Samakal:
2025-09-17@22:53:37 GMT

কঠোর হস্তে দমন করুন

Published: 6th, March 2025 GMT

কঠোর হস্তে দমন করুন

সাম্প্রতিক সময়ে ‘মব’ তথা সংঘবদ্ধ উচ্ছৃঙ্খলতা এমন উদ্বেগজনক পর্যায়ে উপনীত, অতীতের সকল মাত্রা অতিক্রম করিয়াছে। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও এতটা অসহায় হইয়া পড়িয়াছে, অনেক সময় দেখিয়াও না দেখিবার ভান করিতেছে। আবার পুলিশের ঔদাসীন্য ও নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অনেকে দলবদ্ধ হইয়া আইন স্বহস্তে তুলিয়া লইতেছে। রাজনৈতিক কিংবা অর্থনৈতিক স্বার্থে যদ্রূপ এহেন অরাজকতা চলিতেছে, তদ্রূপ এই অবকাশে ব্যক্তিগত বিরোধেও মব উন্মাদনার মাধ্যমে অনেকেরই প্রতিশোধ গ্রহণের ঘটনা উড়াইয়া দেওয়া যায় না। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সমকালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, নিরপরাধ ব্যক্তি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী– এমনকি বিদেশি নাগরিকরাও ইহা হইতে রক্ষা পাইতেছে না। আমরা মনে করি, এই প্রকার পরিস্থিতি আইনশৃঙ্খলার জন্য অশনিসংকেত। মব সহিংসতা থামাইতে না পারিলে সাধারণ নাগরিক নিরাপত্তার হুমকির মুখে পড়িবে।

সমকালের প্রতিবেদনে প্রকাশ, অন্তর্বর্তী সরকারের সাত মাসে দেশে গণপিটুনির শতাধিক অঘটনে প্রায় সোয়াশত মানুষ প্রাণ হারাইয়াছে, যেইখানে এক দশকে মারা গিয়াছেন প্রায় আটশত মানুষ। মব সহিংসতা অনেকটা সংক্রামক ব্যাধির ন্যায়; এক স্থানে হইলে অন্যত্র উহার প্রভাব পড়িয়া থাকে এবং কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করিতে না পারিলে দ্রুত বিস্তার ঘটে। সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে সাম্প্রতিক এইরূপ কতিপয় মবের সাক্ষী আমরা হইয়াছি, যেইগুলি হতাশাব্যঞ্জক। মঙ্গলবার বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় ‘ছিনতাইকারী’ আখ্যা দিয়া মব তৈয়ার করিয়া দুই ইরানি নাগরিকসহ তিনজনকে বেদম প্রহার করা হইয়াছে। একই দিবসের মধ্যরাত্রিতে গুলশানে সাবেক এক সংসদ সদস্যের সাবেক স্ত্রীর বাসায় প্রবেশ করিয়া তল্লাশির নামে মালপত্র তছনছ, ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হইয়াছে। গত সোমবার চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় লুটপাট ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করিয়া গণপিটুনিতে দুইজনকে হত্যা করা হয়। একই দিবসে গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসকে জায়গা ছাড়িয়া দেওয়া লইয়া বাগ্‌বিতণ্ডার জেরে এক অটোরিকশাচালকের হাত ও পায়ের রগ কাটিয়া হত্যা করা হইয়াছে। চুরির অভিযোগে বর্বরোচিত হামলা কিংবা সন্দেহের বশে গণপিটুনির অঘটন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়িয়াছে, যাহা যে কাহাকেও নিরাপত্তা লইয়া শঙ্কিত করিবে। 

আমরা জানি, গণপিটুনি মানবাধিকারের স্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো অপরাধের তথ্য বা কাহারও বিরুদ্ধে মামলা অথবা অভিযোগ থাকিলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে অবহিত করাই নাগরিক দায়িত্ব। ইহার বিপরীতমুখী আচরণ রাষ্ট্রীয় আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শনের শামিল। যে কোনো অপরাধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিত করিলে তাহারাই ন্যায়ানুগ ব্যবস্থা লইতে তৎপর থাকে। তাহা না করিয়া, আইন স্বহস্তে লইবার এই প্রবণতা কেন? ইহাতে নাগরিকগণ আইনের প্রতি ভরসা হারাইবে। আবার অত্যুৎসাহী বা ক্রুদ্ধ হইয়া কাহারও বিরুদ্ধে দলবদ্ধভাবে সহিংসতা করিবার পরও তাহাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না লইলে আইন ভঙ্গকারীরা আরও প্রশ্রয় পাইবে।

আমরা মনে করি, জননিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে মব সহিংসতা কঠোর হস্তে দমন করিতে হইবে। এই ক্ষেত্রে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সক্রিয়তার বিকল্প নাই। সরকারের দিক হইতেও তাহাদের প্রতি কঠোর হইবার বার্তা দিতে হইবে। কোনো সভ্য সমাজে এই প্রকার বেআইনি কর্মকাণ্ড চলিতে পারে না।
গত বৎসর ৫ আগস্ট হইতে মব নামক উচ্ছৃঙ্খল আচরণ চলিতেছে। মধ্যখানে এই প্রবণতা হ্রাস পাইলেও সাম্প্রতিক সময়ে উহা পুনরায় বৃদ্ধির দায় অন্তর্বর্তী সরকার পরিহার করিতে পারে না। ইতোমধ্যে মবসৃষ্ট যেই সকল হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হইয়াছে, সেইগুলির বিচার হইলেও সকলের নিকট কঠোর বার্তা যাইবে। বস্তুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনয়নে ইহার বিকল্প নাই। কোথাও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অবহেলা থাকিলে উহাও খতাইয়া দেখা দরকার। নাগরিকদিগকেও উৎকর্ণ থাকিতে হইবে। কোথাও মব সহিংসতা দেখিলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবহিতকরণ কিংবা সুসংগঠিত হইয়া উহাকে রুখিয়া দিতে হইবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: গণপ ট ন হইয় ছ

এছাড়াও পড়ুন:

‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি

‎নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আইনসৃঙ্খলা স্বাভাবিক রয়েছে, বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজাকে ঘিরে সকল ধর্মমত, সকল  সম্প্রদায় তারা একত্রিত হয়েছে।

সকলেই সার্বিক সহয়তা করছে যাতে করে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজা উৎসব সুন্দর ভাবে পজলন করতে পারে। পূজাকে ঘিরে  একটি গোষ্ঠি চাইবে পূজা উৎসব নষ্ট করে দেয়ার জন্য। 

সে জন্য আমাদের তৎপরতা রয়েছে। আমাদের  গোয়েন্দা সংস্থা কাজ করছে। তার পাশাপাশি র‍্যাব, বিজিবি,  সেনাবাহিনী ও বাংলাদেশ পুলিশবাহিহনী সবাই কাজ করছে যাতে করে সুন্দর ভাবে পূজা উৎসব শেষ করতে পারি।

‎‎মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর)  শীতলক্ষ্যা নদীর তীরে ৫নং ঘাটে দূর্গা পূজার প্রতিমা বিসর্জনের স্থান পরিদর্শনকালে তিনি এ নির্দেশনা দেন।

‎দূর্গা পূজা বিজয়া দশমী শেষে প্রতিমা বিসর্জনের সময় যেকোনো অপ্রীতিকর দূর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। সুন্দর ভাবে প্রতিমা বিসর্জনের স্থান নিরাপদ রাখতে সকলের সহযোগিতা কামনা করেন জেলা প্রশাসক।

‎‎জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, নারায়ণগঞ্জের ২২৩টি পূজা মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। শান্তি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে এবং সম্প্রীতি বজায় রেখে বর্তমানে পূজা উদযাপনের প্রস্তুতি চলছে।

‎‎এসময় তিনি প্রতিটি মণ্ডপে সুষ্ঠুভাবে ও নির্বিঘ্নে পূজা অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সবাইকে যথাযথ সহযোগিতার নির্দেশনা দেন।

‎‎তিনি বলেন, সকলে মিলে সব উৎসব উদযাপন করাই বাংলার ঐতিহ্য ও গৌরব।

‎‎এসময় জেলা প্রশাসন, সেনাবাহিনী, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিএ, নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‎পূজাকে  ঘিরে আইনশৃঙ্খলায় বাহিনী তৎপর : ডিসি
  • নুরুল হকের ওপর হামলার ঘটনায় জি এম কাদেরের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন
  • ১৭ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ, নিরাপত্তায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুই হাজার সদস্য
  • ফরিদপুরে অবরোধ শনিবার পর্যন্ত স্থগিত
  • আসন্ন নির্বাচনে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার নির্দেশ ডিএমপি কমিশনারের