মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস পাঁচ দশক ধরে আলোচিত প্রযুক্তি ব্যক্তিত্ব। মাইক্রোসফটকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে সফল প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার পাশাপাশি বিশ্বের নানা প্রান্তের বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনসংক্রান্ত গবেষণার বিষয়ে নিয়মিত খোঁজখবর রাখেন বিল গেটস। আর তাই দীর্ঘ পেশাগত জীবনে বেশ কয়েকবার প্রযুক্তিনির্ভর ভবিষ্যদ্বাণী করেছেন তিনি। তবে এসব ভবিষ্যদ্বাণীর বেশ কয়েকটি সত্য হয়নি। বিল গেটসের কিছু ব্যর্থ ভবিষ্যদ্বাণী কথা জেনে নেওয়া যাক।

ইন্টারনেট ব্যর্থ হবে

নব্বই দশকের শুরুর দিকে বিল গেটস ইন্টারনেটের বাণিজ্যিক সম্ভাবনাকে অবমূল্যায়ন করেছিলেন। ১৯৯৪ সালে তিনি জানিয়েছিলেন, পরবর্তী দশকে ইন্টারনেটের জন্য সামান্য বাণিজ্যিক সম্ভাবনা রয়েছে। ইন্টারনেট নিয়ে তাঁর সংশয়ের কথা ১৯৯৫ সালে লেখা ‘দ্য রোড অ্যাহেড’ বইতে প্রতিফলিত হয়েছিল। সেখানে তিনি ইন্টারনেটের আসন্ন আধিপত্যকে তেমন স্বীকৃতি দেননি। যদিও এক বছরের মধ্যে তাঁর ভাবনায় পরিবর্তন আসে, যা মাইক্রোসফটকে দ্রুতবর্ধনশীল ইন্টারনেট বিস্তৃতির সঙ্গে তাল মেলাতে সহায়তা করেছিল।

২০১৩ সালের মধ্যে ভয়েস সার্চ কি–বোর্ড অনুসন্ধানকে ছাড়িয়ে যাবে

২০০৮ সালে কার্নেগি মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বক্তৃতায় বিল গেটস আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, আজ থেকে পাঁচ বছর পরে কি–বোর্ডের চেয়ে কথার মাধ্যমে অনলাইনে বেশি অনুসন্ধান করা হবে। ২০১৩ সালে তাঁর সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য পরিণত হয়নি। সিরি, অ্যালেক্সা ও গুগল অ্যাসিস্ট্যান্টের মতো ভার্চ্যুয়াল সহকারীর কারণে ভয়েস সার্চ বৃদ্ধি পেলেও অনলাইনে এখনো কি–বোর্ডভিত্তিক অনুসন্ধান বেশি করা হয়।

আরও পড়ুননিজের যে সিদ্ধান্তের জন্য অনুতপ্ত বিল গেটস২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫২০১২ সালের মধ্যে ছাপানো ফোন ডিরেক্টরি হারিয়ে যাবে

২০০৭ সালে বিল গেটস ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, ইয়েলো পেজের মতো ছাপানো ফোন ডিরেক্টরি ২০১২ সালের মধ্যে হারিয়ে যাবে। যাঁদের ৫০ বছরের কম বয়স, তাঁরা আর ছাপানো ফোন ডিরেক্টরি ব্যবহার করবেন না। ছাপানো ডিরেক্টরির ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেলেও ২০১২ সালের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায়নি। যদিও বর্তমানে বিল গেটসের ভবিষ্যদ্বাণীর মিলে গেছে। ডিজিটাল এই যুগে ছাপানো ফোন ডিরেক্টরির ব্যবহার নেই বললেই চলে।

২০০৭ সালের মধ্যে ট্যাবলেট কম্পিউটার জনপ্রিয় হবে

২০০২ সালে বিল গেটস জানিয়েছিলেন, পাঁচ বছরের মধ্যে ট্যাবলেট কম্পিউটার যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় কম্পিউটার হিসেবে পরিচিতি পাবে। কিন্তু জনপ্রিয়তা পেলেও ২০০৭ সাল পর্যন্ত ডেস্কটপ কম্পিউটার ও ল্যাপটপের তুলনায় কম বিক্রি হয়েছে ট্যাবলেট কম্পিউটার।

আরও পড়ুনবিল গেটসের শৈশব কেমন ছিল২২ ডিসেম্বর ২০২৪২০০৬ সালের মধ্যে স্প্যাম ই-মেইল নির্মূল হবে

২০০৪ সালে বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বিল গেটস অদ্ভুত এক ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, অনাকাঙ্ক্ষিত স্প্যাম ই-মেইল আগামী দুই বছরের মধ্যে হারিয়ে যাবে। তবে তাঁর এই ভবিষ্যদ্বাণী ভুল প্রমাণিত হয়েছে। ই-মেইল ফিল্টারিং প্রযুক্তির অগ্রগতি সত্ত্বেও এখনো স্প্যাম ই-মেইল একটি বড় সমস্যা।

পাসওয়ার্ড অপ্রচলিত হয়ে যাবে

২০০৪ সালে একটি সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলনে বিল গেটস জানিয়েছিলেন, পাসওয়ার্ড একসময় অপ্রচলিত হয়ে যাবে, কারণ, ভবিষ্যতে মানুষের কাছে বায়োমেট্রিক ছাপ ও অন্যান্য সুরক্ষা ব্যবস্থা জনপ্রিয় হবে। কিন্তু ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানিং, ফেসিয়াল রিকগনিশন ও টু-ফ্যাক্টর অথেনটিকেশন প্রযুক্তি বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়তা পেলেও পাসওয়ার্ড এখনো ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

আরও পড়ুনবিল গেটস ম্যাকডোনাল্ডসে বিনা মূল্যে খাওয়ার সুযোগ পান কেন?১৬ জুন ২০২৪কম্পিউটার মাউস বিলুপ্ত হয়ে যাবে

২০০৮ সালে কনজ্যুমারস ইলেকট্রনিকস শোতে বক্তব্যের সময় বিল গেটস মাউস নিয়ে একটি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। তাঁর ধারণা ছিল, কম্পিউটার মাউস শিগগিরই বিলুপ্ত হয়ে যাবে। মাউসের পরিবর্তে টাচ, ভয়েস ও স্টাইলাসভিত্তিক যন্ত্র জনপ্রিয় হবে। বর্তমানে টাচস্ক্রিন ডিভাইস ও ভয়েসনিয়ন্ত্রিত সিস্টেম জনপ্রিয়তা পেলেও মাউস তার আবেদন ধরে রেখেছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ল গ টস র কর ছ ল ন জনপ র য বছর র ব যবহ

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীর সাবেক এমপি তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ

দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা অবৈধ সম্পদ অর্জন ও কর ফাঁকির পৃথক দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নীলফামারী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত।

শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিন বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার বোন সেলিমা ইসলামের ছেলে।

মঙ্গলবার ঢাকার পৃথক দুই বিশেষ জজ আদালতে তার আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহর মাধ্যমে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। 

প্রথমে কর ফাঁকি মামলায় জামিন শুনানি শেষে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৯ এর বিচারক কবির উদ্দিন প্রামাণিক তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৭ এর বিচারক প্রদীপ কুমার রায়ের মামলাতেও তাঁর জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেয়া হয়েছে।

শাহরিন ইসলাম চৌধুরী তুহিনের আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেজবাহ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেন, দুই মামলায় তাকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত সাজা দিয়েছিলেন। এ সাজার জামিন দেওয়ার এখতিয়ার আদালতের নেই। আমরা উচ্চ আদালতে তার জামিন আবেদন করবো। আশা করি উচ্চ আদালত তার জামিন মঞ্জুর করবেন।

কর ফাঁকি ও অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত এক এগারোর পর ২০০৭ সালে তার বিরুদ্ধে গুলশান থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করে দুদক। এর মধ্যে কর ফাঁকির মামলায় ২০০৮ সালে পৃথক দুটি ধারায় তিন বছর ও পাঁচ বছরসহ মোট আট বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। দুই ধারার সাজা একত্রে চলবে বিধায় তাকে সর্বোচ্চ পাঁচ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে বলে বিচারক রায়ে উল্লেখ করেন। এ ছাড়া অবৈধ সম্পদের মামলায় ২০০৮ সালে তাকে ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত।

জামিনের আবেদনে শাহরিন ইসলাম উল্লেখ করেন, তিনি ১৯৯৮-১৯৯৯ কর বছর থেকে ২০০৬-২০০৭ কর বছর পর্যন্ত আয়কর রিটার্ন দাখিল করেছেন। তিনি সেখানে তার সব সম্পদের তথ্য উল্লেখ করেছেন। বিচারিক আদালত থেকে তিনি ন্যায়বিচার পাননি বলে দাবি করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীলফামারীর সাবেক এমপি তুহিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ