রাষ্ট্র পুনর্গঠন কাঠামোতে ঢাকা ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের প্রতিবাদ এবং ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণের দাবিতে রাজশাহীতে রেললাইন অবরোধ করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বুধবার বেলা ১১টা ২৫ মিনিটের দিকে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টেশনবাজার সংলগ্ন ঢাকা-রাজশাহী রেললাইন অবরোধ করেন তারা। পরে, দুপুর ১টায় তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন। এতে দেড় ঘণ্টা পর রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ স্বাভাবিক হয়। 

বাংলাদেশ রেলওয়ে পাকশীর বিভাগীয় পরিবহন কর্মকর্তা হাসিনা খাতুন সমকালকে জানান, এই কর্মসূচির ফলে দুইটি ট্রেন দেরিতে চলছে। ধুমকেতু ট্রেনের ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট এবং কপোতাক্ষ ট্রেনের ৫৫ মিনিট দেরি হয়েছে। 

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তিনটি দাবি উপস্থাপন করে আজকের কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। তাদের দাবিগুলো হলো- ১.

রাবি, চবি, জাবি, জবি, ৭ কলেজ, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, মাদ্রাসাসহ বাংলাদেশের সব স্টেইকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে রাষ্ট্র সংস্কারে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, ২. সংস্কার কমিশন, পিএসসি, ইউজিসিসহ রাষ্ট্রীয় সব গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ও সংস্থাগুলো পুনরায় গঠন করে সবার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে, ৩. ডিসেন্ট্রালাইজড বাংলাদেশ গঠনে দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি রুপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

এর আগে একই দাবিতে গতকাল মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফজলে রাব্বি মো. ফাহিম রেজা বলেন, ৫ আগস্টের বিজয়ের পর আমাদের প্রত্যেকের আকাঙ্ক্ষা ছিল আমরা সবাই একসঙ্গে রাষ্ট্র পুনর্গঠন করব। কিন্তু এতদিন পরে এসেও আমরা দেখছি ঢাবি বা ঢাকা কেন্দ্রিক নির্দিষ্ট একটি সিন্ডিকেটের কাছে রাষ্ট্র বন্দি হয়ে গেছে। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা শ্রেণির মানুষ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভূমিকা অস্বীকার করে এককভাবে ক্ষমতার কেন্দ্র ঢাবি বা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে করা হয়েছে। আজকে রেললাইন অবরোধ করে আমরা দাবি জানাচ্ছি, আন্দোলনের প্রত্যেকটা অংশীদার ও পাবলিক-প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাষ্ট্র পুনর্গঠনের সুযোগ দিতে হবে।

আরেক সাবেক সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, জুলাই বিপ্লবে দেশের প্রত্যেকটা প্রাইভেট-পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয়, মাদ্রাসা, স্কুল-কলেজে ফ্যাসিবাদ প্রতিরোধের একটা দুর্গ গড়ে উঠেছিল। কিন্তু বিপ্লব পরবর্তী সময়ে সেই একক আধিপত্যবাদের ব্যাপারটা আবার চলে এসেছে।
 
তিনি বলেন, ইউজিসি-পিএসসিতে সদস্য, সংস্কার কমিশন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, এমনকি উপদেষ্টামণ্ডলী—সবকিছুতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রিক নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনে দেশের প্রত্যেকটা প্রতিষ্ঠান থেকে রক্ত ঝরেছে, তাহলে সুবিধা কেন একটি প্রতিষ্ঠান পাবে?

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় বিকেলে বৈঠকে বসছে কমিটি

সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫ পর্যালোচনায় আজ সোমবার বিকেল ৪টায় বৈঠকে বসছে এ সংক্রান্ত উচ্চ পর্যায়ের কমিটি। জাতিসংঘের গুমবিষয়ক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে আজ সোমবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ  কথা বলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল।

আইন উপদেষ্টা বলেন, ‘আমরা আজ বিকেল ৪টায় মিটিংয়ে বসছি। সেখানে তাদের দাবিগুলো পর্যালোচনা করব। আমরা সুপারিশগুলো উপদেষ্টা পরিষদে তুলব। সরকারি কর্মচারী ভাইদের বলব, সরকারি কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে। আমাদের সিদ্ধান্ত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করেন।’

তিনি বলেন, ‘সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ পুনরায় বিবেচনার যথেষ্ট অবকাশ রয়েছে। অবশ্যই এটা পুনরায় বিবেচনার সুযোগ রয়েছে। সরকারি কর্মচারীরা বিড়ম্বনার শিকার হতে পারেন এমন কিছু করা হবে না। এজন্য উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করা হয়েছে।’

গত ৪ জুন এ অধ্যাদেশ নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনায় আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের একটি কমিটি গঠন করেছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ। কমিটির সদস্য হিসেবে আছেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এবং মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আবদুর রশীদ। এ কমিটিকে সাচিবিক সহায়তা দেবেন ভূমি মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ