রোজা রেখে ব্যায়াম করার ক্ষেত্রে শরীরের শক্তি বা অ্যানার্জি লেভেল ঠিক রাখার দিকে নজর দিতে বলেছেন পুষ্টিবিদরা। যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন এবং যারা কিছুদিন হলো ব্যায়াম করা শুরু করেছেন; তাদের জন্য রয়েছে ভিন্ন নির্দেশনা। কখন ব্যয়াম করবেন, কত সময় ব্যায়াম করা ভালো?— এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন লাবিবা তাসনিম পুষ্টিবিদ ও পরিচালক ইন্সপিরন ফিজিক্যাল ফিটনেস এ্যান্ড ডায়েট কনসাল্টেন্সি সেন্টার। 

একটি ভিডিও সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম করার সময়কাল একই থাকবে। যেমন কেউ যদি নিয়মিত দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করেন, রমজান মাসেও সে দুই ঘণ্টা ব্যায়াম করতে পারবেন। তবে কিছু প্যাটান্ট পরিবর্তন হবে এবং টাইমটা পরিবর্তন হবে। ব্যায়াম করার আদর্শ সময় হচ্ছে ইফতারের এক ঘণ্টা পর থেকে। এবং সেহেরির ঠিক ঘণ্টাখানিক আগে। এক্ষেত্রে প্রশ্ন থাকতে পারে যারা নিয়মিত দুই ঘণ্টা ওয়ার্ক আউট করেন তারা সেহেরিতে কোন সময়টাতে ওয়ার্ক আউট করবেন। সেক্ষেত্রে তাদের সেহেরিতে ওয়ার্ক আউট করার কোনো প্রয়োজন নেই। ইফতার করার দেড় ঘণ্টা পরে দুই ঘণ্টা ওয়ার্ক আউট করতে পারেন। যারা নিয়মিত ওয়ার্ক আউট করেন না, মাত্র শুরু করেছেন; তাদের ক্ষেত্রে রোজায় এক থেকে দেড় ঘণ্টা সময় যথেষ্ট ওয়ার্ক আউট করার জন্য। ’’

আরো পড়ুন:

ইফতারে কোন দেশে কী খাওয়া হয়

রোজাদারের জন্য আল্লাহর রয়েছে বিশেষ পুরস্কার

এই পুষ্টিবিদের পরামর্শ—

কেউ যদি ওয়েট লিফ্টিংয়ের ক্ষেত্রে অনেক বেশি ওয়েট লিফ্টিং করে অভ্যস্ত থাকেন, রমজান মাসে কমপক্ষে পঞ্চাশ শতাংশ কম ওজন বহন করতে পারেন। 

কার্ডিও-এর ক্ষেত্রে ইনটেন্স কার্ডিও করবেন না, লো মডারেট কার্ডিও করতে পারেন। 

অ্যারোবিকের ক্ষেত্রেও লো মডারেট অ্যারোবিক করতে পারেন। 

নিয়ম মেনে ওয়ার্ক আউট করলে বেশি ঘাম বের হবে না। এতে আপনার অ্যানার্জি লেভেল ধরে রাখতে পারবেন। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর রমজ ন ব য য় ম কর করব ন

এছাড়াও পড়ুন:

সাদপন্থীদের ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি

টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমা ময়দানে মাওলানা সাদ কান্ধলভী অনুসারীদের (সাদপন্থী) ইজতেমা আয়োজন করতে না দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। পাশাপাশি তাঁরা সরকারের প্রস্তাবে রাজি হয়ে আগামী বছরের মার্চ মাসে টঙ্গীতে বিশ্ব ইজতেমা করার কথাও বলেছেন। গত আয়োজনে ইজতেমা মাঠে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও সাজা নিশ্চিতের দাবিও জানান তাঁরা।

আজ সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়। ‘হযরত ওলামায়ে কেরাম ও দাওয়াত ও তাবলিগের সাথীবৃন্দের’ উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করা হয়।

এর আগে গত রোববার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে নির্বাচনের পর বিশ্ব ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে তাবলিগের শুরায়ে নেজামের সাথী মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘কোরআন ও হাদিসের কথা যারা বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে, তাদের ইসলামি দাওয়াতের এই ময়দানে জায়গা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। রাসুল (সা.)-এর তরিকা, সুন্নাহ ও হাদিসের অনুসরণে যারা তাবলিগি কার্যক্রম পরিচালনা করে, কেবল তারাই ইজতেমা করার অধিকার রাখে।’

মুফতি আমানুল হক আরও বলেন, ‘সরকারের ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে জারি করা প্রজ্ঞাপনে সাদপন্থীরা শেষবারের মতো টঙ্গী ময়দানে ইজতেমা করার অনুমতি পেয়েছিল। সেই প্রজ্ঞাপনে তাদের স্বাক্ষরও রয়েছে। সরকার তখনই বুঝেছিল—একই মাঠে দুই পক্ষের ইজতেমা আয়োজন দেশের নিরাপত্তার জন্য হুমকি।’

২০২৪ সালের ডিসেম্বরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের প্রসঙ্গ টেনে মুফতি আমানুল হক বলেন, ‘গত বছরের ১৮ ডিসেম্বরের রাতে সাদপন্থীদের অনুসারীরা অতর্কিত হামলা চালায়। তাদের বাংলাদেশি নেতা ওয়াসিফ সাহেবের চিঠিতে উল্লেখ ছিল, “যুগটা ব্যতিক্রমী, সবাই প্রস্তুতি নিয়ে আসবে”—এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই তারা হামলার পরিকল্পনা করেছিল। ঘুমন্ত মুসল্লিদের ওপর টর্চলাইট নিয়ে হামলা চালানো হয়, যা একতরফা সন্ত্রাসী কার্যক্রম ছিল।’ তিনি দাবি করেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বৈঠকেও প্রমাণিত হয়েছে, ‘এ হামলা একতরফাভাবে সাদপন্থীদের পক্ষ থেকেই হয়েছিল।’

মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী তাঁর লিখিত বক্তব্যে বলেন, কিছু স্বার্থান্বেষী ও ইসলামবিরোধী মহলের প্ররোচনায় তাবলিগ জামাতে বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে। ভারতের মাওলানা সাদ সাহেবের অনুসারীরা বেআইনি পথে টঙ্গী ইজতেমা মাঠ ও কাকরাইল মসজিদে প্রবেশের চেষ্টা করেন। এমনকি তাঁরা সরকারকে বিব্রত করতে ‘যমুনা ভবন ঘেরাও’ কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর বিশৃঙ্খলাকারীদের কাকরাইল মসজিদে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয় এবং শুরায়ে নেজামপন্থীদের কাকরাইলে দাওয়াত কার্যক্রম চালানোর অনুমতি দেয় বলে জানান মুফতি কেফায়েত উল্লাহ আজহারী। তিনি বলেন, ২০২৫ সালের ৪ ফেব্রুয়ারির ৬৩ নম্বর স্মারকে বলা হয়, সাদপন্থীরা শেষবারের মতো ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে টঙ্গীতে ইজতেমা করতে পারবে, এরপর আর নয়। তারা স্বাক্ষর দিয়ে সেই শর্ত মেনে নিয়েছিল।

শুরায়ে নেজামপন্থীরা বলেন, ‘আমরা সরকারের সিদ্ধান্তকে শ্রদ্ধার সঙ্গে গ্রহণ করছি। আগামী বছরের মার্চে ইজতেমা আয়োজনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করা হবে।’

সংবাদ সম্মেলন থেকে সরকারের কাছে ৪ দফা দাবি পেশ করেন তাবলিগ জামাতের শুরায়ে নেজাম (জুবায়েরপন্থী) অনুসারীরা। তাঁদের দাবিগুলো হলো ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ইজতেমার তারিখ ঘোষণা, টঙ্গী ইজতেমা মাঠকে অস্থায়ীভাবে ‘কেপিআই’ হিসেবে ঘোষণা, বিদেশি মেহমানদের ভিসা সহজীকরণের পরিপত্র নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রকাশ ও গত বছরের ইজতেমা মাঠে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা শাহরিয়ার মাহমুদ, মতিন উদ্দিন আনোয়ার, রুহুল আমিন এবং তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের (শুরায়ে নেজাম) মিডিয়া সমন্বয়ক হাবিবুল্লাহ রায়হান।

সম্পর্কিত নিবন্ধ