পাশবিকতার পর কন্যাশিশুকে হত্যা, যুবক গ্রেপ্তার
Published: 28th, February 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে পাশবিকতার পর ছয় বছরের এক কন্যাশিশুকে শ্বাসরোধে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। সাব্বির খান নামে এক যুবকের স্বীকারোক্তিতে বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের রশুনিয়া গ্রামের একটি পুকুরের কচুরিপানার নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে পুলিশ। অন্যদিকে, রংপুরের কাউনিয়ায় নিখোঁজের ৪১ দিন পর প্রতিবেশীর সেপটিক ট্যাঙ্কে মিলেছে চার বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্রীর লাশ।
দুটি ঘটনায় এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। শুক্রবার বিক্ষুব্ধরা সিরাজদীখানে সাব্বিরের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ ও স্বজন জানান, মুন্সীগঞ্জের সিরাজদীখানে নিখোঁজের তিন দিন পর মাদ্রাসাছাত্রী ফাতেমা আক্তারের (৬) লাশ পুকুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। সে পূর্ব রশুনিয়া গ্রামের কুয়েতপ্রবাসী শহীদুল ইসলামের মেয়ে ও রশুনিয়া মাহমুদিয়া নুরানিয়া মাদ্রাসার প্রথম শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
গত মঙ্গলবার রাতে বাড়ির পাশে ওয়াজ মাহফিলে গিয়ে নিখোঁজ হয় ফাতেমা। মাহফিলকে কেন্দ্র করে সেখানে আইসক্রিমের অস্থায়ী দোকান দেয় রশুনিয়া ইউনিয়নের উত্তর তাজপুর গ্রামের নাহিদ খানের ছেলে সাব্বির খান (২৫)। সাব্বির আইসক্রিম দেয় ফাতেমাকে। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা বুধবার দুপুরে তাকে ধরে সিরাজদীখান থানায় দেন। পরে ফাতেমার মা বিলকিস বেগম মামলা করেন।
সিরাজদীখান থানার ওসি শাহেদ আল মামুন জানান, সাব্বিরকে আদালতের মাধ্যমে এক দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে শিশু ফাতেমার ওপর পাশবিকতা শেষে শ্বাসরোধে হত্যা ও লাশ গুমের বিষয় স্বীকার করে। পরে তারই দেখিয়ে দেওয়া পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
সাব্বিরের শাস্তি দাবি করে ফাতেমার চাচা মাওলানা এরশাদ বলেন, ‘আমার ভাই বিদেশে থাকেন। এত ছোট্ট মেয়ের সঙ্গে কেউ এমন করবে আমরা বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা সাব্বিরের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
এদিকে রংপুরের কাউনিয়ায় নিখোঁজের ৪১ দিন পর সেপটিক ট্যাঙ্ক থেকে মাদ্রাসাছাত্রী দোলা মণির (৪) লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের মধ্য ধর্মেশ্বর মহেশা গ্রামের আফজাল হোসেনের বাড়ি থেকে লাশ উদ্ধার করেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
দোলা মধ্য ধর্মেশ্বর মহেশা গ্রামের দেলোয়ার মিয়ার মেয়ে ও স্থানীয় মাদ্রাসার শিশু শ্রেণির ছাত্রী ছিল। এ ঘটনায় তিন প্রতিবেশীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা জানান, গত ১৯ জানুয়ারি বিকেলে বাড়ির বাইরে বের হয় দোলা। কিছুক্ষণ পর বাড়িতে না পেয়ে পরিবারের লোকজন খোঁজাখুঁজি করেন। শেষ পর্যন্ত না পেলে কাউনিয়া থানায় দোলার সন্ধান চেয়ে জিডি করে পরিবার। এর পর দীর্ঘদিন পার হলেও দোলার খোঁজ না পেয়ে বৃহস্পতিবার কাউনিয়া ও পীরগাছা সেনা ক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দেন তাঁর বাবা দেলোয়ার।
দায়িত্বপ্রাপ্ত ৩০ বেঙ্গল ইউনিটের ক্যাপ্টেন মেহেদী হাসান নিয়নের নেতৃত্বে সেনাবাহিনীর একটি দল অভিযান চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাতে অভিযান চালিয়ে দোলার লাশ উদ্ধার করে। এ সময় হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে প্রতিবেশী নুরুল ইসলাম (৫০), আফজাল হোসেন (৪২) ও সুমন মিয়াকে (২৩) ধরে থানায় হস্তান্তর করে সেনাবাহিনী।
কাউনিয়া থানার ওসি আব্দুল লতিফ জানান, শুক্রবার বিকেলে দোলার বাবা তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। আদালতের মাধ্যমে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
অতিরিক্ত গরমে পেট ঠান্ডা রাখবেন যেভাবে
শরীরকে পানিশূন্য হতে দেবেন না
গরমে পেটের পীড়া তৈরির পেছনে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রাখে পানিশূন্যতা। গ্রীষ্মকালে প্রয়োজনের তুলনায় যেমন বেশি পানি খাওয়া হয়, তেমনি তা দ্রুত ঘামের সঙ্গে শরীর থেকে বেরিয়েও যায়। যে কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি পানি খাওয়া প্রয়োজন। পর্যাপ্ত পানির অভাবে খাবারও ঠিকঠাক হজম হয় না। তৈরি হতে পারে কোষ্টকাঠিন্য ও অ্যাসিডিটি।
অতিরিক্ত ঠান্ডা খাবার ও পানীয় খাবেন নাগরমে ঠান্ডা পানি ও খাবারের লোভ সামলানো দায়। বাইরে থেকে এসে আইসক্রিম, ঠান্ডা পানি কিংবা জুস দেখলেই অনেকে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু এমন সময় ঠান্ডা খাবার ও পানীয় হজমে সমস্যা তৈরি করতে পারে।
আরও পড়ুনঠান্ডা-কাশি হলে কি টুথব্রাশ বদলানো জরুরি১০ এপ্রিল ২০২৫বাইরের খাবার বাদ দিনগরমকালে রাস্তার পাশে দেখা যায় শরবত, জুস কিংবা কুলফি মালাইয়ের দোকান। কিন্তু অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বানানো এ ধরনের পানীয় বা খাবার থেকে তৈরি হতে পারে ডায়রিয়া, আমাশয়সহ নানা রকম পেটের পীড়া।
খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম করবেন নাগ্রীষ্মকালে খাওয়াদাওয়ায় অনিয়ম পেট একেবারেই নিতে পারে না। বিশেষ করে কিছুক্ষণ পরপর পানি খাওয়ার ফলে পেট সারা দিন ভরা ভরা লাগে। ধীরে ধীরে তা পরিণত হয় খাবারের অনিয়মে। এই অনিয়ম থেকে হতে পারে পেটের পীড়া।
সূর্যের তীব্রতা থেকে নিজেকে আড়াল রাখুনসারা বছর যাঁরা ছোটখাটো পেটের পীড়ায় ভোগেন, গ্রীষ্মকালে তাঁদের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে। কারণ, গ্রীষ্মকালে সূর্যের তীব্র আলো শরীরে প্রদাহ সৃষ্টি করে। সেই প্রদাহ থেকে পেটে সমস্যা তৈরি হতে পারে।
আরও পড়ুনগরমে যেসব রঙের পোশাক পরলে আরাম পাবেন২২ এপ্রিল ২০২৫গরমেও সুস্থ থাকার উপায়পর্যাপ্ত পানি খান: গ্রীষ্মকালে শরীর থেকে প্রচুর পানি বেরিয়ে যায়। এই পানির অভাব পূরণ করতে প্রতিদিন তেষ্টা বুঝে পানি খান। পানির পরিবর্তে ডাবের পানি, ঘরে তৈরি জুস, লেবুর শরবত খেতে পারেন। তবে কৃত্রিম মিষ্টি থেকে দূরে থাকাই ভালো।
মৌসুমি ফল খান: আম, জাম, কাঁঠাল, লিচু থেকে শুরু করে তরমুজ, বেল, বাঙি—বাহারি ফলের মৌসুম গ্রীষ্মকাল। এসব ফল পেট শান্ত রাখতে সহায়তা করে। এ ছাড়া ফলের রস পানিশূন্যতা দূর করতেও সহায়ক।
বাসার খাবার খান: গরমে বাইরের খাবার শরীরে বেশ বাজে প্রভাব ফেলে। অতিরিক্ত ঝাল, তেল, মসলা শরীরে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। তাই গ্রীষ্মকালে চেষ্টা করুন ঘরে তৈরি খাবার খাওয়ার। এতে পেটের ওপর চাপ কম পড়বে।
ঠান্ডা খেতে চাইলে: ঘরের বাইরে থেকে এসেই ঠান্ডা কিছু খাওয়া কখনোই ভালো নয়। খাইতে চাইলে কিছুটা সময় নিন। তবে ঠান্ডা খাবার বলতে কেবল আইসক্রিম কিংবা ঠান্ডা পানীয়ই নয়, বেছে নিতে পারেন দই, ঘরে তৈরি লাচ্ছি অথবা মালাই।
খাবারে অনিয়ম করবেন না: গ্রীষ্মকালে যতই পেট ভরা লাগুক না কেন, সময়মতো তিন বেলা খাবার খেতে ভুলবেন না। সময়মতো খাবার খেলে পেটের সমস্যা থেকে মুক্ত থাকা যায় সহজে।
সূত্র: জেম হসপিটাল ও কাইজেন গ্যাস্ট্রো কেয়ার
আরও পড়ুনগরমে ইলেকট্রোলাইট ড্রিংকস খাওয়া কি ঠিক০৬ এপ্রিল ২০২৫