শিল্পপ্রতিষ্ঠানের রাসায়নিক নিরাপত্তাসংক্রান্ত ‘ইন্ডাস্ট্রি সেফটি ট্রেনিং প্রোগ্রাম ইন বাংলাদেশ-২০২৫’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ বৃহস্পতিবার ঢাকা সেনানিবাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই প্রশিক্ষণে দেশের স্বনামধন্য রাসায়নিক শিল্পকারখানা ও রাসায়নিক দ্রব্য আমদানিকারকসহ মোট ২২ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন।

সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের আওতাধীন বাংলাদেশ জাতীয় কর্তৃপক্ষ রাসায়নিক অস্ত্র কনভেনশন (বিএনএসিডব্লিউসি) ও আন্তর্জাতিক ইউনিয়ন ফর পিওর অ্যান্ড অ্যাপ্লায়েড কেমিস্ট্রি (আইইউপিএসি) যৌথভাবে এ প্রশিক্ষণের আয়োজন করে। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।

দিনব্যাপী প্রশিক্ষণে হন্ডুরাস বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেসিয়া রোমিরো এবং যুক্তরাজ্যের মিডলসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক হেমদা গ্যারলিক ভার্চ্যুয়ালি ক্লাস পরিচালনা করেন। এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মো.

ইকবাল রউফ মামুন ও বিএনএসিডব্লিউসির কর্মকর্তারা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান প্রশিক্ষণের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। তিনি রাসায়নিক দ্রব্যের নিরাপদ ব্যবহার এবং এ–সংক্রান্ত সচেতনতা বৃদ্ধির প্রতি বিশেষ গুরুত্বারোপ করেন।

বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান দেশি-বিদেশি প্রশিক্ষক এবং প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জানান। প্রশিক্ষণার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণে অর্জিত জ্ঞান বাংলাদেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে কাজে লাগানোর পাশাপাশি সহকর্মীদের মধ্যে অর্জিত জ্ঞান বিতরণ করে দেশে রাসায়নিক নিরাপত্তা ব্যবস্থাপনার সংস্কৃতি গড়ে তুলতে হবে। রসায়নকে শান্তিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করতে হবে।

পরে প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে সনদ বিতরণ করেন বিএনএসিডব্লিউসির চেয়ারম্যান ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এস এম কামরুল হাসান।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মামলা থেকে বৈষম্যবিরোধী নেতাকে বাদ দেওয়ার অভিযোগ, ওসির অপসারণ চেয়ে ঝাড়ুমিছিল

দিনাজপুরের বোচাগঞ্জ উপজেলায় মাদ্রাসাশিক্ষার্থী শাহরিয়ার শিশিরের (২৪) ওপর হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে বিলম্ব, বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের নামে মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানানোর প্রতিবাদ এবং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান জাহিদকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন ও ঝাড়ুমিছিল হয়েছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা শহরের চৌরাস্তা মোড়ে শতাধিক নারী–পুরুষ এই মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেন। পরে ঝাড়ু হাতে মিছিল নিয়ে থানার প্রধান ফটকে বিক্ষোভ করেন তাঁরা।

মানববন্ধনে কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন আহত শাহরিয়ার শিশিরের বাবা পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর আসাদুজ্জামান, সেতাবগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি নওশাদ আলী, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মোজাহারুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান রেদওয়ানুল কারীম, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রিয়াদ চৌধুরী প্রমুখ।

বক্তারা বলেন, বোচাগঞ্জের মাটিতে একের পর এক সন্ত্রাসী ঘটনা ঘটছে। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে ওসি সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করেন না। শিশিরের ওপর হামলাকারীরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতা ফয়সাল মোস্তাকের অনুসারী। তাঁর হুকুমেই শিশিরের ওপরে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরে হামলার ঘটনায় আহত শিশিরের বাবা থানায় মামলা করতে গেলে ওসি চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের নাম এজাহার থেকে বাদ দিতে বাধ্য করেন। ঘটনার প্রায় এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও এজাহারভুক্ত আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়নি। বক্তারা এ সময় অবিলম্বে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদের অপসারণ ও কিশোর গ্যাংয়ের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

৯ জুন দুপুরে উপজেলার সুবিদহাট এলাকার সেতাবগঞ্জ চিনিকল উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ক্রিকেট খেলতে গেলে শাহরিয়ার শিশির মারধরের শিকার হন। এ ঘটনায় ওই দিন রাতে শিশিরের বাবা বোচাগঞ্জ থানায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং সাত থেকে আটজনকে অজ্ঞাতনামা দেখিয়ে একটি মামলা করেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র ফয়সাল মোস্তাক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এলাকায় নোংরা রাজনীতি শুরু হয়েছে। উপজেলায় কোথায় কী ঘটছে, তার দায়ভার এসে পড়ছে আমার ওপরে। এখন মনে হচ্ছে এই এলাকায় জন্মগ্রহণ করাটাই আমার পাপ হয়েছে। যাঁরা আমার বিরুদ্ধে এ ধরনের মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’

জানতে চাইলে বোচাগঞ্জ থানার ওসি হাসান জাহিদ বলেন, ৯ জুন শাহরিয়ার শিশির নামের এক ছেলেকে মারধরের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় থানায় একটি মামলা হয়েছে। আসামি গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। যদিও ইতিমধ্যে জানতে পেরেছি সংশ্লিষ্ট আসামিরা আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। এখানে নিজেদের মধ্যে দুটি পক্ষ হয়েছে। সংক্ষুব্ধ হয়ে একটি পক্ষ এ ধরনের কর্মসূচি পালন করেছে। কিন্তু কারও কথায় প্ররোচিত হয়ে নয়, আইন চলে তার নিজস্ব গতিতে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ