স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের পরিচালক (গ্লোবাল সাবসিডিয়ারিজ) জীনাত হারুন। নিজ ক্ষেত্রে দারুণ পেশাদারিত্ব এবং নেতৃত্বের ছাপ রাখা এই কর্মকর্তার কাছে তার প্রিয় উক্তিটি জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘উদাহরণের মাধ্যমে নেতৃত্ব দেওয়াই সর্বোত্তম উপায়। যে পরিবর্তনটি আমরা দেখতে চাই, নিজের মাঝেই সেই পরিবর্তনকে ধারণ করতে হবে।’

দেশের ব্যাংকিং খাতের একজন অন্যতম ব্যক্তিত্ব জীনাত হারুন। দায়িত্বের অংশ হিসেবে ইউরোপ এবং কোরিয়ার মাঝে বাণিজ্যিক নেটওয়ার্কগুলোর সমন্বয়ে কাজ করেন তিনি। 

নিজ কর্মক্ষেত্রে তো বটেই, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের মাঝেও তিনি নিজের কাজের প্রভাব রেখে যাবেন বলে আশা করেন জীনাত। 

তিনি জানান, কর্মজীবনের শুরু থেকেই অনুজদের সঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা ছড়িয়ে দিতে চেষ্টা করেছেন তিনি। এর ফল হিসেবে নিজ চোখেই দেখেছেন তাদের উন্নতি। তার জন্য বড় গর্ব এবং উদ্যমের বিষয় এটি। 

পৃথিবী প্রতিনিয়তই পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। জীনাত মনে করেন, এমন একটি পৃথিবীতে সকল কর্মীর মাঝেই একাগ্রতা এবং অনবরত শিক্ষা গ্রহণের মানসিকতা তৈরি করা জরুরি। এক্ষেত্রে নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তির উচিত সুবিবেচনাভিত্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিবেশ তৈরি করা এবং সকলের মাঝে সততা ও সমবেদনার চর্চা নিশ্চিত করা।

আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২৫ উপলক্ষে, ইউনিলিভার বাংলাদেশের ‘এক্সেলারেট অ্যাকশন–এম্পাওয়ার্ড ওমেন, এম্পাওয়ারিং দ্য ফিউচার’ ক্যাম্পেইনের অধীনে জীনাত হারুনের নিবেদিত চেতনাকে স্বীকৃতি জানানো হয়েছে। 

জীনাত হারুন জানান, ইতিহাসের অন্যতম প্রভাবশালী নারীদের মাঝে রয়েছেন ক্লিওপেট্রা, রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, অ্যাঙ্গেলা মর্কেল এবং জ্যাসিন্ডা আর্ডেনের মতো ব্যক্তিত্ব। তারা প্রত্যেকেই বাধা পেরিয়ে, পরিবর্তন এনে নিজ নিজ অবস্থানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন। 

জীনাত বিশ্বাস করেন, ইতিহাসের প্রভাবশালী নারীদের সাহস এবং দৃঢ় সংকল্প থেকেই আমরা শিখতে পারি যে নেতৃত্বের আসলে কোনো লিঙ্গ হয় না। নারীদের নিজের স্বপ্ন ও সংকল্পকে সবসময়েই প্রাধান্য দিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ