সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলা সদর দিয়ে বয়ে যাওয়া মরিচ্চাপ নদীর বাঁধের ৫০০ মিটার এলাকা জুড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে আশপাশের অতন্ত পাঁচ গ্রামের মানুষ। পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলাতির কারণে ভাঙন দেখা দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।

বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে গেলে শরীফুল ইসলাম বলেন, “আশাশুনি উপজেলার মধ্য চাপড়ায় মরিচ্চাপ নদী ভাঙছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ প্রশাসনের লোকজন আসছেন দেখছেন। দিয়ে যাচ্ছেন আশ্বাস। তবে, নদী ভাঙন প্রতিরোধে নেওয়া হয়নি কোনো পদক্ষেপ।”

আব্দুর রশিদ বলেন, “নিয়ম না মেনে মরিচ্চাপ নদী খনন করায় আশাশুনি উপজেলার মধ্য চাপড়ায় নদী পাড়ে দেখা দিয়েছে ভাঙন। আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে ৮০০ পরিবারের। গত কয়েক দিনে নদীর তীরের ৯০ ফুট জমিসহ চারটি বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। আরো ১০টি বাড়ির আংশিক ভেঙে গিয়ে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। মরিচ্চাপ নদীর তীরে থাকা চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাদরাসহ একাধিক প্রতিষ্ঠান ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে।” 

আরো পড়ুন:

শীতের শুরুতেই পদ্মায় জেগে উঠছে চর

তিস্তার পাড়ে ভাঙন রোধে বিশেষ মোনাজাত 

মোমেনা খাতুন জানান, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভয়ে রাত কাটাতে হয় তাদের। নদী ভাঙনে বাড়ি বিলীন হয়ে যাওয়ায় কবর স্থানে ঝুপড়ি বেঁধে রয়েছেন তারা।

চাপড়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বিমানন্দ কুমার দাশ বলেন, “মরিচ্চাপ নদীর তীরে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মসজিদ, মাদরাসা ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে। ভাঙন না ঠেকালে স্কুল থাকবে না। পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে শিক্ষার্থীদের।”

আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কৃষ্ণা রায় ভাঙনের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, “অনেক প্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডকে দ্রুত ভাঙন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।”

সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো-০২) নির্বাহী প্রকৌশলী সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “ভাঙন প্রতিরোধে কাজ করা হচ্ছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”

সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, “নদী ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ভাঙন প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে। তারা দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে অচিরেই একটি গ্রাম তলিয়ে যাবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নদ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ