মাদক সেবন দেখে ফেলায় নয়, পরকীয়ার জেরে উপড়ে ফেলা হয় দুই চোখ
Published: 7th, March 2025 GMT
মাদক সেবন দেখে ফেলায় নয়, পরকীয়ার জেরে শহিদুল ইসলামের (৬০) দুই চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুর সাড়ে ১২টায় সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান যশোরের পুলিশ সুপার নূর-ই-আলম সিদ্দিকী।
এর আগে, গত রাতে এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে সাদ্দাম হোসেন নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সাদ্দাম পুলিশকে জানিয়েছেন, পরকীয়ার জেরে তিনি শহিদুলের চোখ উপড়ে ফেলেছেন। শহিদুল-সাদ্দাম সম্পর্কে খালু-ভাগ্নে।
সংবাদ সম্মেলনে নূর-ই-আলম সিদ্দিকী বলেন, ‘‘ট্রাকচালক সাদ্দাম হোসেনের দুই স্ত্রীর মধ্যে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে তার খালু শহিদুল ইসলামের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল। প্রায় দুই মাস আগে সাদ্দাম তার প্রথম স্ত্রীকে তালাক দেন। সেই সময় খালুর সঙ্গে পরকীয়ার বিষয়টি সাদ্দামকে জানান তার তালাকপ্রাপ্ত স্ত্রী। এতে ক্ষিপ্ত হন তিনি।
পুলিশ সুপার আরো বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার রাতে বকচর করম তেল পাম্পের সামনে শহিদুল ইসলামকে একা পেয়ে দুই চোখ আঙুল দিয়ে উপড়ে ফেলেন সাদ্দাম। এ ঘটনা জানতে পেরে পুলিশের তিনটি দল অভিযানে নামে। বৃহস্পতিবার রাতে যশোর শহরের পালবাড়ি এলাকা থেকে অভিযুক্ত সাদ্দামকে আটক করা হয়। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’’
এর আগে আহতের স্ত্রী হাসনা বেগম অভিযোগ করেছিলেন, মাদক সেবন দেখে ফেলায় শহিদুলের দুই চোখ উপড়ে ফেলেছেন তার বোনের ছেলে সাদ্দাম।
ঢাকা/রিটন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা
হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।
চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।
শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।
আরো পড়ুন:
বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি
ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা
সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’
শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’
চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’
ঢাকা/রাজীব