মহাপরিচালকের পদত্যাগপত্র উপদেষ্টা ফারুকীর টেবিলে
Published: 3rd, March 2025 GMT
বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক (ডিজি) সৈয়দ জামিল আহমেদের পদত্যাগপত্র গতকাল রোববার সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। পদত্যাগপত্র নথিতে উপস্থাপন করা হলেও এ বিষয়ে গতকাল কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, শিগগির তাঁর পদত্যাগপত্রে সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী অনুমোদন দেবেন। আজ সোমবার সেটি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে যাবে, পরে তা কার্যকর হতে পারে।
এদিকে, সৈয়দ জামিলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, ডিজির অভিযোগ শুধু অসত্য নয়, তা ব্যক্তিগত আক্রোশের বহিঃপ্রকাশ।
গত ৯ সেপ্টেম্বর শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক পদে সৈয়দ জামিলকে দু’বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি গত শুক্রবার শিল্পকলা একাডেমির সচিবের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। এ সময় তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার বিষয়ে কিছু অভিযোগ করেন।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সৈয়দ জামিল পদত্যাগপত্রে কোনো কারণ উল্লেখ করেননি। পরে একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কিছু কারণ তুলে ধরেন। সেই বিজ্ঞপ্তিতে তিনি সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগের বিষয়ে কিছু অসত্য, বিভ্রান্তিকর তথ্য দেন। উপদেষ্টার বিষয়েও অসত্য, মনগড়া ও ব্যক্তিগত আক্রমণাত্মক বক্তব্য দিয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, একটি ভিডিও নির্মাণের বিষয়ে চিঠিপত্র ছাড়া টাকা দেওয়ার জন্য চাপের বিষয়ে মহাপরিচালকের অভিযোগ সম্পূর্ণ অসত্য ও বানানো। গত ২০ থেকে ২১ ফেব্রুয়ারি প্যারিসের ইউনেস্কো সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের ২৫ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান হয়। সেখানে বিশেষ আমন্ত্রিত হয়ে বাংলাদেশের উচ্চ পর্যায়ের একটি রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। বাংলাদেশের পক্ষে ওই অনুষ্ঠানে মাতৃভাষা দিবসের ইতিহাস সংরক্ষণে বাংলাদেশের অবদান তুলে ধরে বিশেষভাবে নির্মিত একটি ১৫ মিনিটের ভিডিও ও একটি লাইভ প্রোগ্রাম উপস্থাপন করা হয়। ভিডিওটি নির্মাণের জন্য গত ২ ফেব্রুয়ারি শিল্পকলা একাডেমিকে একটি চিঠি দেওয়া হয়। চিঠির ২ নম্বর অনুচ্ছেদে স্পষ্ট উল্লেখ আছে, মন্ত্রণালয়ের ৩৮ কোডের ‘সাংস্কৃতিক মঞ্জুরি-৩৮২১১১৫’ খাত থেকে বর্ণিত খরচের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ করা হবে। উন্নত কারিগরি সহায়তা ও সুষ্ঠু সমন্বয়ের মাধ্যমে ভিডিওটি নির্মাণের জন্য নিয়ম অনুযায়ী অগ্রিম কিছু টাকা নির্মাতাকে দেওয়ার অনুরোধ করা হলে শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালক অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। বাজেট বরাদ্দ না দিলে টাকা দেওয়া হবে না মর্মে সংস্কৃতি উপদেষ্টার অনুরোধ নাকচ করেন মহাপরিচালক। অথচ মহাপরিচালক এর আগে সাধুমেলা অয়োজনের জন্য শুধু উপদেষ্টার মুখের কথায় প্রায় ৩৩ লাখ টাকার অনুষ্ঠান বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেন। পরে এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়। সাধারণত জরুরি বিবেচনায় মন্ত্রণালয় তার দপ্তর সংস্থাগুলোর এ রকমভাবে কাজ এগিয়ে নেয়। তবে এবার আগেই চিঠি দেওয়া হয়েছিল। আগে এ ভিডিও নির্মাণের জন্য যথোপযুক্ত চিঠি পাঠানো হলেও মহাপরিচালকের প্রতি সম্মান ও তাঁর একগুঁয়েমির জন্য গত ১০ ফেব্রুয়ারি ফের বাজেট বরাদ্দের বিষয় উল্লেখ করে চিঠি দেওয়া হয়। মহাপরিচালক এমনভাবে বিষয়টি অবতারণা করেছেন, প্রাথমিকভাবে মনে হতে পারে উপদেষ্টা তাঁর ব্যক্তিগত কাজের জন্য অনৈতিক টাকা দাবি করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় শিল্পকলা একাডেমির কোনো কাজে হস্তক্ষেপ করেনি। মন্ত্রণালয় একাডেমির কোনো কাজ বন্ধ করতে বলেছে– এ রকম নজির নেই; বরং সব সময় শিল্পকলার কাজকে উৎসাহিত করা হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কর্মসূচিতে শিল্পকলা একাডেমির অনুরোধে মন্ত্রণালয় থেকে সাধারণ বাজেটের বাইরেও বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
জুলাই বিপ্লবের পর শিল্পকলা একাডেমির নিয়মিত বাজেট বরাদ্দের বাইরেও সংস্কৃতি উপদেষ্টা ব্যক্তিগত আগ্রহে সাধুমেলা, জুলাই বিপ্লবের ওপর বিশেষ নাটক প্রযোজনাসহ নানা অনুষ্ঠানের জন্য বিশেষ বরাদ্দ দেওয়া হয়। কোনো আর্থিক বছরে বাজেট বরাদ্দের বিষয়টি নিতান্তই অর্থ মন্ত্রণালয়ের এখতিয়ার। তাই অপর্যাপ্ত বাজেট বিষয়ে অভিযোগ নিতান্তই অমূলক ও প্রশাসনিক অদক্ষতার বহিঃপ্রকাশ।
বিক্ষুব্ধ নাগরিক সমাজের মানববন্ধন
একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার সামনে গতকাল বিকেলে সৈয়দ জামিলকে ডিজি পদে ফিরিয়ে আনার দাবিতে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-শিল্পী-নাগরিক সমাজের ব্যানারে মানববন্ধন হয়েছে। এ ছাড়া মানববন্ধন থেকে শিল্পকলার স্বায়ত্তশাসন নিশ্চিতের দাবিও জানানো হয়।
মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি রাগিব নাঈম, মহিউদ্দিন রনি, আলোকচিত্রী মরিয়ম রুপা, মামদুদুর রহমান মুক্ত, ইব্রাহিম এলিন প্রমুখ।
রাগিব নাঈম বলেন, শিল্পকলার মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে এসেও তারা নির্দেশনা জারি করছে। কোনো চিঠি না দিয়ে টাকা চেয়ে বসছে। আমলাতন্ত্রের পোষ্যতা উল্লেখ করে আলোকচিত্রী মরিয়ম রুপা বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পরে যদি আমলাতন্ত্রের পোষ্য হতে হয়, তাহলে এই বাংলাদেশ আমরা চাই না।
অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জামিল যে অভিযোগগুলো করেছে, সেগুলো পরিষ্কার হওয়া দরকার। এ ধরনের প্রতিষ্ঠান যাতে চলতে পারে, সে জন্য স্বায়ত্তশাসনের ব্যাপারটাও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: শ ল পকল এক ড ম পদত য গপত র ব জ ট বর দ দ উপদ ষ ট র অন ষ ঠ ন এক ড ম র শ ল পকল র জন য গতক ল
এছাড়াও পড়ুন:
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতার মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল
সিদ্ধিরগঞ্জে বিএনপি নেতা নীলফমারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, নীলফমারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জনাব ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন এর মুক্তি ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (৩০ এপ্রিল) সাড়ে ৫ টার দিকে আদমজী চাষাড়া সড়কে ইপিজেড এর সামনে নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত রংপুর বিভাগীয় বিএনপি সমর্থক গোস্ঠীর উদ্যোগে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য অকিল উদ্দিন ভূঁইয়া, রংপুর বিভাগ তরুণ দলের সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির ক্রিয়া ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এস, এম খোরশেদ আলম, নারায়ণগঞ্জ জেলা তরুণ দলের সাধারণ সম্পাদক মাজারুল ইসলাম, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা তাঁতী দলের সদস্য সচিব আরিফ মুন্সী, ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামাল হোসেন ভূঁইয়া, নীলফামারী জেলা তাঁতী দলের সদস্য মোঃ খোকা, লালমনিরহাট জেলা তাঁতি দলের সদস্য আশরাফ আহমেদ খান, রংপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য নিতাই সরকার ,সঞ্চালনায় জাহাঙ্গীর হোসেন সাধারণ সম্পাদক নারায়ণগঞ্জ জেলা জাসাস, ও এলাকাবাসী।
তারা সিদ্ধিরগঞ্জ থানাধীন কদমতলী হইতে বিক্ষোভ মিছিল পরিচালনা শুরু করেন এবং আদমজী ইপিজেড এর সামনে অবস্থান করেন।
এসময় মানববন্ধনে নারায়ণগঞ্জে বসবাসরত রংপুর বিভাগীয় বিএনপি সমর্থক গোস্ঠী নেতারা বলেন, এই দায়েরকৃত মিথ্যা মামলার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে প্রেরন করে।
আমরা অন্তবর্তী সরকারের কাছে এই মামলা সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নীলফমারী জেলা বিএনপি’র সাবেক সভাপতি, নীলফমারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জনাব ইঞ্জিনিয়ার শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন এর মুক্তির দাবি জানাই।
বক্তারা আরো বলেন, এটি একটি ষড়যন্ত্র মূলক মামলা তাকে মিথ্যা আসামী বানিয়ে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়। আমরা চাই দ্রুত যেন তার মুক্তি দেওয়া হয়।