পিটার হাসকে হুমকি দেওয়া সেই মুজিবের স্ত্রী কারাগারে
Published: 9th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের বাঁশখালীর আলোচিত সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুল হক চৌধুরীর স্ত্রী সাহেদা বেগমকে দুদকের করা এক মামলায় কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। আজ রোববার আদালতে সাহেদা বেগম আত্মসমর্পণ করলে মহানগর দায়রা জজ নুরুল ইসলাম শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
মুজিবুল চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি। ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর প্রকাশ্য জনসভায় যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে হুমকি দেন মুজিবুল হক। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপর আলোচনায় আসেন মুজিবুল। চাম্বল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আয়োজিত ওই সভায় মুজিবুল হক পিটার হাসের উদ্দেশে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় বক্তব্য দেন।
২০২৩ সালের ৩১ ডিসেম্বর মুজিবুল হক চৌধুরী ও তাঁর স্ত্রীর বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে পৃথক দুটি মামলা করে দুদক। দুদক চট্টগ্রাম কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক বাদী হয়ে নিজ কার্যালয়ে পৃথক মামলা করেন।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়, মুজিবুল হক জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৫৬ লাখ ৭১ হাজার ১৪ টাকা মূল্যের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ অর্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। তিনি ১৯৯২ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত সৌদি আরবে প্রবাসে থাকলেও দেশে টাকা পাঠানোর কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি।
অপর মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মুজিবুল হকের স্ত্রী সাহেদা বেগম জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ ৮৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৯৭ টাকার সম্পদ উপার্জন করে ভোগদখলে রেখেছেন। এ মামলায় মুজিবুল হককেও আসামি করা হয়। গত বছরের ১ আগস্ট মুজিবুল এবং তাঁর স্ত্রীর অবৈধভাবে অর্জিত স্থাবর সম্পদ জব্দের (ক্রোক) আদেশ দিয়েছিলেন আদালত।
দুর্নীতি দমন কমিশনের আইনজীবী (পিপি) মাহমুদুল হাসান বলেন, দুদকের করা মামলায় জামিন চেয়ে আত্মসমর্পণ করেন সাহেদা বেগম। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম জ ব ল হক
এছাড়াও পড়ুন:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকের পদাবনতি, দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুই শিক্ষকের পদাবনতি দেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের আলী রেজওয়ানকে সহযোগী অধ্যাপক থেকে সহকারী অধ্যাপক এবং ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনকে সহকারী অধ্যাপক থেকে প্রভাষক পদে পদাবনতি দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের এমবিএ ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তাকভির আল মাহমুদ ও সাইদ উদ্দিন আহমেদকে মাদক সেবনের অভিযোগে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ এবং আবাসিক হলে অবস্থানের ওপরও এক বছরের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
গত সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০৪তম সিন্ডিকেট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী।
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (চলতি দায়িত্ব) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গতকাল মঙ্গলবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, গত সোমবার বেলা ১১টায় সিন্ডিকেট সভা শুরু হয়ে সন্ধ্যার পর শেষ হয়। সভায় অর্ধশতাধিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেসব লিখিত আকারে শিগগিরই প্রকাশ করা হবে।
সিন্ডিকেট সভার একাধিক সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে সান্ধ্যকালীন কোর্সের এক শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ এবং বিভাগের শিক্ষকদের নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের কারণে ইংরেজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় আলী রেজওয়ানকে।
অন্যদিকে, ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তী সময় তদন্তের স্বার্থে ১ অক্টোবর তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হয়। এসব ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতেই তাঁদের বিরুদ্ধে পদাবনতির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠে মাদক সেবনের সময় দুই শিক্ষার্থীসহ এক বহিরাগতকে আটক করে প্রক্টরিয়াল টিম। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুই শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার এবং এক বছরের জন্য ক্যাম্পাসে প্রবেশ ও হলে অবস্থানের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী বলেন, ‘সিন্ডিকেট সভায় সবার মতামতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু এই সিদ্ধান্ত নয়, আরও বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সবার সম্মতিক্রমেই। আমি আসলে একা কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারি না, কিছু চাপিয়েও দিতে পারি না। একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সব সিন্ডিকেট সদস্যদের মত থাকে এখানে।’