গঙ্গা চুক্তি পর্যালোচনার বৈঠকে কলকাতা যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা
Published: 1st, March 2025 GMT
গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা করতে বাংলাদেশ ও ভারতের যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) বৈঠকে যোগ দিতে ভারতে আসছে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল। পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা ও ফারাক্কায় সেই বৈঠক হতে যাচ্ছে ৩ থেকে ৮ মার্চ।
এবার হতে চলেছে জেআরসির ৮৬তম বৈঠক। তাতে যোগ দিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন কমিশনের সদস্য মোহাম্মদ আবুল হোসেন। প্রতিনিধিদলে থাকছেন আরও ১০ বিশেষজ্ঞ ও সরকারি কর্মকর্তা।
ভারতের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি এক সরকারি বার্তায় পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই বৈঠক সম্পর্কে জানানো হয়েছে। সেই বার্তায় সফরকারী প্রতিনিধিদের প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে প্রবাহিত গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ১৯৯৬ সালে ওই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সই করেছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী এইচ ডি দেবগৌড়া ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। চুক্তির মেয়াদ ছিল ৩০ বছরের। আগামী বছর সেই মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা।
গত বছর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, চুক্তি নবায়ন নিয়ে দুই দেশ বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে পর্যালোচনায় রাজি হয়েছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক পালাবদলের পর দুই দেশের সার্বিক সম্পর্ক ঘিরে অনেক প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই আবহে প্রথম বসতে চলেছে এই দ্বিপক্ষীয় বৈঠক।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ৫৪টি অভিন্ন নদী রয়েছে। গঙ্গা ছাড়া আর কোনো নদীর পানি বণ্টনের চুক্তি হয়নি। তিস্তার পানিবণ্টনের প্রশ্ন এখনো অমীমাংসিত। এর প্রধান কারণ কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসহযোগিতা ও তাঁর আপত্তি।
২০২৪ সালে প্রধানমন্ত্রী মোদিকে এক চিঠিতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গঙ্গা চুক্তির একতরফা চরিত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। বলেছিলেন, পশ্চিমবঙ্গ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া সত্ত্বেও এই চুক্তি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের সঙ্গে পরামর্শ করে না।
কেন্দ্রীয় সরকার অবশ্য সেই অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ ও বিহারের প্রতিনিধিদের রেখে ২০২৩ সালেই কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রণালয় একটি কমিটি গঠন করেছে। উত্তরাখন্ড, উত্তর প্রদেশ ছাড়াও এই দুই রাজ্যের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে গঙ্গা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।
পশ্চিমবঙ্গকে পাঠানো কেন্দ্রীয় সরকারের বার্তা অনুযায়ী ৩ মার্চ বেলা পৌনে ১১টায় মোহাম্মদ আবুল হোসেনের নেতৃত্বে বাংলাদেশি প্রতিনিধিদল কলকাতা পৌঁছাবে। সেদিন দুপুরেই তাঁরা ট্রেনে চড়ে রওনা দেবেন ফারাক্কা। পরদিন তাঁরা ফারাক্কায় গঙ্গা নদীর সন্নিহিত এলাকা পরিদর্শন করবেন। ৫ মার্চ কলকাতা ফিরে আসবেন।
পরে ৬ মার্চ কলকাতায় হায়াৎ রিজেন্সি হোটেলে বসবে ৮৬তম যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক। ৭ মার্চ সেখানেই অনুষ্ঠিত হবে দুই দেশের প্রযুক্তিবিদ পর্যায়ের (টেকনিক্যাল লেভেল) বৈঠক। ৮ মার্চ বাংলাদেশ ফিরে যাবেন সফরকারী প্রতিনিধিরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
আধা ঘণ্টার মধ্যেই গিলের দুই রেকর্ড
ওভাল টেস্টের আজ প্রথম দিন। ‘অ্যান্ডারসন-টেন্ডুলকার ট্রফি’র এই ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত ভারতের জন্য স্মরণীয় হয়ে উঠবে কি না সময়ই বলবে। তবে শুবমান গিল নিজের জন্য স্মরণীয় করে তুললেন প্রথম দিনের প্রথম সেশনেই। দিনের দ্বিতীয় ঘণ্টায় ব্যাট করতে নামা গিল আধা ঘণ্টার মধ্যেই ভেঙেছেন দুটি রেকর্ড।
একটি রেকর্ড গ্যারি সোবার্সের, যা টিকেছিল ৫৯ বছর। আরেকটি রেকর্ড সুনীল গাভাস্কারের, টিকেছিল ৪৬ বছর। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টের প্রথম সকালের এ দুই কীর্তির পর গিলকে হাতছানি দিচ্ছে আরও কয়েকটি রেকর্ড।
সিরিজের প্রথম চার টেস্টে ৭২২ রান করা গিল আজ প্রথম রেকর্ডটি ভেঙেছেন নিজের প্রথম স্কোরিং শটে। সেনা দেশগুলোতে (দক্ষিণ আফ্রিকা, ইংল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া) সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের রেকর্ডটা ছিল সোবার্সের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ১৯৬৬ সালের ইংল্যান্ড সফরে পাঁচ টেস্টের আট ইনিংসে করেছিলেন ৭২২ রান। প্রায় ছয় দশক পর গত সপ্তাহে ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্টেই তাঁকে ছুঁয়ে ফেলেন গিল।
সোবার্সকে ছাড়িয়ে যেতে বাকি যে এক রান দরকার ছিল, গিল আজ সেটিই নিয়েছেন ক্রিস ওকসের বলে স্কয়ার লেগে ঠেলে জোড়া রান নিয়ে। ইংল্যান্ডে সফরকারী অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের এই কীর্তি গড়েই থামেননি গিল। কিছুক্ষণ পরই ছাড়িয়েছেন স্বদেশি কিংবদন্তি সুনীল গাভাস্কারের এক রেকর্ড।
১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৬ টেস্টের ৯ ইনিংসে ৭৩২ রান করেছিলেন তখনকার ভারত অধিনায়ক গাভাস্কার। চার দশকের বেশি সময় ধরে এটিই ছিল অধিনায়ক হিসেবে এক টেস্ট সিরিজে ভারতের রেকর্ড। আজ জেমি ওভারটনকে কাভার দিয়ে চার মেরে ১১ রানে পৌঁছে গাভাস্কারের রেকর্ডটিও দুইয়ে ঠেলে দিয়েছেন গিল।
প্রথম আধা ঘণ্টার মধ্যে দুটি নতুন রেকর্ড গড়া গিলের সামনে হাতছানি দিচ্ছে আরও কিছু রেকর্ড। যেমন ওভাল টেস্টে ৫৩ রান করতে পারলে তিনি হয়ে যাবেন ভারতের হয়ে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক। বর্তমানে রেকর্ডটি গাভাস্কারের, যিনি ১৯৭১ ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ ইনিংসে করেছিলেন ৭৭৪ রান।
গিল যদি আরেকটু এগিয়ে ৮৯ রান করতে পারেন, তাহলে ডন ব্র্যাডম্যানকে ছাড়িয়ে তিনি হবেন অধিনায়ক হিসেবে এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি রান করা বিশ্ব রেকর্ডের মালিক। ১৯৩৬-৩৭ অ্যাশেজে ৯ ইনিংসে ৮১০ রান করেছিলেন অস্ট্রেলিয়ান কিংবদন্তি।
আর গিল যদি ওভালে সেঞ্চুরিই করে ফেলেন, তাহলে তিনি হয়ে যাবেন এক সিরিজে সবচেয়ে বেশি ৫ সেঞ্চুরি করা ব্যাটসম্যান, যে কীর্তিটি আছে শুধু ক্লাইভ ওয়ালকটের (১৯৫৫ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ টেস্টে ৫ সেঞ্চুরি)।
এই প্রতিবেদন লেখার সময় বৃষ্টিতে বন্ধ ছিল খেলা। বৃষ্টি আসার আগে ২ উইকেটে ৭২ রান তুলেছে টসে হেরে ব্যাটিং করা ভারত। গিল ১৫ ও সাই সুদর্শন ২৫ রানে অপরাজিত আছেন।