ইট-পাথরের শহুরে জীবনে প্রকৃতির কাছে গিয়ে খানিকটা স্বস্তির নিশ্বাস নিতে উদ্যানের বিকল্প আর কী হতে পারে। উদ্যানের বেঞ্চে বসে বা হাঁটাচলা করে দারুণ কিছু সময় কাটিয়ে দেওয়া যায়। কিন্তু সেই উদ্যানের আয়তন যদি হয় মাত্র ২ দশমিক ৬ বর্গফুট!
ঠিকই শুনেছেন, জাপানের একটি আস্ত উদ্যানের আয়তন এমনই। মধ্য জাপানের শিজুওকা অঞ্চলের এই উদ্যান এখন বিশ্বের ক্ষুদ্রতম উদ্যান। উদ্যানটিতে বসার জন্য পাতা আছে একটি টুল। পাথরের ওপর কাঠের মোটা তক্তা দিয়ে টুলটি বানানো হয়েছে। টুলের চারপাশে আছে ক্ষুদ্র একটি ঝোপ। দূর থেকে ঝোপটিকে দেখে বনসাই মনে হবে। গাছকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় ক্ষুদ্র রূপ দেওয়াকে বনসাই বলে। জাপানে বনসাই খুবই জনপ্রিয়।
জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে ৬৮ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমের শহর নাগাইজুমি। শহরটির টাউন হল থেকে উদ্যানটি হাঁটাপথের দূরত্বে।
গত মঙ্গলবার নাগাইজুমির ওই খুদে উদ্যানের নাম গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে ওঠে।
এর আগে এই রেকর্ডের মালিক ছিল যুক্তরাষ্ট্রের অরিগনের পোর্টল্যান্ডের ‘মিল এন্ডস পার্ক’। নাগাইজুমির এক বাসিন্দা ছুটিতে যুক্তরাষ্ট্রে বেড়াতে গিয়ে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষুদ্র উদ্যান সম্পর্কে জানতে পারেন। তখনই তাঁর মাথায় মিল এন্ডস পার্ক থেকেও ছোট উদ্যান তৈরির চিন্তা আসে।
ওই ব্যক্তির নাম শুজি কোয়ামা। তিনি নাগাইজুমির অবকাঠামো নির্মাণ বিভাগের একটি দলের প্রধান।
১৯৮৮ সালে উদ্যানটি তৈরি করা হয়। স্থানীয়রা তখন থেকেই সেটিকে সবচেয়ে ক্ষুদ্র উদ্যান বলতেন, কিন্তু সেটির আনুষ্ঠানিক কোনো স্বীকৃতি ছিল না।
পরে কর্তৃপক্ষ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠাতে আনুষ্ঠানিকভাবে পার্কটির আয়তন মাপার ব্যবস্থা করেন।
কোয়ামা পরে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষকে বলেন, শেষ পর্যন্ত উদ্যানটি স্বীকৃতি পেয়েছে জেনে তিনি স্বস্তি বোধ করছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা এলাকাবাসীর সঙ্গে মিলে এই উদ্যানের রক্ষণাবেক্ষণ চালিয়ে যেতে চাই। আমরা উদ্যানটিকে এমনভাবে সাজাতে চাই যেন সেটা আরও বেশি সামাজিক যোগাযোগবান্ধব হয়। আমরা চাই, এই উদ্যান দেখতে আরও অনেক মানুষ আমাদের শহরে আসুক।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’