Samakal:
2025-11-03@19:38:13 GMT

রোজায় প্রাণবন্ত ত্বক

Published: 4th, March 2025 GMT

রোজায় প্রাণবন্ত ত্বক

শুরু হয়েছে রমজান মাস। এ মাসে ত্বকের যত্নের ব্যাপারে অনেকে উদাসীন হয়ে যান। এ কারণে কারও কারও ত্বক শুষ্ক, রুক্ষ আবার কারও ত্বক তেলতেলে ও প্রাণহীন হয়ে পড়ে। রমজান মাসে রোজা রাখার পাশাপাশি সময় ও সুযোগ বুঝে ত্বকের খেয়ালও রাখতে হবে। বিশেষ করে খাবারদাবার ও রোজকার রূপচর্চার রুটিনে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে হবে। রোজায় ত্বকের যত্ন কেমন হবে– এ বিষয়ে জারা’স বিউটি লাউঞ্জের স্বত্বাধিকারী ও রূপ বিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি বলেন, ‘রোজায় ত্বকের যত্নে বিশেষ কিছু দিক খেয়াল রাখতে হবে। এখন বাইরে রোদের প্রখরতা বেড়ে গেছে। গরমের মধ্যে যেহেতু দীর্ঘ সময় পানি পান থেকে বিরত থাকতে হয়, সেহেতু ইফতারের পর থেকে খাদ্য তালিকায় পানি জাতীয় খাবার যেমন– বিভিন্ন ফলের জুস, শরবত বা পানি রাখতে হবে। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে, যেন শরীরে পানির ঘাটতি কিংবা ভিটামিনের ঘাটতি দেখা না যায়। ফ্রেশ ফ্রুটস ত্বককে ভেতর থেকে সতেজ রাখতে সাহায্য করবে।’
ভিটামিন ‘সি’, ‘ই’ ও ‘এ’ জাতীয় খাবার গ্রহণ: ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বাড়াতে ভিটামিন সি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ত্বককে তারুণ্যদীপ্ত রাখতে সাহায্য করে ভিটামিন ই। ত্বকের রুক্ষতা দূর করে ত্বককে কোমল করে ভিটামিন এ। এ জন্য খাদ্য তালিকায় পেঁপে, কমলা, চিনাবাদাম, কাঠবাদাম, ব্রকলি, গাজর-টমেটোর সালাদ, শাকসবজি ইত্যাদি রাখুন। পাশাপাশি ইফতার ও সাহ্‌রিতে তৈলাক্ত খাবার, ভাজাপোড়া খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন। 
ধাপে ধাপে ত্বকের যত্ন
মুখ পরিষ্কার: রোদের তাপ, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকে ভয়ংকর প্রভাব ফেলে। এ জন্য বাইরে থেকে ফিরেই মুখে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিতে হবে। তারপর ত্বক অনুযায়ী ভালো মানের ফেসওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। তার আগে স্ক্রাবার দিয়ে ২ মিনিট স্ক্রাব করলে ত্বক কোমল থাকবে। যদি মুখে ব্রণ কিংবা ইনফেকশন থাকে, তাহলে স্ক্রাবার ব্যবহার না করা ভালো। এ ক্ষেত্রে বেসন দিয়ে মৃদু ম্যাসাজ করে মুখ ধুয়ে ফেলুন। 
টুইজার: স্ক্রাবিংয়ের পরও যেসব ব্ল্যাক হেডস বা হোয়াইট হেডস থেকে যাবে, তা টুইজার দিয়ে তুলে ফেলতে হবে। তবে আলতোভাবে চাপ দিতে হবে। এটি প্রতিদিন করতে হবে এমন নয়, বরং সপ্তাহে একদিন কিংবা মাসে দু’দিন করা যেতে পারে। 
টোনার: মুখের পোরসের সমস্যা দূর করে টোনার। তাই ত্বক পরিষ্কার করার পর টোনার ব্যবহার করুন। টোনার না থাকলে বরফ দিয়ে ম্যাসাজ করুন। বরফ টোনারের কাজ করবে।
সিরাম: টোনার ব্যবহারের পর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ভালো মানের সিরাম ব্যবহার করতে হবে। সিরাম ত্বকের বয়সের ছাপ, রিংকেলের সমস্যা দূর করবে। এটি ত্বককে টান টান করতে সাহায্য করে এবং পোরস মিনিমাইজ করে।
ময়েশ্চারাইজার: ফেসওয়াশ ব্যবহারের পর ত্বক অনেকটা শুষ্ক হয়ে যায়। তাই ত্বককে মসৃণ করতে মুখে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার লাগান। এতে ত্বক অনেক কোমল থাকবে। ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার নির্বাচন করতে হবে। যেমন তৈলাক্ত ত্বকের জন্য জেলবেজড ময়েশ্চারাইজার, শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েলবেজড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা যেতে পারে।
সানস্ক্রিন: দিনের বেলা বাইরে গেলে অবশ্যই সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন। চুলার কাছে যাওয়ার আগেও ব্যবহার করুন। কারণ সূর্যের ক্ষতিকর বেগুনি রশ্মি, চুলার তাপ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে সানস্ক্রিন ব্যবহার করা জরুরি। 
ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন
রূপবিশেষজ্ঞ ফারহানা রুমি ঘরোয়া পদ্ধতিতে ত্বকের যত্ন নিতে অ্যালোভেরা জেলের ওপর ভরসা করার পরামর্শ দিয়েছেন। তাঁর মতে, রোজায় প্রশান্তি পেতে মুখে ও ঘাড়ে সবুজ অ্যালোভেরা জেল ব্যবহার করুন। কেননা, অ্যালোভেরা একটি প্রশান্তিদায়ক এজেন্ট হিসেবে কাজ করে। এটি ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের কোষগুলোকে নিরাময় ও মেরামত করে। দইয়ের সঙ্গে লেবুর রস ও অ্যালোভেরার রস মেশান। মিশ্রণটি ত্বকে লাগিয়ে রাখুন ১০ মিনিট। এতে ত্বক উজ্জ্বল হবে। মধুর সঙ্গে অ্যালোভেরার জেল মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর ধুয়ে ফেলুন। শুষ্ক ত্বকের জন্য প্যাকটি খুব কার্যকর।
মসুরের ডাল গুঁড়া করে নিন। এর সঙ্গে শসার রস মিশিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই ফেসপ্যাকটি স্ক্রাবার হিসেবেও ব্যবহার করতে পারেন।
একটি পাকা কলার সঙ্গে মধু মিশিয়ে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এতে ত্বক উজ্জ্বল হবে।
মুলতানি মাটি, চন্দনের গুঁড়া, টকদই ও কয়েক ফোঁটা লেবুর রস মিশিয়ে ফেসপ্যাক তৈরি করুন। এটি তৈলাক্ত ত্বকের জন্য উপকারী। v
মডেল: ইতি; ছবি: মঞ্জু আলম

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ত বক ব যবহ র কর ন র ব যবহ র র র পর ত বকক ন করত

এছাড়াও পড়ুন:

নিউইয়র্ক ছাড়িয়ে জাতীয় মুখ মামদানি

ডেমোক্র্যাট ভোটার লিয়া অ্যাশ বহু বছর ধরে কোনো রাজনীতিককে নিয়ে আশাবাদী অনুভব করেননি। তবে সম্প্রতি সেই অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। তিনি বলেন, ‘এ বছর আমার জন্য তিনিই একমাত্র আলোর দিশা। তিনি সত্যিই মানুষের কথা শুনতে চান—যাঁদের তিনি মেয়র হতে যাচ্ছেন।’

২৬ বছর বয়সী অ্যাশ যে ব্যক্তির কথা বলছেন, তিনি হলেন জোহরান মামদানি, যিনি নিউইয়র্ক সিটির মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রার্থী।

মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারে জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি প্রাধান্য দিচ্ছেন। এ কারণেই অ্যাশ নিঃসংকোচে মামদানিকে ভোট দিতে চান। তবে তিনি মামদানিকে ভোট দিতে পারছেন না। কারণ, তিনি থাকেন নিউইয়র্ক থেকে প্রায় ১ হাজার ২০০ মাইল দূরে, মিসিসিপির গালফপোর্ট শহরে।

অ্যাশ বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে চাই, কোনো একদিন গালফপোর্ট, মিসিসিপিতেও এক জোহরান মামদানি আসবেন।’

জাতীয় পর্যায়ে আলোচিত মুখ

মাত্র কয়েক মাসের মধ্যেই ৩৪ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাটিক সোশ্যালিস্ট মামদানি এক প্রান্তিক প্রার্থী থেকে জাতীয় পর্যায়ের আলোচিত মুখে পরিণত হয়েছেন। গত জুন মাসের দলীয় নির্বাচনে তিনি অপ্রত্যাশিতভাবে বিজয়ী হন। ওই নির্বাচনে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সীদের ভোটার উপস্থিতি ছিল সবচেয়ে বেশি।

আগামীকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক শহরে মেয়র নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগের সব জরিপেই দেখা গেছে, নিউইয়র্ক শহরের সাবেক মেয়র অ্যান্ড্রু কুমোর চেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মামদানি এগিয়ে রয়েছেন। মামদানি আশা করছেন, আগেরবারের মতো এবারও তরুণ ভোটাররা তাঁর পাশে থাকবেন। তবে শুধু নিউইয়র্কের মধ্যেই নয়, জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয় মোকাবিলার তাঁর অঙ্গীকার পুরো দেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। অনেক জেন–জি ও মিলেনিয়ালস প্রজন্মের মানুষ বলছেন, তাঁদের সবচেয়ে বড় উদ্বেগের জায়গায় হাত রেখেছেন মামদানি। তরুণ প্রজন্ম যখন রাজনীতিকদের প্রতি আশা হারিয়ে ফেলেছেন এবং প্রচলিত নিয়ম ভেঙে নতুন কণ্ঠস্বরের অপেক্ষায় আছেন, তখনই মামদানির উত্থান।
যুক্তরাষ্ট্রের গবেষণাপ্রতিষ্ঠান সার্কেলে তরুণ ভোটারদের নিয়ে গবেষণা করেন রুবি বেল বুথ। তিনি বলেন, ‘যখন কোনো প্রার্থী জনগণের উদ্বেগ নিয়ে কথা বলেন এবং সেই উদ্বেগকে স্বীকৃতি দেন, তখন সেটি বিশাল প্রভাব ফেলে, বিশেষ করে তরুণ ভোটারদের ক্ষেত্রে।’

রুবি বেল বুথ আরও বলেন, ‘তরুণেরা যখন সত্যিই অনুভব করেন যে তাঁদের কথা শোনা হচ্ছে, তাঁদের প্রতি সম্মান দেখানো হচ্ছে, তখন যেকোনো প্রার্থী সফল হতে পারেন। তবে এখন সেটি করছেন মামদানি। আর এর আগে হয়তো সেটা করেছিলেন ট্রাম্প।’

রক্ষণশীলদের মধ্যেও জনপ্রিয়

রক্ষণশীল রাজ্য মিসিসিপিতে বসবাস করলেও লিয়া অ্যাশ সব সময়ই ডেমোক্র্যাট প্রার্থীদের ভোট দিয়ে আসছেন। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তিনি রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হতাশ ও উপেক্ষিত বোধ করছেন। এই অনুভূতি আরও তীব্র হয়েছে তাঁর অর্থনৈতিক বাস্তবতা থেকে। অন্যদিকে অ্যান্ড্রু টেইট ভার্জিনিয়ার এক গ্রামীণ এলাকায় একটি ছোট খামারে তাঁর সঙ্গী ও সন্তানদের নিয়ে থাকেন এবং স্থানীয় একটি কারখানায় কাজ করেন। তিনিও মূল্যস্ফীতি ও পরিবারের আর্থিক ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্ন।
অ্যাশ বলেন, ‘দেশের অন্যতম দরিদ্র রাজ্য হয়েও মিসিসিপিতে বাড়ির দাম বেড়েই চলেছে। এটা সত্যিই মন খারাপ করে দেয়।’ তবু অ্যাশ আশা করছেন, যদি মামদানি নির্বাচনে জয়ী হন, তাহলে সেটি দেশের অন্যান্য শহরের ডেমোক্র্যাট নেতাদের জন্য একটি বার্তা হয়ে যাবে।

জোহরান মামদানি তাঁর নির্বাচনী প্রচারণায় একাধিক অঙ্গীকার করেছেন, বিশেষ করে বাসস্থান নিয়ে। তাঁর লক্ষ্য শহরের খরচ কমানো। তবে সমালোচকেরা বলছেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবসম্মত নয়। আর রক্ষণশীলদের, বিশেষ করে ট্রাম্পের সমর্থকদের কাছে মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি বিপজ্জনক। তবু এসব সতর্কতা তরুণ মার্কিন ভোটারদের খুব একটা বিচলিত করছে না। তাঁরা রাজনৈতিক দলের লেবেলের পরিবর্তে মামদানির বাস্তব জীবনের সমস্যা ও সমাধানমুখী বার্তাতেই বেশি আকৃষ্ট হচ্ছেন।

গবেষক বেলি বুথ বলেন, ‘মামদানিই এমন একজন প্রার্থী, যিনি প্রচলিত ব্যবস্থাকে নানা দিক থেকে চ্যালেঞ্জ করছেন।’

২৬ বছর বয়সী ডেমোক্র্যাট এমিলি উইলসনের মতে, জীবনযাত্রার ব্যয়ের সংকট দলীয় বিভাজনের ঊর্ধ্বে থাকা উচিত। ফ্লোরিডার সেন্ট পিটার্সবার্গে বসবাসরত এমিলি দূর থেকেই মামদানিকে সমর্থন করছেন। মিশিগানের অ্যান আরবারের কাছে এক ছোট শহরে বসবাসরত ২৫ বছর বয়সী ডেইজি লুপাও একইভাবে ভাবেন। তাঁর মতে, মামদানির প্রচারাভিযানটা নতুন এক দৃষ্টিভঙ্গি এনে দিয়েছে। তাঁর অনেক প্রস্তাব গ্রামীণ আমেরিকাসহ নিজ সম্প্রদায়ের জন্যও কার্যকর হতে পারে। লুপা বলেন, ‘নিউইয়র্কে তিনি যেসব পরিবর্তন আনতে চাচ্ছেন, সেগুলোর অনেকটাই আমরা গ্রামীণ এলাকায় আরও বেশি করে চাই। কারণ, এখানে তো সেগুলোর অস্তিত্বই নেই।’
সতর্ক আশাবাদ

আরও পড়ুননিউইয়র্কের এত ইহুদি কেন জোহরান মামদানির পক্ষে প্রচার চালাচ্ছেন০১ নভেম্বর ২০২৫

তবে যাঁরা নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে ভোট দিতে পারবেন, তাঁদের কাছে মূল প্রশ্ন—মামদানি কি সত্যিই জীবনযাত্রার ব্যয়ের এই সংকট কাটাতে পারবেন? ৩২ বছর বয়সী ডিলন রবার্টসনের জন্য অর্থনৈতিক উদ্বেগ যেন জীবনের স্থায়ী সঙ্গী।  স্নাতক শেষে তাঁর শিক্ষাঋণ দাঁড়াবে প্রায় আড়াই লাখ ডলার। মামদানিকে সমর্থন করছেন রবার্টসন।

কারণ, তাঁর প্রস্তাবিত ব্যয় সাশ্রয়ী পরিকল্পনাগুলো জীবনকে কিছুটা সহজ করতে পারে। তবে একই সঙ্গে তিনি সংশয়ও প্রকাশ করেন। ডিলন বলেন, ‘মামদানি যা বলছেন, সবই শুনতে ভালো লাগে। কিন্তু আমি ভাবি, তিনি কি সত্যিই পারবেন? বাস্তবে কি তা সম্ভব? নাকি এটা যেন ফুটো জাহাজে শুধু ব্যান্ডেজ লাগানোর মতো?’
তবু ডিলন স্বীকার করেন. যদি বিকল্প হয়, আগের মতোই টেনে নেওয়া অথবা কিছু নতুন চেষ্টা করা, তাহলে তিনি নতুনটাকেই সুযোগ দিতে প্রস্তুত।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন১১ ঘণ্টা আগেআরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ