষা। এর আগে ৮ ফেব্রুয়ারি প্রিলিমিনারি ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমে মনোনীত ৮ হাজার ২ পরীক্ষার্থীকে নিয়ে ২০ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত পর্যায়ে ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়।

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের পর আবারও এককভাবে স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম পরিচালনা করল রুয়েট। এ বছর ১৪টি বিভাগে মোট ১ হাজার ২৩০টি সাধারণ আসন রয়েছে। এর পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রাম ও ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সংরক্ষিত ৫টি আসনসহ মোট ১ হাজার ২৩৫টি আসন রয়েছে। লিখিত পরীক্ষার মেধাতালিকার ভিত্তিতে ভর্তি–ইচ্ছুকেরা ১ হাজার ২৩০ আসনে পছন্দের বিষয়ে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন।

রুয়েট সূত্রে জানা গেছে, রুয়েট থেকে মেধাক্রমের তিনটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। এর মধ্যে ক বিভাগে ১ হাজার ২৩০ সিটের বিপরীতে ৭ হাজার ৯৩০ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি খ বিভাগ ও পার্বত্য জনগোষ্ঠীর জন্য যথাক্রমে ৩০ সিট ও ৫ সিটের বিপরীতে ৫২৪ জন ও ১৬ জনের তালিকা দেওয়া হয়েছে। প্রথম পর্যায়ে ভর্তির জন্য মেধাক্রম ১ থেকে ১ হাজার ২০০ জন এবং মেধাক্রম ১ থেকে ৩০ প্রার্থীদের সশরীর নিরীক্ষা বোর্ডে উপস্থিত হতে হবে। ১৯ মার্চ সকাল ৯টা থেকে বেলা ২টার মধ্যে তাঁদের উপস্থিত হতে হবে। সংরক্ষিত আসনের ক্ষেত্রে বান্দরবান জেলার অধিবাসী, পার্বত্য জেলাগুলো ও অন্যান্য এলাকার উপজাতি/ক্ষুদ্র জাতিসত্তা/নৃ-গোষ্ঠী মেধাক্রম ১ থেকে ১৬ প্রার্থীদেরও একই সময়ে উপস্থিত থাকতে হবে।

আরও পড়ুনবুয়েটে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ভর্তি হতে যা যা লাগবে

যাচাই-বাছাই কমিটির মাধ্যমে প্রার্থীদের সনদসহ অন্য কাগজপত্র একই দিন ১৯ মার্চ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হবে। পরদিন ২০ মার্চ সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত ১৮ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে ভর্তি হতে হবে। যে যে কাগজপত্র লাগবে—

* ভর্তি হতে শিক্ষার্থীদের অনলাইনে পূরণ করা প্রিন্টেড ভর্তি ফরমের কপি

* মাধ্যমিক বা সমমান এবং উচ্চমাধ্যমিক ও সমমান পরীক্ষার মূল সনদ ও গ্রেডশিটের মূল কপি আনতে হবে

* সবশেষ উচ্চমাধ্যমিক বা সমমানের পরীক্ষার মূল প্রশংসাপত্রের মূল কপি

* সত্যায়িত ছাড়া সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন দুই কপি ছবি

* রুয়েটের লিখিত ভর্তি পরীক্ষার প্রবেশপত্র আনতে হবে

* সংরক্ষিত আসনে ভর্তির জন্য স্থানীয় চেয়ারম্যান স্বাক্ষরিত সনদ এবং

* অন্য উপজাতিদের জন্য একই সমমানের সনদ আনতে হবে।

আরও পড়ুনএসএসসি পরীক্ষা ২০২৫-এর কোন পরীক্ষা কবে২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ র ম র জন য সমম ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ