চট্টগ্রামের মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভায় নিজস্ব ডাম্পিং স্টেশন না থাকায়  মহাসড়কের পাশে বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। এতে দুর্গন্ধের কারণে পথচারী ও স্থানীয় বাসিন্দারা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। প্রথম শ্রেণির মর্যাদার এই দুই পৌরসভায় দীর্ঘদিনেও নিজস্ব ডাম্পিং স্টেশন গড়ে না ওঠায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। 

জানা গেছে, মিরসরাই ও বারইয়ারহাট পৌরসভার প্রতিদিনের বর্জ্য পৌর কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উভয় পাশে ফেলা হচ্ছে। মাঝেমধ্যে এসব বর্জ্য ধ্বংস করতে আগুন দিয়ে পোড়ানো হয়। এতে পরিবেশ দূষণের সঙ্গে বাতাসে ভেসে বেড়ায় মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নানা বস্তু। এ ছাড়া আগুনের ধোঁয়ায় অনেক সময় মহাসড়কের কিছু অংশ অন্ধকারচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এতে দুর্ঘটনার ঝুঁকিতে পড়েন যানবাহন চালকরা। এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। 

বারইয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভা সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৯ সালে স্থানীয় সরকার ও সমবায় মন্ত্রণালয় থেকে বারইয়ারহাট পৌরসভা প্রতিষ্ঠার গেজেট প্রকাশ করা হয়। ২০০০ সালের ২৭ এপ্রিল পৌরসভাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। উত্তর চট্টগ্রামের বাণিজ্যিক এলাকাখ্যাত বারইয়ারহাটে ছোট-বড় কলকারখানাসহ অসংখ্য বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কিন্তু জনগুরুত্বপূর্ণ পৌরসভাটিতে নেই ময়লা ডাম্পিং স্টেশন। 

অপরদিকে ২০০০ সালের ৮ নভেম্বর উপজেলা সদরে মিরসরাই পৌরসভা প্রতিষ্ঠা করা হয়। ১০ দশমিক ৫০ বর্গকিলোমিটার আয়তনের এ পৌরসভার প্রতিদিনের ময়লা ফেলা হচ্ছে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উত্তর দিকে বাইপাস এলাকায়। এতে করে জনদুর্ভোগ বাড়ার পাশাপাশি ঘটছে দুর্ঘটনা।

সরেজমিন দেখা যায়, বারইয়ারহাট পৌরসভার প্রতিদিনের বর্জ্য পৌর বাজারের দক্ষিণ অংশে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহসড়কের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে ফেলা হয়। ওই স্থানের আশপাশে একটি বেসরকারি হাসপাতাল ও বেশ কিছু আবাসিক ভবন রয়েছে। বর্জ্যের দুর্গন্ধ ও বর্জ্যগুলো ধ্বংস করতে দেওয়া আগুনের ধোঁয়ায় পথচারী ও এলাকাবাসী দুর্ভোগে পড়ছেন। 

স্থানীয় বাসিন্দা মো.

আল আমিন জানান, তিনি পরিবার নিয়ে বাসা ভাড়া করে থাকেন। পৌরসভার ফেলা বর্জ্যের দুর্গন্ধের কারণে বসবাস করা কষ্টকর। নুরুল আফছার নামে এক পথচারী বলেন, পৌরবর্জ্য ফেলার ওই স্থানটুকু অতিক্রম করতে দুর্গন্ধে যেন দম বন্ধ হয়ে আসে। 

এদিকে মিরসরাই পৌরসভার বর্জ্যগুলো পৌর বাজারসংলগ্ন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পশ্চিম পাশে ফেলা হয়। মাঝেমধ্যে ওই বর্জ্যগুলো ধ্বংস করতে আগুন দেওয়া হলে বাতাসে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পরিমাণ আরও বেড়ে যায়। মো. হাসান নামে এক বাসিন্দা জানান, পৌর বর্জ্যগুলোর জন্য লোকালয়ের বাইরে ডাম্পিং স্টেশন স্থাপন করা প্রয়োজন। যে স্থানে ময়লাগুলো ফেলা হচ্ছে, সেখান থেকে সামান্য দূরে একটি বিদ্যালয়। ছাত্রছাত্রীদের খুব সমস্যা হয়। 

বারইয়ারহাট পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা সমর কান্তি চাকমা বলেন, ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে ময়লা ডাম্পিংয়ের জন্য ১ একর ৬৫ শতক জমি কেনা হয়েছে। বরাদ্দ পেলে একটি পরিকল্পিত ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করা হবে। 

মিরসরাই পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা কাইয়ুম উদ্দিন বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় বারইয়ারহাট ও মিরসরাই পৌরসভার জন্য ডাম্পিং স্টেশন নির্মাণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। বরাদ্দ পেলে সেটি নির্মাণ করা হবে। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র বর জ য প রসভ র র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

রাইজিংবিডিতে সংবাদ প্রকাশ: ডেরা রিসোর্টের লাইসেন্স বাতিল

মানিকগঞ্জের ঘিওরের বালিয়াখোড়ায় অবস্থিত ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের নানা অনিয়ম নিয়ে রাইজিংবিডিতে ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর প্রতিষ্ঠানটির লাইসেন্স বাতিল করেছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। একইসঙ্গে ডেরা রিসোর্টে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর)  বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সহকারী নিয়ন্ত্রক (সিনিয়র সহকারী সচিব) শেখ রাশেদুজ্জামান স্বাক্ষরিত এক নির্দেশনা পত্রে এ তথ্য জানানো হয়েছে। 

জানা গেছে, ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টার ২০২২ সালের ১৮ ডিসেম্বর লাইসেন্স প্রাপ্তির আবেদন করেন। নানা অনিয়মের কারণে তাদের লাইসেন্স নামঞ্জুর করা হয়েছে। রিসোর্টের লাইসেন্স না থাকায় প্রশাসনকে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

২০২৫ সালের ১৪ জানুয়ারি ‘ফসলি জমি দখল করে ডেরা রিসোর্ট নির্মাণ, বিপাকে কৃষক’; ১৯ মার্চ ‘ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে ডেরা রিসোর্ট, তদন্ত কমিটি গঠন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে রাইজিংবিডি। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ‘কবরস্থানে হরিণের খামারসহ নানা অনিয়মের আখড়া ডেরা রিসোর্ট’ শিরোনামে প্রতিবেদনটি প্রকাশের পর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয় ডেরার লাইসেন্স নামঞ্জুর করে ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন। 

সুশাসনের জন্য নাগরিক মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইন্তাজ উদ্দিন বলেন, “অনলাইন নিউজ পোর্টাল রাইজিংবিডিতে ডেরা রিসোর্ট নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোতে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও ভোগান্তি তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদক অনুসন্ধান করে ডেরা রিসোর্টের নানা অনিয়ম তুলে এনেছেন। প্রতিবেদন প্রকাশের পর প্রশাসন লাইসেন্স বাতিল করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছে এটি ভালো উদ্যোগ। তবে এসব নির্দেশনা কাগজে কলমের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে বাস্তবায়ন করাটাই বড় কাজ। নির্দেশনা বাস্তবায়ন হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে।” 

মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক ড. মানোয়ার হোসেন মোল্লা বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার কপি পেয়েছি। সে অনুযায়ী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক ওমর ফারুক বলেন, “লাইসেন্সের বিষয়ে কোন নোটিশ এখনও পাইনি আমরা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার বিষয়েও জানা নেই। যদি লাইসেন্স বাতিল করে থাকে, তাহলে আমরা আইনিভাবে বিষয়টি সমাধান করব।”

এ বিষয়ে জানতে বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সকালে এশিউর গ্রুপের অঙ্গসংগঠন ডেরা রিসোর্ট এন্ড স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ সাদীর মোবাইলে ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/চন্দন/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ