১. স্বামী-স্ত্রী মিলিত হলে রোজা নষ্ট হয়। রোজা ফরজ হওয়ার প্রথম দিকে রমজানের রাতেও এর অনুমতি ছিল না। পরে আল্লাহ তাআলা আয়াত নাজিল করে রাতে এর অনুমতি দেন। কোরআনে আছে, ‘রোজার রাত্রিতে তোমাদের জন্য স্ত্রী সহবাস বৈধ করা হয়েছে। তারা তোমাদের পোশাক আর তোমরা তাদের পোশাক। আল্লাহ জানতেন যে তোমরা আত্মপ্রতারণা করছ। তাই তো তিনি তোমাদের ওপর দয়া করেছেন ও তোমাদের অপরাধ ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তোমাদের স্ত্রীদের সঙ্গে সহবাস করতে পারো ও আল্লাহ তোমাদের জন্য যা বিধিবদ্ধ করেছেন, তা কামনা করো। আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো। আর যখন তোমরা মসজিদে ইতিকাফে (সংসার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে কিছুকালের জন্য ধ্যান) থাকো, তখন স্ত্রী সহবাস কোরো না। এ আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং এর ধারেকাছে যেয়ো না। এভাবে আল্লাহ মানুষের জন্য তাঁর আয়াত স্পষ্ট করে ব্যক্ত করেন, যাতে তারা সাবধান হয়ে চলতে পারে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭)
২.
৩. মুখ দিয়ে কোনো কিছু পাকস্থলীতে পৌঁছালে তা পানাহার ধরা হবে। রোজার কথা মনে থাকা সত্ত্বেও পানাহার করলে রোজা ভঙ্গ হবে। কোরআনে আছে, ‘আর তোমরা পানাহার করো, যতক্ষণ রাত্রির কৃষরেখা থেকে ঊষার শুভ্ররেখা স্পষ্টরূপে তোমাদের কাছে প্রতিভাত না হয়। তারপর রাত্রি পর্যন্ত রোজা পূর্ণ করো।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৮৭) একইভাবে নাক দিয়ে কোনো কিছু পৌঁছানোও পানাহারের অন্তর্ভুক্ত। নবী (সা.) বলেছেন, ‘রোজাদার না হলে তুমি ভালোভাবে নাকে পানি দাও।’
যেসব ইনজেকশন পানাহারের বিকল্প নয়, বরং চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয়; যেমন ইনসুলিন, পেনিসিলিন কিংবা শরীর চাঙা করার জন্য টিকা হিসেবে দেওয়া—এগুলো রোজা নষ্ট করবে না। এসব ইনজেকশন মাংসপেশিতে দেওয়া হোক কিংবা শিরাতে দেওয়া হোক।
তবে কোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, রক্তক্ষরণ ইচ্ছাকৃত নয়। একইভাবে দাঁত তোলা, ক্ষতস্থান ড্রেসিং করা কিংবা রক্ত পরীক্ষা করা—ইত্যাদির কারণে রোজা নষ্ট হবে না। কারণ, এগুলো শিঙা লাগানোর পর্যায়ভুক্ত নয়।
আরও পড়ুনরমজানের ফরজ, ওয়াজিব ও সুন্নত১০ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন’, জামায়াত আমিরের দুঃখ প্রকাশ
নারী বিষয়ক কমিশনের রিপোর্টকে শরীয়তবিরোধী ও অগ্রহণযোগ্য রিপোর্ট উল্লেখ করে এর ওপর বুধবার প্রদত্ত বক্তব্যের এক পর্যায়ে একটি শব্দের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
বৃহস্পতিবার (১ মে) নিজের ও দলের ফেসবুক পেজে এ কথা বলেন তিনি।
এতে তিনি জানান, অসাবধানতাবশত ভুল শব্দ চয়ন হয়েছে, যা একান্তই অনিচ্ছাকৃত। এজন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
প্রতিহিংসার রাজনীতিতে শান্তি আসতে পারে না: জামায়াত আমির
দেশকে যে ভালোবাসে, সে দেশ ছেড়ে পালায় না: শফিকুর রহমান
জামায়াত আমির বলেন, “রেইপ হচ্ছে বিবাহবহির্ভূত এক ধরনের জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক, যা সাধারণত বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে ঘটে, যেখানে অপরাধী ব্যক্তিটি অসৎ ও দোষী, কিন্তু ভিকটিম সম্পূর্ণ নিরপরাধ।”
“আমি এটাও মনে করি যে, বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যে ‘রেইপ' এর মতো জঘন্য শব্দকে প্রবেশ করানো পবিত্র এই সম্পর্কের জন্য অবমাননাকর এবং দীর্ঘ মেয়াদে দাম্পত্য সম্পর্কের জন্য ক্ষতিকর। স্বামী স্ত্রীর ঘনিষ্ঠতার ক্ষেত্রে কারো দ্বারা সীমালঙ্ঘন বা জুলুম সংঘটিত হলে তা স্বাভাবিক বিচারের আওতায় অবশ্যই আনতে হবে। কিন্তু বৈবাহিক সম্পর্কের মধ্যকার কোনো অনাকাঙ্খিত বিষয়কে রেইপ বা ধর্ষণের মতো জঘন্য অপরাধের সাথে তুলনা করা অবাঞ্ছণীয় এবং দীর্ঘ মেয়াদে সমস্যাজনক।”
“আমার এই অনিচ্ছাকৃত শব্দ চয়নের জন্য আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। ইসলামের দৃষ্টিতে নারীর মর্যাদা, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পায় এবং জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান সর্বদা সেই মূলনীতির ওপরই প্রতিষ্ঠিত,” বলেও দাবি করেন তিনি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ