‘স্বাগতিক পাকিস্তান, কিন্তু ঘরের মাঠের সুবিধাটা পাচ্ছে ভারত’—সম্প্রতি আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের বিশেষ সুবিধা পাওয়া নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি পোস্টের সূত্র ধরে কথাটা বলেছিলেন সাবেক ইংল্যান্ড অধিনায়ক নাসের হুসেইন। স্বাগতিক হয়েও গ্রুপ পর্বের ম্যাচ খেলতে পাকিস্তানকে যেখানে আরব আমিরাতে ভ্রমণ করতে হয়েছে, সেখানে দুবাইয়ে থেকেই নিজেদের সব ম্যাচ খেলছে ভারত।

একই মাঠ ও কন্ডিশনে খেলতে পারা এবং ভ্রমণের ধকল এড়িয়ে ভারত যে আলাদা সুবিধা পাচ্ছে, সেদিকটায় ইঙ্গিত করেই কথাটা বলেছিলেন নাসের। এবার একই সুর শোনা গেল দক্ষিণ আফ্রিকার টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান রেসি ফন ডার ডুসেনের মুখেও। তিনি বলেছেন, ভারত যে বিশেষ সুবিধা পাচ্ছে, সেটি বুঝতে ‘রকেটবিজ্ঞানী’ হওয়ার প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ ভারতের সুবিধা পাওয়ার বিষয়টি এমনিতে স্পষ্ট, সে জন্য বিশেষ কোনো গবেষণার প্রয়োজন নেই।

দক্ষিণ আফ্রিকা যেমন এখনো জানে না সেমিফাইনাল বা ফাইনালে খেলার সুযোগ পেলে তারা কোথায় খেলবে—দুবাইয়ে, নাকি পাকিস্তানে! অন্যদিকে ভারত আগে থেকেই জানে, কোন মাঠে এবং কী ধরনের কন্ডিশনে তারা সেমিফাইনাল ও ফাইনাল ম্যাচ খেলবে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এ সুবিধা একমাত্র ভারত ছাড়া আর কেউই পাচ্ছে না।

আরও পড়ুনচ্যাম্পিয়নস ট্রফি: ‘পাকিস্তান স্বাগতিক, ঘরের মাঠের সুবিধা পাচ্ছে ভারত’২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্বাগতিক দেশ পাকিস্তানে গিয়ে খেলতে অস্বীকৃতি জানায় ভারত। পরে হাইব্রিড পদ্ধতিতে এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করা হয় এবং ভারতের ম্যাচগুলো দুবাইয়ে খেলানোর সিদ্ধান্ত হয়। যে কারণ স্বাগতিক হয়েও পাকিস্তানকে ভারতের বিপক্ষে খেলার জন্য দুবাইয়ে যেতে হয়েছে।

রেসি ফন ডার ডুসেন.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ব গত ক ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ