চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের লোহাগাড়া চুনতি সংরক্ষিত বনাঞ্চলে রয়েছে তিনটি ইটভাটা। এবিসি, এসবিএম ও এলবিএম নামের এসব ইটভাটা ফসলি জমি ও বনের জায়গায় গড়ে উঠেছে। চকরিয়া উপজেলাধীন তিনটি ইটভাটার মধ্যে তিন বছর ধরে বন্ধ এলবিএম, এক বছর ধরে উৎপাদন নেই এবিসিতেও। কিন্তু পাহাড়ের মাটি ও বনের কাঠ পুড়িয়ে ‘সগৌরবে সচল’ অবৈধ এসবিএম ইটভাটা। প্রায় এক মাস আগে বন্ধ ইটভাটা দুটো গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। অথচ অভিযান চালানো হয়নি অনুমোদনহীন সচল ইটভাটা এসবিএমে। বনবিট ও রেঞ্জ কার্যালয়ের নাকের ডগায় আইন অমান্য করে ইটভাটাটি চলছে। প্রতিদিন এই ইটভাটায় পুড়ছে পাহাড় কাটা মাটি ও বনের গাছ। 
জানা যায়, ১১ ফেব্রুয়ারি বন্ধ ইটভাটা এবিসি ও এলবিএমে অভিযান পরিচালনা করেন চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো.

এরফান উদ্দিন। অভিযানে খননযন্ত্র দিয়ে ইটভাটার অফিসকক্ষ ও ভাটার চিমনি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয় লোকজন জানান, বন্ধ ইটভাটায় অভিযান চালানো হলেও চালু ইটভাটায় অভিযান হয়নি। এসবিএম নামের ইটভাটায় পরিবেশ ছাড়পত্র নেই। নেই জেলা প্রশাসনের অনুমোদন। গড়ে উঠেছে ফসলি ও বনের জায়গায়। পোড়ানো হয় বনের কাঠ ও পাহাড়ের মাটি। কালো ধোঁয়ায় দূষিত হচ্ছে পরিবেশ। তারপরও উপজেলা প্রশাসন নীরব। 
চকরিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. এরফান উদ্দিন বলেন, ‘বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয় ও জেলা প্রশাসনের নির্দেশনায় ইটভাটায় অভিযান চালানো হয়েছে।’ বন্ধ ইটভাটায় কেন অভিযান চালানো হয়েছে– এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘উৎপাদনে থাকা ইটভাটাগুলোয় অভিযান না চালাতে হাইকোর্টের নির্দেশনা রয়েছে।’
ইট তৈরিতে কী পরিমাণ মাটির ব্যবহার ও একটি ভাটায় বছরে কী পরিমাণ ইট তৈরি হয়, এমন প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে কথা হয় ইটভাটার এক শ্রমিকের সঙ্গে। নাম প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ইটের সাইজ অনুসারে একটি কাঁচা ইট তৈরিতে মাটি লাগে শূন্য দশমিক শূন্য ৯৫ ঘনফুট। বছরের অক্টোবর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত প্রতিটি ভাটায় কমপক্ষে গড়ে আট রাউন্ড ইট পোড়ানো হয়। প্রতি রাউন্ডে ১০ লাখ ইট থাকে। একেকটি ভাটায় বছরে কমপক্ষে ৮০ লাখ ইট পোড়ানো হয়। এ হিসেবে 
এসবিএম  ইটভাটার জন্য বছরে আনুমানিক ১ কোটি ঘনফুট মাটি প্রয়োজন। 
সরেজমিনে দেখা যায়, চট্টগ্রাম–কক্সবাজার মহাসড়ক সংলগ্ন উত্তর হারবাং গয়ালমারা এলাকায় এসবিএম ইটভাটার অবস্থান। শামসুল আলমের মালিকানাধীন এসবিএম ভাটার অধিকাংশ জমি চুনতি সংরক্ষিত বনের। বনের জমি ও ফসলি জমিতে ১৮ বছর ধরে এই ইটভাটা চলছে। এই ইটভাটা থেকে হারবাং বন বিটের দূরত্ব মাত্র অর্ধ কিলোমিটার। প্রতিদিন ইটভাটার পাশ দিয়ে বনবিভাগের লোকজনের যাতায়াত থাকলেও তারা যেন কিছুই দেখেন না। সন্ধ্যা নামলেই ট্রাকে করে পাহাড় ও ফসলি জমির মাটি এবং বনের কাঠ আসে এই ইটভাটায়।
ইট পোড়ানো নিয়ন্ত্রণ আইনে উল্লেখ আছে, সংরক্ষিত বনের ভেতর তো নয়ই, অন্তত ৩ কিলোমিটারের মধ্যে কোনো ধরনের ইটভাটা স্থাপন করা যাবে না। অথচ সংরক্ষিতে বনের খেতর দেড়যুগ ধরে চলছে এসবিএম ইটভাটা। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তর ও স্থানীয় প্রশাসনের এ বিষয়ে কোনো পদক্ষেপ নেই।
এ প্রসঙ্গে চুনতি রেঞ্জ কর্মকর্তা আবির হাসান বলেন, ‘আমি নতুন এসেছি। ইটাভাটার ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।’ 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ইটভ ট ইটভ ট র ও বন র উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ