জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে কাজ করার তীব্র ইচ্ছা থেকে ২০২৩ সালের মার্চ মাসে কুষ্টিয়ার স্বপ্নবাজ তরুণ মো. প্রত্যয় বিন শাফী শুরু করেন ‘রিনিউ আর্থ’ নামের সংগঠন। জেলার নদীভাঙন সমস্যা থেকেই এই উদ্যোগের সূত্রপাত। কুষ্টিয়ার একমাত্র যুব সংগঠন হিসেবে শুরু থেকেই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ও তরুণদের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে সংগঠনটি। প্রাথমিক পর্যায়ে নানান বাধা বিপত্তির সম্মুখীন হয় ‘রিনিউ আর্থ’। সংগঠনের তরুণদের প্রশিক্ষণে ‘ব্রাইটার্স সোসাইটি অব বাংলাদেশ’ ও ‘ভলান্টিয়ার অপরচুনিটিজ’ সংগঠনটির পাশে দাঁড়ায়। তাদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও ইভেন্টে যুক্ত হতে থাকে ‘রিনিউ আর্থ’, যার ফলে সংগঠনটি ধীরে ধীরে জলবায়ু অঙ্গনে পরিচিতি লাভ করে। ২০২৪ সালে সংগঠনটির কার্যক্রম কুষ্টিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে রাজশাহী ও ঝিনাইদহ জেলায় সম্প্রসারিত হয়। ২০২৪ সালে আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসে প্রতিষ্ঠাতা শাফী দেশের শ্রেষ্ঠ স্বেচ্ছাসেবকের পুরস্কার অর্জন করেন।
২০২৪ সালের ২০ ডিসেম্বর ‘রিনিউ আর্থ’ কুষ্টিয়ায় প্রথমবারের মতো জলবায়ুবিষয়ক প্রশিক্ষণ আয়োজন করে। নতুন বছরের শুরুতেই ‘তারুণ্যের উৎসব’-এ অংশগ্রহণের মাধ্যমে সংগঠনটি জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে। একই সময়ে কার্বন নিঃসরণ প্রতিরোধে ৩০০-এর অধিক তরুণকে একত্র করে শহরজুড়ে সাইকেল র‍্যালির আয়োজন করে, যা ব্যাপক প্রশংসিত হয়। বর্তমানে কুষ্টিয়া, ঢাকা ও রাজশাহীতে শতাধিক সক্রিয় স্বেচ্ছাসেবককে নিয়ে সংগঠনটির
কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
সংগঠনটির কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রত্যয় বিন শাফী বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন শুধু উপকূলীয় এলাকার মানুষের সমস্যা না, বরং দেশের প্রতিটি অঞ্চলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। প্রতিটি জেলার তরুণদের উচিত স্থানীয় জলবায়ু সমস্যা চিহ্নিত করে নীতিনির্ধারকদের সামনে তুলে ধরা, কারণ তরুণরাই বিশ্ব দরবারে নিজেদের সমস্যাগুলো কার্যকরভাবে উপস্থাপন করতে পারে। আমরা সেই পথেই হাঁটছি।’u

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ন উ আর থ স গঠনট র স গঠন সমস য জলব য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা

ইরানের পেট্রোলিয়াম ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্যের বাণিজ্যে সংশ্লিষ্ট থাকার অভিযোগে অন্তত ছয়টি ভারতীয় কোম্পানির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। একই পদক্ষেপের আওতায় বিশ্বজুড়ে মোট ২০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ইরানের পেট্রোলিয়াম পণ্য কেনাবেচা ও বিপণনের জন্য ‘গুরুত্বপূর্ণ লেনদেনে’ ইচ্ছাকৃতভাবে অংশ নিয়েছে। ফলে তারা যুক্তরাষ্ট্রের ইরানবিষয়ক নিষেধাজ্ঞা ভেঙেছে।

নিষেধাজ্ঞার শিকার কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কিছু বড় পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এগুলো হলো অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস, গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস, জুপিটার ডাই কেম, রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি, পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম ও কাঞ্চন পলিমার্স।

নিষিদ্ধ কোম্পানিগুলোর মধ্যে রয়েছে ভারতের কিছু বড় পেট্রোকেমিক্যাল ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারেরও বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সবচেয়ে বড় অভিযোগ উঠেছে অ্যালকেমিক্যাল সলিউশনস প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানটি ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৮ কোটি ৪০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য আমদানির সঙ্গে জড়িত ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

গ্লোবাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল কেমিক্যালস লিমিটেডের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ২০২৫ সালের জানুয়ারির মধ্যে ৫ কোটি ১০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল, বিশেষ করে মিথানল কিনেছে।

জুপিটার ডাই কেম প্রাইভেট লিমিটেডের বিরুদ্ধেও এ সময়ে টলুইনসহ ৪ কোটি ৯০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পণ্য আমদানির অভিযোগ রয়েছে।

রমনিকলাল এস গোসালিয়া অ্যান্ড কোম্পানি মিথানল ও টলুইনসহ ২ কোটি ২০ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য কেনার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।

এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ কিংবা যেসব সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা জব্দ করা হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ হবে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর যেকোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান—যেগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতে, তা–ও একইভাবে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।

পার্সিসটেন্ট পেট্রোকেম প্রাইভেট লিমিটেড ২০২৪ সালের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ ডলারের ইরানি পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য, বিশেষ করে মিথানল আমদানি করেছে বলে জানানো হয়েছে।

এ ছাড়া কাঞ্চন পলিমার্স নামে একটি কোম্পানি ১৩ লাখ ডলারের বেশি মূল্যের ইরানি পলিথিন পণ্য কিনেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

নিষেধাজ্ঞার ফলে এখন এসব প্রতিষ্ঠানের যুক্তরাষ্ট্রে থাকা সম্পদ কিংবা যেসব সম্পদ যুক্তরাষ্ট্রের ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের নিয়ন্ত্রণে আছে, তা জব্দ করা হবে। পাশাপাশি এসব প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও কোম্পানিগুলোর বাণিজ্যিক কার্যক্রমে যুক্ত হওয়া নিষিদ্ধ হবে। নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর যেকোনো সহযোগী প্রতিষ্ঠান, যেগুলোর অন্তত ৫০ শতাংশ মালিকানা তাদের হাতে, তা–ও একইভাবে নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হবে।

এ পদক্ষেপ যুক্তরাষ্ট্রের ‘সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগ’ নীতির অংশ। এর মাধ্যমে ইরানের কথিত ‘ছায়া নৌবহর’ ও মধ্যস্বত্বভোগী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, যারা বিশ্বব্যাপী ইরানি তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল পণ্য পরিবহনে সহায়তা করে।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের, রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যের জন্য আলাদা ‘দণ্ড’১৫ ঘণ্টা আগে

মার্কিন কর্মকর্তাদের দাবি, এসব পণ্য রপ্তানি থেকে ইরান যে রাজস্ব পায়, তা মধ্যপ্রাচ্যে অস্থিতিশীলতা ছড়ানো ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে সহায়তায় ব্যয় করা হয়।

ইরানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে ঘনিষ্ঠ বাণিজ্যিক সম্পর্ক থাকলেও ২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের আগের নিষেধাজ্ঞা চালু হওয়ার পর ভারত ইরানি তেল আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে দেয়।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা প্রতিষ্ঠানগুলো চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ মন্ত্রণালয়ের স্পেশালি ডেজিগনেটেড ন্যাশনালস (এসডিএন) তালিকা থেকে নিজেদের নাম বাদ দেওয়ার জন্য আবেদন করতে পারে। ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, এ নিষেধাজ্ঞার উদ্দেশ্য শাস্তি দেওয়া নয়; বরং আচরণে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা।

ভারতের পাশাপাশি তুরস্ক, সংযুক্ত আরব আমিরাত, চীন ও ইন্দোনেশিয়ার কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। যুক্তরাষ্ট্র বলছে, এ বৈশ্বিক নেটওয়ার্ক ইরানের তেল ও পেট্রোকেমিক্যাল–বাণিজ্যে সহায়ক ভূমিকা পালন করছে।

উল্লেখ্য, ভারতের কিছু প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বাইরেও দেশটি থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গতকাল তিনি এ ঘোষণা দেন।

আরও পড়ুনভারতের পণ্যে এবার ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের হুমকি দিলেন ট্রাম্প২২ ঘণ্টা আগে

আগামীকাল ১ আগস্ট থেকে ভারতের পণ্যে নতুন এ পাল্টা শুল্কনীতি কার্যকর হবে। পাশাপাশি রাশিয়ার কাছ থেকে অস্ত্র ও জ্বালানি কেনার জন্য ভারতকে ‘দণ্ড’ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন ট্রাম্প। তবে কী ধরনের দণ্ড দেওয়া হবে, সে সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পিডিবির ভুলে ২৪৫ কোটি টাকা জরিমানা দিতে হলো বাংলাদেশকে
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নির্বাচনের রোডম্যাপে কবে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ
  • ভারতের ৬ প্রতিষ্ঠানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা
  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • জন্মহার বাড়াতে চীনের নতুন উদ্যোগ, শিশুদের জন্য মা-বাবা পাবেন ভাতা
  • সন্ধানী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের ১২ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • ‘রাষ্ট্রীয় শোক’ প্রত্যাখ্যান
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত