৭ মার্চ পর্যন্ত দেশের আকাশে দেখা যাবে যেসব চমক
Published: 1st, March 2025 GMT
ধীরে ধীরে বাংলাদেশের আকাশ থেকে শীতের মেঘ কেটে যাচ্ছে। মার্চে পুরো সময়টা স্পষ্টভাবে সন্ধ্যার পর থেকে ভোররাত পর্যন্ত আকাশ পর্যবেক্ষণ করা যাবে। হুটহাট বৃষ্টি হানা না দিলে সন্ধ্যার পর থেকে ব্যস্ত ঢাকার বুকে দারুণ আকাশ দেখা যাবে। ঢাকা ও ব্যস্ত শহর থেকে যত গ্রামীণ এলাকায় যেতে থাকবেন, তত দারুণ আকাশ দেখা যাবে মার্চের প্রথম সপ্তাহে।
১ মার্চ
সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে একটি অর্ধচন্দ্র চাঁদ (প্রায় ১৫ শতাংশ আলোকিত) দৃশ্যমান হবে। রাত ৯টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত চাঁদের এমন অবস্থা দেখা যাবে। আজকের আকাশে শুক্র গ্রহ, মঙ্গল গ্রহ ও বৃহস্পতি গ্রহ খালি চোখেই দেখা যাবে। সন্ধ্যার পর থেকেই আকাশে দেখা যাবে এদের। অন্যদিকে ইউরেনাস ও নেপচুন শক্তিশালী টেলিস্কোপ ছাড়া পর্যবেক্ষণ করা বেশ কঠিন হবে। আজ সূর্যাস্তের পর পশ্চিমে সন্ধ্যার আকাশে সবচেয়ে উজ্জ্বল দেখা যাবে শুক্র গ্রহকে। এটি আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল বস্তুগুলোর মধ্যে একটি হবে। লালচে রঙের উজ্জ্বল মঙ্গল গ্রহকে অ্যালডেবারান তারকার পাশে দেখা যাবে। পশ্চিম আকাশে রাত ১০টার দিকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে।
২ মার্চ
আকাশে প্রশস্ত অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে। আজ চাঁদ শুক্র গ্রহের কাছাকাছি থাকবে। পশ্চিমে সূর্যাস্তের ঠিক পরেই শুক্র গ্রহকে সবচেয়ে ভালো দেখা যাবে। আকাশে মঙ্গল গ্রহ রাত ৩টায় ঠিক মাঝ আকাশে দেখা যাবে। পশ্চিম আকাশে বৃহস্পতি গ্রহ রাত ১১টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত দৃশ্যমান থাকবে। বিখ্যাত ওরিয়ন’স বেল্ট দক্ষিণ আকাশে দৃশ্যমান থাকবে।
৩ মার্চ
এদিন আকাশে ৩০ শতাংশ আলোকিত অর্ধচন্দ্র দেখা যাবে রাত ১১টা পর্যন্ত। মঙ্গল গ্রহ ও আলদেবারান তারা নিকটবর্তী অবস্থানে থাকবে। এদের পশ্চিম আকাশে যমজ তারার মতো দেখাবে। সূর্যাস্তের পরে পশ্চিম আকাশে শুক্র গ্রহ উজ্জ্বলভাবে জ্বলজ্বল করবে। এদিন রাত ১২টা ৩৯ মিনিটে মধ্য আকাশে চোখ রাখলেই দেখতে পাবেন বৃহস্পতি গ্রহ।
৪ মার্চ
সন্ধ্যা ৭টা ৫৭ মিনিটে মধ্য আকাশে অবস্থান করবে শুক্র গ্রহ। এদিন চাঁদের প্রথম চতুর্থাংশে অবস্থান করবে। মধ্যরাত পর্যন্ত দৃশ্যমান হবে। আর শুক্র ও বৃহস্পতি সূর্যাস্তের পর পশ্চিম আকাশে প্রায় সরলরেখায় দেখা যাবে। ওরিয়ন ও সাইরাস তারকা আকাশে দেখা যাবে। রাত ৯টার দিকে ওরিয়ন তার সর্বোচ্চ বিন্দুতে থাকবে। আর রাতের আকাশের সবচেয়ে উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে সাইরাস দক্ষিণ-পূর্বে দৃশ্যমান হবে।
৫ মার্চ
রাত ১২টা ৩১ মিনিটে মাঝ আকাশে দেখা যাবে বৃহস্পতি গ্রহ। এদিন আকাশে ৪৫ শতাংশ আলোকিত চাঁদ দেখা যাবে। এদিন শুক্র, বৃহস্পতি ও শনির অবস্থান থাকবে আকাশে। উজ্জ্বল নক্ষত্র রেগুলাস ও সিংহ রাশি পূর্ব দিকে দেখা যাবে।
৬ মার্চ
এদিন চাঁদ প্রায় অর্ধ-আলোকিত অবস্থায় দেখা যাবে রাত ১টা ৩০ মিনিটের পরে। এদিন মঙ্গল গ্রহ কালপুরুষের বলয়ের কাছাকাছি অবস্থান করবে। রাত ৩টা ৯ মিনিটে মঙ্গল গ্রহ মাঝ আকাশে অবস্থান করবে। যার ফলে এটি সহজেই দেখা যাবে। শনি প্লিয়েডস স্টার ক্লাস্টারের কাছে দেখা যাবে, যা সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত।
৭ মার্চকেউ বুধ গ্রহ দেখতে চাইলে ছোট টেলিস্কোপ বা বাইনোকুলার দিয়ে সন্ধ্যা ৭টা ২২ মিনিটে মধ্য আকাশে চোখ রাখতে পারেন। এদিন শুক্রবার, বৃহস্পতি ও মঙ্গল আকাশে দেখা যাবে। পশ্চিমে শুক্র গ্রহ উজ্জ্বলভাবে থাকবে। মধ্যরাত পর্যন্ত বৃহস্পতি দৃশ্যমান থাকবে। আর মঙ্গল গ্রহ অ্যালডেবারানের কাছে ভালোভাবে অবস্থান করবে।
সূত্র: বিবিসি স্কাই অ্যাট নাইট ম্যাগাজিন, অ্যাস্ট্রোনমি, স্কাই অ্যান্ড টেলিস্কোপ ও স্কাই ম্যাপস
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স র য স ত র পর অবস থ ন করব আল ক ত সবচ য
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?