আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে 'ক্রিকেটের জনক' ইংল্যান্ডকে হারিয়ে চারদিকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে আফগানিস্তান। মঙ্গলবার (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) আফগানদের বিপক্ষে ইংলিশরা ৮ রানে পরাজিত হয়ে আসর থেকে ছিটকে যায়। ফলে গ্রুপ ‘বি’র বাকি তিন দল বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে সেমি ফাইনালের দৌড়ে। এই গ্রুপে কি হলে কে শেষ চারে যাবে সেই সমীকরণ একবার মিলিয়ে দেখা যাক।

গ্রুপ ‘বি’তে ম্যাচ বাকি দুটি। আজ (২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) আফগানিস্তান মুখোমুখি হচ্ছে গেলবারের বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার। অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা-ইংল্যান্ড লড়বে ১ মার্চ।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া জিতলে

আরো পড়ুন:

আফগানিস্তানের নেক্সট টার্গেট অস্ট্রেলিয়া

‘শান্তর জায়গায় ধোনি বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিলেও লাভ হবে না’ 

যদি এই দুই দল জিতে যায় তাহলে একদম সহজ সমীকরণ, দুই দলই উঠে যাবে সেমি ফাইনালে। ক্রিকেটের এই দুই পরাশক্তির পইয়েন্ট হবে তখন সমান ৫। রান রেটের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে গ্রুপের শীর্ষ স্থান। প্রোটিয়াদের রানরেট (+২.

১৪০), অন্যদিকে (+০.৪৭৫) রানরেট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে আছে অজিরা।

আফগানিস্তান–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ বৃষ্টিতে ভেসে গেলে

গতকালের (২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) পাকিস্তান-বাংলাদেশ ম্যাচটি ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। তবে সেটি ছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। আজ লাহোরেও বৃষ্টির শঙ্কা আছে। যদি আফগানিস্তান–অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ পরিত্যক্ত হয় এবং দুই দল ১ পয়েন্ট করে লাভ করে, সেক্ষেত্রে অস্ট্রেলিয়া ৪ পয়েন্ট নিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করবে।

অন্যদিকে দক্ষিণ আফ্রিকা যদি ইংল্যান্ডকে হারায়, তাহলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে থাকবে তারা। আবার যদি ইংল্যান্ড জিতে যায়, তাহলে দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের পয়েন্ট দাঁড়াবে সমান ৩। সেক্ষেত্রে রান রেটর উপর নির্ভর করে একদল শেষ চারে ওঠবে। আফগানদের রান রেট (-০.৯৯০) হওয়ায় তাদেরই বাদ পড়া প্রায় নিশ্চিত।

অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ড জিতলে

অস্ট্রেলিয়া ৫ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে শেষ চারে যাবে। দক্ষিণ আফ্রিকাও ৩ পয়েন্ট নিয়ে সেমিতে পদার্পণ করবে।

আফগানিস্তান ও ইংল্যান্ড জিতলে

৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ সেরা হয়ে সেমি ফাইনালে চলে যাবে আফগানিস্তান। দ্বিতীয় স্থানের লড়াই হবে অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যে। এই দুই দলই ৩ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ পর্ব শেষ করবে। দক্ষিণ আফ্রিকা বড় ব্যবধানে নেট রান রেটে এগিয়ে। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারলে এবং অস্ট্রেলিয়া খুব ছোট ব্যবধানে হারলেই কেবল প্রোটিয়ারা ছিটকে পড়বে। উদাহরণ হিসেবে ব্লা যায়- দক্ষিণ আফ্রিকা যদি কমপক্ষে ৮৭ রানে হারে এবং একই সাথে আফগানদের দেওয়া ৩০০ রান তাড়া করতে নেমে অজিরা যদি ১ রানে হারে।  

আফগানিস্তান ও দক্ষিণ আফ্রিকা জিতলে

দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষই থাকবে। আর আফগানিস্তান ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমি ফাইনালে যাবে।

ঢাকা/নাভিদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন ফ ইন ল দ ই দল

এছাড়াও পড়ুন:

মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন

মানুষের হৃদয়ে ঈমানের আগুন জ্বালানোর প্রয়াসে শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াস কান্ধলভী (১৮৮৫-১৯৪৪) গড়ে তুলেছিলেন জামায়াতে তাবলিগ, যা বিশ্বব্যাপী দাওয়াতের এক অপূর্ব নজির। তাঁর বাণী ও উপদেশের সংকলন ‘মালফুজাত’ নামে আরবি ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে, যা তাঁর দাওয়াতি দর্শন ও তরবিয়তি পদ্ধতির এক জীবন্ত দলিল। দামেস্কের দারুল কলম থেকে প্রকাশিত এই গ্রন্থ, শায়খ আদিল হাররাজি আল-ইয়ামানি আন-নাদভির তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত, তাবলিগ জামায়াতে মূল দর্শনের প্রাথমিক উৎস হিসেবে বিবেচিত। এটি শুধু মুহাম্মদ ইলিয়াসের বাণীর সংকলন নয় বরং একটি ঐতিহাসিক ও দাওয়াতি দলিল, যা আধুনিক ইসলামি আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে পুনর্মূল্যায়নের দাবি রাখে।

‘মালফুজাত’-এর শিক্ষা

শায়খ মুহাম্মদ ইলিয়াসের মজলিস মালফুজাত সংরক্ষণ করেছেন তাঁর শিষ্য মুহাম্মদ মানজুর। তাবলিগ জামায়াতে ছয়টি মূলনীতি—কালিমা, নামাজ, ইলম ও জিকর, ইকরামুল মুসলিমিন, ইখলাস ও নিয়ত এবং আল্লাহর পথে বের হওয়ার ভিত্তিতে গ্রন্থটি রচিত। তিনি তাওহিদকে (আল্লাহর একত্ব) নাজাতের মূল ভিত্তি হিসেবে উল্লেখ করে বলেছেন, ‘তাওহিদের দুর্বলতা মুসলিমদের অধঃপতনের কারণ’। তিনি ফরজ ইবাদতের প্রাধান্য, জিকিরের প্রাচুর্য এবং তাকওয়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘ফরজগুলোর মর্যাদা নফলের চেয়ে অনেক উঁচুতে। নফলের উদ্দেশ্য ফরজগুলোর ঘাটতি পূরণ করা’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

তাঁর দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল সরল কিন্তু গভীর। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে আত্মশুদ্ধির মাধ্যম হিসেবে দেখতেন, যা তাবলিগের একটি বৈশিষ্ট্য। তিনি রিয়া (লোকদেখানো) ও বিতর্ক এড়ানোর পরামর্শ দেন, বলেন, ‘ইখলাস (খাঁটি আল্লাহর জন্য) ছাড়া কোনো কাজ কবুল হয় না।’ তাঁর দৃষ্টিতে, দাওয়াতের লক্ষ্য হলো আল্লাহর আদেশকে মানুষের স্বভাবে পরিণত করা, যাতে নিষিদ্ধ কাজ তার কাছে অপছন্দনীয় হয়। তিনি জিকিরকে এই লক্ষ্যে পৌঁছানোর প্রধান উপায় হিসেবে বিবেচনা করতেন।

শায়খ ইলিয়াসের দাওয়াতি পদ্ধতি ছিল তাওয়াজ্জুহ বা মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণের পরিবর্তে তাজকিয়া (আত্মশুদ্ধি) ও ইখলাসের ওপর কেন্দ্রীভূত। তিনি জটিল তাত্ত্বিক আলোচনার পরিবর্তে সরল নসিহতের ওপর জোর দিতেন। তাঁর মতে, দাওয়াত হবে এমন, যেন ‘আল্লাহর আদেশ মানুষের স্বভাব হয়ে যায়’। তিনি আল্লাহর পথে বের হওয়াকে তুলনা করতেন সাহাবিদের ত্যাগের সঙ্গে, যা দুনিয়ার মোহ ত্যাগ করে আধ্যাত্মিক উন্নতি আনে। তিনি বলেন, ‘দাওয়াতে আমর বিল মারুফ ও নাহি আনিল মুনকার ফরজ, কিন্তু কতজন এই ফরজ পালন করে?’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

আরও পড়ুনসুরা হুমাজাতে চারটি পাপের শাস্তির বর্ণনা০৬ মে ২০২৫

ঐতিহাসিক পটভূমি

মুহাম্মদ ইলিয়াস ভারতের কান্ধলায় একটি আলেম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। দেওবন্দি সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবে তাঁর শৈশব কাটে। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসন, সাধারণ মুসলিমদের ধর্মীয় অজ্ঞতা এবং পাশ্চাত্য সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ তাঁর দাওয়াতি চিন্তার পটভূমি। তিনি বিশ্বাস করতেন, শুধু প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা মুসলিমদের সংস্কার করতে পারবে না। তাই তিনি একটি জনগণভিত্তিক, বিকেন্দ্রীকৃত আন্দোলন শুরু করেন, যেখানে সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীরা দাওয়াতে অংশ নেয়। তিনি নবীর (সা.) মক্কার জীবন থেকে অনুপ্রাণিত হন, যেখানে তিনি ঘুরে ঘুরে মানুষকে দাওয়াত দিতেন। তিনি বলেন, ‘রাসুল (সা.) মক্কায় তাওয়াফ করে মানুষকে হকের দাওয়াত দিতেন’ (মালফুজাত, দারুল কলম, ২০২৫)।

গ্রন্থের গঠন ও সম্পাদনা

মালফুজাত তাঁর মজলিসের সংকলন হলেও এটি একটি সুশৃঙ্খল দাওয়াতি দলিল। সম্পাদনা করেছেন আবুল হাসান আলী নাদভি (রহ.)-এর শিষ্য শেখ আদিল হাররাজি। মুফতি মুহাম্মদ তকী উসমানী, ড. খালিদ সাইফুল্লাহ রাহমানি ও নূরুল হাসান রাশিদ কান্ধলভী প্রমুখের মতো পাকিস্তান ও ভারতের শীর্ষস্থানীয় ইসলামবেত্তাদের ভূমিকা গ্রন্থটিকে মহামূল্য করে তুলেছে। তাদের ভূমিকাগুলো গ্রন্থের দাওয়াতি ও ঐতিহাসিক পটভূমি বুঝতে সাহায্য করবে। আলী নাদভির সঙ্গে মুহাম্মাদ ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক সম্পর্ক এবং তাবলিগের বিশ্বব্যাপী প্রভাবও এতে তুলে ধরা হয়েছে।

আজ যখন মুসলিম বিশ্ব নানা সংকটের মুখোমুখি, এই গ্রন্থ আমাদের তাওহিদ, ইখলাস ও তাজকিয়ার প্রতি ফিরে যেতে আহ্বান জানায়। এটি প্রতিটি দাঈ ও মুসলিমের জন্য একটি পাঠ্য, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়, ‘দাওয়াতের মাধ্যমে আল্লাহর দ্বীনকে জীবন্ত করে তুলতে হবে।’

সূত্র: আল-জাজিরা ডটনেট

আরও পড়ুন সুরা ইউসুফের সারকথা১৫ জুলাই ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • খুলনায় ‘সেরা সাঁতারুর খোঁজে বাংলাদেশ’ প্রতিযোগিতা শুরু
  • সচিবালয়ে আবারও বিক্ষোভ কর্মচারীদের
  • ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাকাউন্টিংয়ে মাস্টার্স, সিজিপিএ ২.৫ হলেই আবেদন
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৬ জুন ২০২৫)
  • ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি সেরা
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৫ জুন ২০২৫)
  • অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে আরও যাঁরা পেয়েছেন ‘দ্য কিংস ফাউন্ডেশন পুরস্কার ২০২৫’
  • সৌদি আরবের ৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনার সুযোগ, আবেদনের শেষ তারিখ আজ 
  • আজ টিভিতে যা দেখবেন (১৪ জুন ২০২৫)
  • মুহাম্মদ ইলিয়াসের তাবলিগি দর্শন