সামনের দশকেই শিরোপা জেতবে আফগানরা: স্টেইন
Published: 1st, March 2025 GMT
আইসিসি ইভেন্টে আফগানিস্তান সাম্প্রতিক সময়ে বেশ নজরকাড়া পারফরম্যান্স করছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটি বাংলাদেশের অনেক পরে ক্রিকেট শুরু করেও এগিয়ে গিয়েছে অনেক। হাশমতউল্লাহ শহীদির নেতৃত্বাধীন দলটি ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কাকে পরাজিত করে রাউন্ড-রবিন পর্ব থেকে সেমিফাইনালে উঠার দৌড়ে ছিল।
এবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনালের দৌড়ে এখনও কাগজে কলমে টিকে আছে দলটি। যদিও নেট রান রেটের হিসেব বলছে তাদের পক্ষে সেমি ফাইনাল খেলা সম্ভব নয়। পরপর দুবার আইসিসির বৈশ্বিক ওয়ানডে আসরে খুব কাছে গিয়েও সেমি ফাইনালে উঠতে ব্যর্থ হয় তারা।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের বিপক্ষে নামছেন সাকিব!
ব্যর্থ মিশন শেষে দেশে ফিরলেরন শান্ত-মুশফিকরা
তবে আফগানদের আগামীতে উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন সাবেক তারকা ক্রিকেটাররা। কদিন আগেই বাংলাদেশ তো বটেই এমনকি পাকিস্তানের মতো পরাশক্তিকেও আফগানদের দেখে ক্রিকেট শিখতে বলেছেন ইংল্যান্ডের সাবেক অধিনায়ক নাসের হুসেইন। এবার দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার ডেল স্টেইন বলেছেন সামনের দশকের মাঝেই আইসিসির বৈশ্বিক শিরোপা জিতবে আফগানরা।
স্টেইন আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স নিয়ে মন্তব্য করেছেন ক্রিকেটভিত্তিক ওয়েবসাইট ইএসপিএনক্রিকইনফোতে। প্রোটিয়াদের হয়ে আন্ত্ররজাতিক ক্রিকেটে ৬৯৯ উইকেটের মালিক বলেছেন যে আফগানদের আরও ধৈর্য্য শেখা প্রয়োজন। যখন তাদের পরিকল্পনা অনুসারে কিছু ঘটে না, তখন অনেক সময়ই মাঠে তারা অস্থির হয়ে ওঠে। কিংবদন্তি এই গতিতারকা আরও যোগ করেছেন যে, যদি তারা ধৈর্য্যের কৌশল শিখে ফেলে, তবে আগামী দশ বছরের মাঝেই তারা একটি আইসিসি টুর্নামেন্ট জিততে পারবে।
স্টেইন বলে, “আমরা এখন এমন একটি সময়ে আছি যেখানে মানুষ ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলেছে। আমরা দুই সেকেন্ডের একটি ইনস্টাগ্রাম স্টোরি দেখা ছাড়া কিছুই সহ্য করতে পারি না, এবং আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দেরও মাঠে খেলতে গিয়ে ঠিক তেমনই মনে হয়। ধৈর্য্য হল আফগানিস্তানের খেলোয়াড়দের শেখার সবচেয়ে বড় বিষয়। একবার যদি তারা এটা শিখে নেয়, তবে সাচ্ছন্দ্যে আগামী দশ বছরে তারা আইসিসি টুর্নামেন্ট জয় করতে পারবে।”
“তারা চায় সব কিছু দ্রুত ঘটুক। এই বলটা একটা উইকেট হতে হবে, উইকেট নেওয়ার জন্য ধৈর্য্য নেই। ব্যাটসম্যানরাও অনেক সময় প্রথম ওভারে আক্রমণাত্বক ব্যাটিং করতে থাকে। ক্রিজে অনেক বেশি নড়াচড়া করে। তারা ছক্কা মারতে চায় এবং খেলায় দ্রুত নিয়ন্ত্রণ নিতে চায়।”- যোগ করেন স্টেইন।
উল্লেখ্য আফগানিস্তান ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে রশিদ খান নেতৃত্বে সেমিফাইনালে পৌঁছেছিল।
ঢাকা/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আফগ ন স ত ন আফগ ন স ত ন ফ ইন ল স ট ইন আইস স
এছাড়াও পড়ুন:
টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন আসরে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ কারা, খেলা কবে-কোথায়
অভাগাদের বছরে ‘কুফা’ কাটানোর তালিকায় সর্বশেষ নাম দক্ষিণ আফ্রিকা। লর্ডসে গতকাল অস্ট্রেলিয়াকে ৫ উইকেটে হারিয়ে টেস্টের রাজদণ্ড হাতে পেয়েছে টেম্বা বাভুমার দল। প্রোটিয়াদের শ্রেষ্ঠত্বের মধ্য দিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তৃতীয় আসর শেষ হয়েছে।
তবে এর রেশ থাকতেই চলে এসেছে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের চতুর্থ আসর বা চক্র। ২০২৫-২৭ চক্রের শুরুটা হচ্ছে বাংলাদেশকে দিয়েই। আগামী ১৭ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্ট খেলতে নামছে নাজমুল হোসেন দল। ২৫ জুন কলম্বোয় শুরু দুই দলের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট। এবারের টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ চক্রে এটিই প্রথম সিরিজ।
ক্রিকেটের অভিজাত এই সংস্করণে বাংলাদেশ প্রায় ২৫ বছর পার দিলেও রেকর্ড ভালো নয়। তবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ আসার পর থেকে বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ক্রমশ উন্নতির দিকে।
প্রথম চক্রে (২০১৯-২১) কোনো ম্যাচই জিততে পারেনি লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। দ্বিতীয় চক্রে (২০২১-২৩) মাউন্ট মঙ্গানুই টেস্টে ঐতিহাসিক জয় বাদ দিলে বলার মতো কিছু নেই। প্রথম দুই চক্র শেষ করতে হয়েছে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে থেকে।
তবে তৃতীয় চক্রে (২০২৩-২৫) বাংলাদেশের পারফরম্যান্স বেশ আশাব্যঞ্জক। ১২ টেস্ট খেলে জিতেছে চারটিতে। এর মধ্যে গত বছর পাকিস্তানকে তাদের মাটিতে ধবলধোলাইয়ের সুখস্মৃতিও আছে। পয়েন্ট তালিকায় অবস্থান ছিল সাত নম্বরে; পাকিস্তান এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে। তিন চক্র মিলিয়ে বাংলাদেশ খেলেছে ৩১ টেস্ট। জিতেছে পাঁচটি, ড্র করে দুটি আর হেরেছে ২৪টি।
এবার কী হবে? শ্রীলঙ্কায় যাওয়ার আগে মিরপুরের শেরেবাংলা জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে আশার বাণীই শুনিয়েছেন অধিনায়ক নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘গত চক্রে আমরা চারটা ম্যাচ জিতেছি। আমাদের একটু উন্নতি হয়েছে। লক্ষ্য থাকবে এই চক্রে কীভাবে আরও একটা-দুইটা ম্যাচ বেশি জিততে পারি।’ সেটা কতটুকু সম্ভব, সময়ই বলে দেবে।
বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের আগের তিন চক্রের মতো এবারও অংশ নিচ্ছে ৯ দল। প্রত্যেক দল খেলবে ছয়টি করে সিরিজ—তিনটি নিজেদের মাঠে, তিনটি প্রতিপক্ষের মাঠে। পয়েন্ট সিস্টেমেও কোনো পরিবর্তন আসেনি (জিতলে ১২, ড্র করলে ৪, টাই করলে ৬ পয়েন্ট)।
তবে এবার ম্যাচের সংখ্যা গত দুবারের চেয়ে একটি বেড়েছে। ফাইনালসহ মোট ম্যাচ হবে ৭১টি, সিরিজ ২৭টি। প্রত্যেক সিরিজেই সর্বনিম্ন দুই ও সর্বোচ্চ পাঁচটি ম্যাচ হবে।
চতুর্থ চক্রের ফাইনালও লর্ডসে আয়োজনের প্রস্তাব করা হয়েছে। এই ম্যাচ হবে ২০২৭ সালের জুনে। ফাইনালের আগে শেষ সিরিজ হবে সেই বছরের মার্চে; পাকিস্তানে দুটি টেস্ট খেলতে যাবে নিউজিল্যান্ড।
এবার সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে অস্ট্রেলিয়া, দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে কম ১২টি করে ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা, যাদের সিরিজ দিয়েই শুরু হচ্ছে এবারের চক্র। ২০২৫ সালে বাংলাদেশ দলের টেস্ট সিরিজ এই একটিই। নাজমুল-মুশফিক-তাইজুলদের বাকি পাঁচ সিরিজই ২০২৬ ও ২০২৭ সালে। সব সিরিজেই দুটি করে ম্যাচ।
২০২৬ সালে বাংলাদেশের প্রথম সিরিজ মার্চে, ঘরের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে। সেই বছরের আগস্টে দল যাবে অস্ট্রেলিয়ায়। ২০০৩ সালের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে সেটিই হবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের প্রথম টেস্ট সিরিজ।
এই চক্রে বাংলাদেশের ঘরের মাঠে দ্বিতীয় সিরিজ খেলবে ২০২৬ সালের অক্টোবরে; খেলতে আসবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরের মাসে যাবে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে। বাংলাদেশের শেষ সিরিজ দেশের মাটিতেই; ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে আসবে ইংল্যান্ড। ২০১৬ সালের পর এটিই হবে ইংলিশদের বিপক্ষে প্রথম টেস্ট সিরিজ।
অনুপ্রেরণা জোগানোর মতো খবর হলো ২০২৫-২৭ চক্রে বাংলাদেশ যে ছয় দলের বিপক্ষে খেলবে, এর চারটির বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে তারা হারেনি। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজ ড্র করেছে আর পাকিস্তানকে করেছে ধবলধোলাই (দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)। সিরিজ হেরেছে শ্রীলঙ্কা আর বর্তমান চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে।